জিতল শ্রীলঙ্কাই, সিরিজের ফয়সালা হবে ‘ফাইনালে’
প্রথম ম্যাচটা বাংলাদেশ অনেকটা নিষ্প্রাণ বানিয়েই জিতে নিয়েছিল। দ্বিতীয় ওয়ানডেটাকে মনে হচ্ছিল তার উল্টো, মানে শেষে ব্যাট করা শ্রীলঙ্কা শিশিরের সহায়তা পাশে নিয়ে জিতবে একপেশেভাবে। কিন্তু শেষমেশ তা হলো না। ম্যাচের ৩৭তম ওভারে ম্যাচে প্রাণ ফেরালেন মিরাজ, এরপর তাসকিন আহমেদ, তানজিম হাসান সাকিবদের বোলিং মনে করাচ্ছিল ম্যাচটায় বাংলাদেশের সম্ভাবনা শেষ হয়ে যায়নি!
তাতে অবশ্য নিয়তিটা বদলে যায়নি। বাংলাদেশ ম্যাচটা শেষমেশ হেরেছে ৩ উইকেটের ব্যবধানে। সিরিজের নিয়তিটা তাই নির্ধারিত হবে সোমবারের ‘ফাইনালে’। শ্রীলঙ্কা জিতেছে, তবে সে জয়টা সহজে আসেনি। ফাইনালের আগে এই লড়াইটা বাংলাদেশকে আত্মবিশ্বাসই দেবে খানিকটা!
প্রথম ম্যাচে শিশিরের আনাগোনা বেশ ভুগিয়েছে শ্রীলঙ্কাকে। জেনিথ লিয়ানাগে তো বলেই ফেলেছিলেন, এত শিশির হবে, সেটা কল্পনাই করেনি তার দল; না হলে কি আর সেদিন টস জিতে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেয় শ্রীলঙ্কা? ভাগ্য আজও সুপ্রসন্ন হলো লঙ্কানদের। টস জিতল শ্রীলঙ্কা, তবে আজ বাংলাদেশকে পাঠাল ব্যাটিংয়ে।
ব্যাট করতে নেমে যা বাংলাদেশের নিয়মিত দৃশ্য, পাওয়ারপ্লেতেই উইকেট খুইয়ে বসা, তা জারি রইল। লিটন দাস ফিরলেন। প্রথম ম্যাচে গোল্ডেন ডাক নিয়ে ফিরেছিলেন, আজ ফিরলেন একটা বল খেলে। সৌম্য সরকারের দায়িত্বশীল ৬৮ রানের ইনিংসের সঙ্গে প্রথম ম্যাচের সেঞ্চুরিয়ান অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্তর ৪০ রানের ইনিংস দুটিতে শুরুর ধাক্কা কাটিয়ে বড় সংগ্রহের ভিত পায় স্বাগতিকরা।
পরের গল্পটা তাওহীদ হৃদয়ের। মাঝে দ্রুত উইকেট খুইয়ে খানিকটা বিপাকে পড়ে গেলেও শেষমেশ তাওহীদের লড়াকু পুঁজি পায় বাংলাদেশ। তার অপরাজিত ৯৬ রানের ইনিংসে ৫০ ওভারে ২৮৬-তে গিয়ে ঠেকে বাংলাদেশের স্কোর। ৪ উইকেট পান লঙ্কান স্পিনার ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা।
শ্রীলঙ্কার জবাবের শুরুটা ভালো হয়নি। শুরু থেকে নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারাতে থাকে দলটা। তাসকিন-শরিফুলদের বোলিং তোপে পাওয়ার প্লে’তে তিন উইকেট খুইয়ে ৬০ রান স্কোরবোর্ডে জমা করতে সমর্থ হয় তারা।
আগের ম্যাচেও এমন দৃশ্য দেখা গেছে, গেল আজও। সন্ধ্যার পর চট্টগ্রামে শিশিরের সুবিধা নিয়ে চতুর্থ উইকেটে বড় জুটি গড়ে তোলেন ওপেনার পাথুম নিসাঙ্কা এবং পাঁচে নামা চরিত আসালাঙ্কা। দুজনই অবশ্য সুযোগ দিয়েছেন, বাংলাদেশ সেগুলো হাতে জমাতে পারেনি। যার ফল দুজনের ১৮৫ রানের জুটি। চতুর্থ উইকেটে যা লঙ্কানদের সর্বোচ্চ, আর বাংলাদেশের বিপক্ষে যে কোনো উইকেটে যা তাদের পঞ্চম সর্বোচ্চ। মাঝে নিসাঙ্কা তুলে নেন ঠিক ১০০ বলে সেঞ্চুরি।
সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে আরও বেশি আক্রমণাত্মক হতে চেয়েছিলেন। তবে তা পারেননি শেষমেশ। মেহেদী হাসান মিরাজের বলে কাউ কর্নারে লিটনের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন ১১৪ রানে। এর পরের ওভারে আসালাঙ্কাও (৯১) যখন ফিরলেন ওয়ানডেতে তাসকিনের ১০০তম শিকার হয়ে, তখন মনে হচ্ছিল ম্যাচটা বুঝি বাংলাদেশ হাতেই নিয়ে এসেছে! তবে হাসারাঙ্গা তা হতে দেননি। শেষ পর্যন্ত ক্রিজে থাকতে না পারেননি বটে, কিন্তু তার ২৫ রানের ক্যামিওই লঙ্কানদের জিতিয়ে দেয় শেষমেশ।
দুই ম্যাচে দুই দলের জয়। তাতে সিরিজ চলে এল সমতায়। সিরিজের ফয়াসালা তাই ঝুলে রইল আগামী ১৮ মার্চ শেষ ম্যাচের দিকে তাকিয়ে।