‘আক্রমণাত্মক ছিলাম না, ওই সময় আউট হওয়া ঠিক হয়নি’
ম্যাচ জিততে হলে রেকর্ড গড়তে হতো বাংলাদেশকে। শেষ দুই দিনে তাড়া করতে হতো ৫১১ রান। তবে বাংলাদেশের কাছ থেকে আশা ছিল অন্তত একটা ভালো লড়াই। সেই লড়াইয়ের আভাসও মিলছিল। পুরো সিরিজে ব্যর্থ টপ অর্ডার শেষ বেলায় ইনিংসের শুরু পাচ্ছিলেন। তবে সেই শুরু পাওয়াটাকে লম্বা করতে জানতে হবে তো। বাংলাদেশের ব্যাটাররা কেউই উইকেট আঁকড়ে ধরে পড়ে থাকতে পারলেন না। শেষ দুই দিনের চ্যালেঞ্জে নেমে ২৬৮ রান তুলে প্রথম দিনেই হারিয়ে বসলেন ৭ উইকেট।
এই যেমন ধরা যাক দলের অন্যতম অভিজ্ঞ ব্যাটার মুমিনুল হকের কথা। সিলেট টেস্টেও যিনি দলের হয়ে সর্বোচ্চ ৮৭ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলেছেন। এরপর চট্টগ্রামে প্রথম ইনিংসে লম্বা সময় দলকে টেনে শেষমেশ বাকিদের ব্যর্থতায় একটা সময় থেমেছেন ৩৩ রানে। সেই তিনি এদিনও দারুণ ব্যাট করছিলেন। পেয়ে গিয়েছিলেন ফিফটির দেখাও।
কিন্তু এরপরও যেন তাড়াহুড়ো। ড্রিক্সং ব্রেকের ঠিক আগ মুহূর্তে প্রভাত জয়সুরিয়াকে মারতে গিয়ে ক্যাচ আউটের শিকার হন। এদিন মাত্র ৫৬ বলে ৫০ রান করেছেন মুমিনুল। অথচ আগের ইনিংসে ৩৩ রান তুলতে গিয়ে খেলেছেন ৮৪ বল। হঠাৎ এমন আক্রমণাত্মক ক্রিকেট কেন দিন শেষে সংবাদ সম্মেলনে আসা মুমিনুল হকের কাছেই জানতে চাওয়া হয়েছিল সেটা। উত্তরে তিনি অবশ্য জানিয়েছেন আক্রমণাত্মক ছিলেন না তিনি।
মুমিনুল বলেন, ‘আমার কাছে মনে হয় না খুব আক্রমণাত্মক ছিলাম। তবে দ্বিতীয় ইনিংসে উইকেটটা খুব ভালো ছিল। আর আমি চেয়েছিলাম আক্রমণাত্মক নয় সহজাত ক্রিকেটটা খেলার। যদি কেবল ব্লক, ব্লক করি তবে প্রতিপক্ষের বোলারদের জন্য একটা জায়গা তৈরি হয়ে যায়। হয়তো ফাস্ট ইনিংসে অনেক সময় নিয়ে খেলেছি। তাই হয়তো আপনাদের মনে হচ্ছে অনেক আক্রমণাত্মক ছিলাম এই ইনিংসে। আমি যেটা করেছি ক্যালকুলেটিভ রিস্ক নিয়েছি। আক্রমণাত্মক ছিলাম না।’
তবে ড্রিংক্স ব্রেকের ঠিক আগ মুহূর্তে ওইভাবে আউট না হলে যে বাংলাদেশ আরও ভালো অবস্থানে থাকতে পারত সেটা দেরিতে হলেও বুঝতে পেরেছেন মুমিনুল। তাই নিজের ভুলটা স্বীকারও করে নিয়েছেন। বলেন, ‘ড্রিংক্স ব্রেকের আগে ওই সময়টাতে আমি আউট হয়েছি। আর এটা অবশ্যই আমার অন্যায়। ওই সময় ওই শটটা খেলা আমার আসলে উচিত হয়নি।’
দলের বাকি ব্যাটারদের ব্যর্থতা নিয়ে মুমিনুল বলেন, ‘এই সিরিজে আমরা পুরো ব্যাটিং ইউনিট ধসে পড়েছি। কোনো অজুহাত নেই যে আমরা এটার জন্য..আসলে আমরা পুরো ব্যাটিং ইউনিটই ব্যর্থ হয়েছি। যতটুকু আমাদের সামর্থ্য ততুটুকুও খেলতে পারিনি। নিউজিল্যান্ড সিরিজেও প্রথম ইনিংসে আমারা ভালো ব্যাট করে দেখিয়েছি। ওই সিরিজের সঙ্গে বিচার করলে এই সিরিজে আমরা যেখানে যেভাবে খেলা উচিত, যখন যার দরকার ছিল তা করতে পারিনি।’
শেষ দিনে ম্যাচ জিততে হলে আরও ২৪৩ রান করতে হবে বাংলাদেশকে। হাতে উইকেট মাত্র ৩টি। উইকেটে আসেন মেহেদী মিরাজ ও তাইজুল। এরপর স্বীকৃত কোনো ব্যাটার নেই। তাই ম্যাচ থেকে যে একরকম ছিটকে গিয়েছে বাংলাদেশ। সেটা স্বীকার করে নিয়েছেন মুমিনুলও।
মুমিনুল বলেন, ‘এখন এখান থেকে ব্যাক করা অনেক কঠিন, যদি যৌক্তিক চিন্তা করেন। আমার কাছে যেটা মনে হয়, আজকের পুরোদিনে ৪ উইকেটেও যদি এই রানটা করতে পারতাম তাহলে হয়তো কালকে ভিন্ন কিছু হলেও হতে পারত। কারণ তখন পুরো দিন হাতে থাকত। সেশন বাই সেশন খেললেও হয়ে যেত। তবে ম্যাক্সিমাম সবাই সেট হয়ে আউট হয়েছে। এখন সত্যি এই পজিশন থেকে ব্যাক করা কঠিন।’