বিশ্বরেকর্ড গড়ে অলআউট শ্রীলঙ্কা, দিনটা হতে পারত বাংলাদেশেরও
শ্রীলঙ্কা তখন বিশ্বরেকর্ড থেকে হাতছোঁয়া দূরত্বে। কামিন্দু মেন্ডিস তখনই দিলেন রানের গতিটা বাড়িয়ে, হাঁকাচ্ছিলেন একের পর এক ছক্কা। তখনই ক্রিকইনফোতে কেউ প্রশ্নটা করে বসলেন। যদি শ্রীলঙ্কা বিশ্বরেকর্ডটা করে ফেলে, আর এরপর কামিন্দু সেঞ্চুরি করেন, তাহলে কি রেকর্ডটা শ্রীলঙ্কার থাকবে? সঙ্গে সঙ্গে উত্তর এলো, ‘না’।
সেঞ্চুরি ছাড়া কোনো দলের সর্বোচ্চ ইনিংসের বিশ্বরেকর্ডটা এতদিন ছিল ভারতের দখলে। ১৯৭৭ সালে দলটা নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে কানপুরে ৯ উইকেট হারিয়ে করেছিল ৫২৪। ভারতের সর্বোচ্চ রানের ইনিংসটা সেদিন ৭৫ও ছিল না।
আজ সে রেকর্ডটার সামনেই ছিল শ্রীলঙ্কা। শেষে এসে তা শঙ্কায় ফেলে দিয়েছিলেন কামিন্দু। টানা তিন ইনিংসে সেঞ্চুরির দুয়ারে দাঁড়িয়ে ছিলেন নিজে। তবে শেষমেশ সেঞ্চুরি আর ছুঁতে পারেননি। ৯২ রানে অপরাজিত থেকেই ইনিংস শেষ হয়ে গেছে তার, ওপাশে সঙ্গীর অভাবে। শ্রীলঙ্কাও রেকর্ডটা গড়ে ফেলল ৫৩১ রানে অলআউট হয়ে। শেষ বিকেলটা হতে পারত বাংলাদেশেরও। সেই পথেই ছিলেন স্বাগতিকদের দুই ওপেনার মাহমুদুল হাসান জয় ও জাকির হাসান। দু’জনের ব্যাট করা দেখে মনে হচ্ছিল আজ অন্তত শেষ বিকেলে কোনো ভুল করবে না বাংলাদেশ।
তবে না শেষ বিকেল উইকেট দিয়ে আসার অভ্যাসটা বাংলাদেশের পুরনো। সেই পুরনো অভ্যাসটা এদিনও ভুলতে পারেননি জয়। ২১ রানে আউট হয়ে তিনি যখন সাজঘরের পথ ধরেছেন বাংলাদেশের সংগ্রহ তখন ৪৭ রান। এরপর নাইটওয়াচম্যান হিসেবে নেমে জাকিরকে নিয়ে দিনের খেলা শেষ করেছে বাংলাদেশ। যেখানে বাংলাদেশের সংগ্রহ ১ উইকেটে ৫৫ রান। লঙ্কানদের থেকে এখনও ৪৭৬ রান দূরে বাংলাদেশ। ফলোঅন এড়াতে হলেও আরও ২৭৭ রান করতে হবে বাংলাদেশকে। তবে দ্বিতীয় দিনে যেই ইতিবাচক মনোভাব নিয়ে ব্যাট করেছে বাংলাদেশ। তাতে তৃতীয় দিনে দারুণ কিছুর স্বপ্ন তো দেখায় যায়।
এর আগে, লঙ্কানদের ইনিংসে সেঞ্চুরি বাদে সর্বোচ্চ রানের ইনিংসের রেকর্ড গড়তে হলে দলের সবারই অবদান রাখতে হয় কম-বেশি। শ্রীলঙ্কার সবাই সেটা রেখেছেন। ইনিংস সর্বোচ্চ ৯৩ রান করা কুশল মেন্ডিস থেকে শুরু করে সবাই রান করেছেন। শেষের দুই ব্যাটার বাদে সবাই দুই অঙ্কের রান করেছেন। প্রত্যেকটা জুটি থেকেই দুই অঙ্কের রান এসেছে। রেকর্ডটা গড়তে এমন সব ইনিংসই দরকার ছিল।
তবে রেকর্ডের চেয়ে বড় তৃপ্তি শ্রীলঙ্কা পাবে ম্যাচে তাদের অবস্থান নিয়ে। ৫৩১ রানের পুঁজি যে দ্বিতীয় দিন শেষেই চালকের আসনে নিয়ে এসেছে সফরকারীদের! এর পেছনে অবশ্য দায় আছে বাংলাদেশি ফিল্ডারদেরও। প্রথম দিনের পর দ্বিতীয় দিনেও ফিল্ডিংয়ে সহজ কিছু ক্যাচ ছেড়েছে বাংলাদেশ। আর তাতে ম্যাচটা ক্রমেই চলে গিয়েছে নাগালের বাইরে।
সংক্ষিপ্ত স্কোরকার্ড:
শ্রীলঙ্কা: ৫৩১; (মাদুষ্কা ৫৭, কারুণারত্নে ৮৬, কুসাল ৯৩, চান্দিমাল ৫৯, ডি সিলভা ৭০, কামিন্দু ৯২*; হাসান ২/৯২, সাকিব ৩/১১০)
বাংলাদেশ: ৫৫/১; (জয় ২১, জাকির ২৮*; কুমারা ১/৪)