সৈকতের গল্প নিয়ে সিনেমা হতে পারে: মুকুল
সৈকতকে তো আসলে শুধু আম্পায়ার হিসেবে চিনি না, তারও বহু আগে থেকে প্লেয়ার হিসেবে তাকে দেখে আসছি ৯০ এর দশক থেকে। তখন থেকেই দেখেছি ওর ভেতর উদ্যম আছে। ও মানসিকভাবে অনেক শক্ত ও ডেডিকেশন অনেক হাই।
ও যখন আম্পায়ারিংয়ে এসেছে তখন কিন্তু অনেক পরিশ্রম করে গেছে। মাঠে ও মাঠের বাইরে সবকিছু মিলিয়ে সে যে সংগ্রাম করে গেছে তা অকল্পনীয়। সে যেটা অর্জন করেছে সেটা তার প্রাপ্য ছিল।
কোভিডের পর থেকে আমরা খুবই আশাবাদী ছিলাম, সৈকত আইসিসির এলিট প্যানেলে যাবে। কেননা, কোভিডের পর যেই সুযোগগুলো আসছে সেসব সৈকত খুব ভালোভাবে কাজে লাগিয়েছে।
আর একটা জিনিষ এসব নিয়ে ভারতে যদি সিনেমা হতে পারে অদূর ভবিষ্যৎতে আমাদের সৈকতকে নিয়েও এমন সিনেমা হতে পারে।
সৈকতের সবচেয়ে বড় গুণ যেটা সে তার ভুলকে সুন্দরভাবে স্বীকার করে। ও যদি কোনো ভুল করে থাকে, সিদ্ধান্ত দেওয়ার ক্ষেত্রে বা সতীর্থদের সাথে কোনো বাজে ব্যবহারে করে থাকে; তাহলে সে কিন্তু সঙ্গে সঙ্গেই সেটা মেনে নেই। এটা হলো সৈকতের সবচেয়ে বড় গুণ।
এছাড়াও সৈকত অনেক সাহসী একটা ছেলে। সে যদি মনে করে এই পথে আগালে সঠিক; যদিও এই পথে আগালে অনেক বাধা আসবে তবুও সে ওই সঠিক পথেই আগায়। পজিটিভ ওয়েতে ওর জেদটা খুব ভালো।
টি-টোয়েন্টি ওয়ার্ল্ড কাপ এখন তার সামনে। তারপর বাকি অ্যাসাইনমেন্ট সামনে আসবে। পরে হয়তো টেস্ট ম্যাচগুলো আসবে। আর যখন নতুন কেউ এলিট প্যানেলে ঢুকে, এটা হলো একটা ঐতিহ্য- জানি না হবে কি না। অ্যাশেজ মানে অস্ট্রেলিয়া-ইংল্যান্ড দিয়ে এটা শুরু হয়।
সৈকতের মাধ্যমে বাংলাদেশের আম্পায়ারদের উন্নতির ধারা শুরু হলো। সৈকত আমাদের জন্য বড় একটা পথ দেখিয়ে গেল যে, কষ্ট করলে ওখানে যাওয়া যায়। সৈকতের এই অর্জনটাকে আমরা যারা আম্পায়ারিং করছি বা যারা করবে আমাদের বোর্ডও এই জিনিষটাকে কাজে লাগাতে হবে। কাজে লাগানো বলতে আমি বুঝাচ্ছি, বিসিবি কিন্তু যারা অনেক ক্রিকেট খেলছে তাদের আম্পায়ারিংয়ে আসার জন্য উদ্বুদ্ধ করতে পারে। আর আমরাও যারা আম্পায়ারিং করছি তারা কিন্তু এলিট প্যানেলে যাওয়ার স্বপ্ন দেখতে পারি। আইসিসির এলিট প্যানেলে যাওয়ার মাঝখানের যেই পথচলাটা সেই পথচলাটা বা ত্যাগের জায়গাটা বোর্ড বা আমাদের ডিপার্টমেন্ট আরেকটু সহজ করে দেবে।
দেশে আম্পায়ারিংয়ের ক্ষেত্রে আমাদের অর্থনৈতিক দিক যত উন্নত হবে তত আমাদের যোগ্য ছেলেরা আম্পায়ারিংয়ে আগ্রহী হবে।
সৈকত-মুকুল-গাজী বা তানভীর এখন যারা আছে বা অন্য যারা আছে এই পর্যন্ত আসতে হলে কিন্তু অনেক ত্যাগ করতে হবে নতুনদের। আর এই রাস্তাটুকু আসার জন্য উদ্যোগটা বোর্ড এবং আম্পায়ার ডিপার্টমেন্ট থেকে নিতে হবে।
সৈকতের ১৩ বছরের যুদ্ধ এটা। তার স্বপ্ন অবশেষে সত্যি হলো। এবং অবশ্যই সে এটার প্রাপ্য।
মাসুদুর রহমান মুকুল || আইসিসির ইন্টারন্যাশনাল প্যানেলে থাকা বাংলাদেশী আম্পায়ার