পাপন জানালেন, বিসিবির উদ্বৃত্ত ৩৯ কোটি টাকা
হয়ে গেল বহুল আলোচিত বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম)। রাজধানীর একটি পাঁচতারকা হোটেলে দুপুরে বিসিবির কাউন্সিলদের উপস্থিতিতে এই সভা অনুষ্ঠিত হয়। এজিএমে গৃহীত সিদ্ধান্তগুলো পরে বিসিবি সভাপতি সাংবাদিকদের বিস্তারিত জানিয়ে দেন।
তিনি জানান, বিসিবির আর্থিক বিষয়াদি পরিচালনার জন্য নতুন অডিটর নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। আর্থিক আয়-ব্যয়ের ফিরিস্তি তুলে ধরে বিসিবি সভাপতি বলেন, ‘গত আর্থিক বছরে বিভিন্ন খাত থেকে বিসিবির আয় হয়েছিল ৪৪৬ কোটি টাকা। আর ব্যয় হয়েছে ৪০৭ কোটি টাকা। এই ব্যয়ের মধ্যে বিপিএলের খরচাও রয়েছে। আয় থেকে ব্যয় বাদ দিলে এই সময়ের মধ্যে বিসিবির মোট উদ্বৃত্ত হলো ৩৯ কোটি টাকা।’
এই লাভের হার কমে যাওয়ার কারণ হিসেবে বিশ্বমন্দা এবং মুদ্রাস্ফীতির প্রসঙ্গ তুলে ধরে নাজমুল হাসান পাপন জানান, মুদ্রাস্ফীতির কারণে খরচ অনেক বেড়েছে। তাই আগে যেরকমভাবে সঞ্চয় হতো, সামনের সময়ে সেই সঞ্চয়ে ভাটা পড়বে তা নিয়ে বিসিবি দুশ্চিন্তায় আছে।
দুপুর আড়াইটায় শুরু বিসিবি প্রেসিডেন্ট নাজমুল হাসান পাপনের তৃতীয় মেয়াদের দ্বিতীয় এজিএম, শেষ হয় সাড়ে পাঁচটায়। এজিএমে বিসিবির গঠনতন্ত্রে একাধিক পরিবর্তন আনা হয়েছে। বিসিবির বার্ষিক সাধারণ সভায় সংশোধিত প্রস্তাবনা তুলে ধরা হয়। সভায় বিসিবির বিভিন্ন কার্যক্রম নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
সভায় পরিচালনা পরিষদের অনুমোদিত ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার পেশকৃত ২০২১-২২ এবং ২০২২-২৩ সালের কার্যক্রমের প্রতিবেদন অনুমোদিত হয়েছে। এছাড়া ২০২১-২২ এবং ২০২২-২৩ সালের আয়-ব্যয় সংক্রান্ত নিরীক্ষা প্রতিবেদনও অনুমোদিত হয়েছে। প্রতিটি আঞ্চলিক ক্রিকেট সংস্থার কার্যক্রমকে আরো গতিশীল করার লক্ষ্যে একটি টি২০ ক্রিকেট টুর্নামেন্টের আয়োজন করা হবে, যেখানে প্রতিটি আঞ্চলিক ক্রিকেট সংস্থাকে বোর্ডের পক্ষ থেকে টুর্নামেন্ট আয়োজনের জন্য ২০ লাখ টাকা করে বরাদ্দ দেওয়ার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে।
বিসিবির গঠনতন্ত্রের সংশোধনী প্রসঙ্গে বিস্তারিত ব্যাখ্যায় বিসিবির প্রধান নির্বাহী নিজামুদ্দিন সুজন জানান, ঝুঁকিহীন লাভজনক বিনিয়োগের জন্য মূলত এই সংশোধনী আনতে যাচ্ছে বিসিবি। প্রস্তাবনা খসড়া অনুযায়ী, ৬ নম্বর অনুচ্ছেদের উপানুচ্ছেদ ৬.১-এর সংশোধন করা হবে।
বর্তমানে এই উপানুচ্ছেদের গঠনতন্ত্রে বলা আছে, ‘ক্রিকেটের উন্নয়নে গৃহীত কার্যক্রম বাস্তবায়নে অর্থায়নের জন্য গভমেন্ট, স্পন্সর , ন্যাশনাল ও ইন্টারন্যাশনাল সোর্স থেকে তহবিল সংগ্রহ এবং উদ্ধৃত তহবিল ঝুঁকিহীন লাভজনক বিনিয়োগের ব্যবস্থা গ্রহণ।’
তার পরিবর্তে যেটা হয়েছে সেটা হলো, ‘ক্রিকেটের উন্নয়নে গৃহীত কার্যক্রম বাস্তবায়নে অর্থায়নের জন্য গভমেন্ট, স্পন্সর , ন্যাশনাল ও ইন্টারন্যাশনাল সোর্স থেকে তহবিল সংগ্রহ এবং উদ্ধৃত তহবিল ঝুঁকিহীন লাভজনক বিনিয়োগের ব্যবস্থা গ্রহণসহ যে কোনো তফসিলি ব্যাংকে, যে কোনো পরিমাণে এফডিআর করা এবং ট্রেজারি বন্ড ক্রয় করা।’
দুপুর থেকে শুরু হওয়া এজিএম শেষ হয় ইফতার আয়োজন দিয়ে। উপস্থিত কাউন্সিলদের বেশ সন্তুষ্টচিত্তেই এই এজিএম উপভোগ করেন। কাউন্সিলদের প্রত্যেকে এই এজিএমে অংশগ্রহণের জন্য একলক্ষ টাকা বকশিশ হিসেবে পেয়েছেন। এজিএম থেকে উপঢৌকন হিসেবে কাউন্সিলররা একটি করে ম্যাকবুক এয়ার হাতে নিয়ে বাড়ি ফিরেন।