লিটনের কাছে আলাদা চাওয়া নেই শান্তর, মুগ্ধতা সাকিবে

লিটনের কাছে আলাদা চাওয়া নেই শান্তর, মুগ্ধতা সাকিবে

লিটন দাসের জন্যই নির্ধারিত ছিল অধিনায়কত্বের জায়গাটা। তামিম ইকবাল ও পরে সাকিব আল হাসানের মেয়াদে সহ অধিনায়ক ছিলেন এই উইকেটরক্ষক ব্যাটার। তবে শেষ পর্যন্ত লিটনকে বাদ রেখে তিন ফরম্যাটেই অধিনায়ক করা হয়েছে নাজমুল হাসান শান্তকে। সেই শান্তর অধীনেই প্রথমবারের মতো লঙ্কানদের বিপক্ষে পুর্ণাঙ্গ সিরিজ খেলেছে বাংলাদেশ। ব্যর্থতার কারণে যেই দল থেকে শেষ ওয়ানডের আগে বাদ পড়তে হয়েছিল লিটনকে। অবশ্য পরে ফিরেছেন টেস্ট দলে। এরপর সেখানেও ব্যর্থ হয়েছেন লিটন। তার আউট হওয়ার ধরণ নিয়েও উঠেছে প্রশ্ন। সব মিলিয়ে গত কদিনে বাংলাদেশের ক্রিকেটের টক অব দ্য টাউনে পরিণত হয়েছেন লিটন। সেই লিটনকে নিয়ে ম্যাচ শেষেও কথা বলতে হয়েছে অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্তর।

কেবল লিটন নয় তার মতো ব্যর্থ বাংলাদেশের পুরো ব্যাটিং অর্ডারই। মুমিনুল ও মিরাজের দুই টেস্টে ভিন্ন দুটি ইনিংস বাদ দিলে গোটা দলের অবস্থায় বেশ নাজুক। যার দায় চুকাতে হয়েছে ম্যাচ হেরে। লঙ্কানদের বিপক্ষে ওয়ানডেতে সিরিজ জিতলেও হারতে হয়েছে টি-টোয়েন্টি ও টেস্টে। তাই অধিনায়ক নাজমুল শান্তকে ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে প্রশ্ন শোনতে হয়েছে লিটনসহ বাকিদের ব্যর্থতার কারণ নিয়ে। জানতে চাওয়া হয়েছে তাদের কাছে অধিনায়ক হিসেবে তার প্রত্যাশা। সেই উত্তর দিতে গিয়ে শান্ত জানিয়েছেন লিটন বা অন্য সবার কাছেই একইরকম চাওয়া তার। তবে দীর্ঘ ১ বছর পর টেস্ট খেলতে নামা সাকিব আল হাসানকে নিয়ে নিজের মুগ্ধতার কথা জানাতে ভুলেননি শান্ত।

লিটনের কাছে নিজের প্রত্যাশার কথা বলতে গিয়ে শান্ত বলেন, ‘আমি কোন খেলোয়াড়কে আলাদাভাবে দেখি না। প্রত্যেকের কাছে আমার চাওয়া একইরকম। যার যে দায়িত্ব সে অনুযায়ী যেন সে দলের জন্য খেলে। দলে যারা আছে সবার সামর্থ্য আছে। হ্যাঁ, কেউ একটু বেশি অভিজ্ঞ, কেউ কম অভিজ্ঞ। লিটন অনেক গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড়। আমি আশা করব গত দুই বছর যেভাবে টেস্ট ক্রিকেট খেলেছে, দলকে অনেক ভালো জায়গা তৈরি করে দিয়েছে। মাঝে মধ্যে খারাপ যায়। আমি আশা করব সামনে ভালো করবে।’

প্রথম টেস্টে ভরাডুবির পর সিরিজ বাঁচাতে দ্বিতীয় টেস্টের দলে ঢুকেন সাকিব আল হাসান। দীর্ঘ এক বছর পর এই ৩৭ বছর বয়সী অলরাউন্ডার খেলতে নামেন চট্টগ্রাম টেস্ট। অবশ্য ব্যাট হাতে তেমন কিছু করতে না পারলেও ভূমিকা রেখেছেন বোলিংয়ে। যাতে মুগ্ধ হয়েছেন অধিনায়ক শান্ত। বলেন, ‘আমি অনেক আগে থেকেই জানতাম উনি দ্বিতীয় টেস্টটা খেলবেন। প্রস্তুতির দিক থেকে ঠিক ছিল। হ্যাঁ অবশ্যই আগে থেকে জানতে পারলে অবশ্যই ভালো। আমি আশা করব যে আগে থেকে জানতে পারব। কারণ সবসময় উনার পরিকল্পনাটা পরিষ্কারই থাকে। তাঁর পরিকল্পনাটা আমাদেরকে দিয়েই দেন। আর উনি অনেকদিন পর খেলার পর আমার মনে হয়নি ৩৭ বছর বয়সী একজন খেলছেন, প্রায় এক বছর পর টেস্ট খেলছেন। ৩৭ ওভার বল করেছে প্রথম ইনিংসে। ৩ উইকেটও নিল। ব্যাটিংটা যেভাবে করেছেন দ্বিতীয় ইনিংসে। যতটুকু আশা করেছিলাম তার থেকে বেশি পেয়েছি তাঁর কাছ থেকে। সত্যি কথা। টেস্ট ক্রিকেটে এমন অভিজ্ঞ খেলোয়াড় থাকলে অনেক সুবিধা হয়। মাঠে বিভিন্ন ধরনের ফিডব্যাকও দিয়েছেন।’

চট্টগ্রাম টেস্টে অভিষেক হয়েছে হাসান মাহমুদের। দুই ইনিংস মিলিয়ে ৬ উইকেট নিয়েছেন তিনি। অন্য পেসার খালেদ আহমেদও ছিলেন যথেষ্ট ধারাবাহিক। যা নিয়ে শান্ত বলেন, ‘ফাস্ট বোলাররা তিন-চার বছর আগেও এরকম ছিল না। কিন্তু এখন টেস্ট ক্রিকেটে এ ধরনের উইকেটে উইকেট নিচ্ছে। হাসান প্রথম ম্যাচ খেলল, যে রকম বল করল, এর আগে তাসকিন যখন খেলত, খালেদ দুর্দান্ত বোলিং করেছে দুটি টেস্টে। আমার মনে হয় প্রত্যেকে টেস্ট খেলতে চাচ্ছে যে কোন কন্ডিশনে। যেটা খুবই ভালো দিক। ব্যাটিংটা নিয়ে আমরা সবসময় স্ট্রাগল করি। কিন্তু আমি যেটা বললাম, প্রত্যেকেই দলকে ভালো কিছু দেওয়ার জন্য অনুশীলন করে, চেষ্টা করে। ফলাফলটা আসেনি। কিন্তু আমি খুবই বিশ্বাস করি যে ফল আসবে। কারণ আমরা অনুশীলন করছি এবং সেই ইচ্ছাটা সবার মধ্যে দেখছি।’

সম্পর্কিত খবর