নারাইন-রাসেলের তাণ্ডবে টানা তিন জয়ে শীর্ষে কলকাতা
চলতি আসরের শুরু থেকেই কলকাতা নাইট রাইডার্সের অপর নাম যেন ‘বিধ্বংসী রাইডার্স’, বিশেষ করে ব্যাটিংয়ে। প্রথম ম্যাচে ছক্কার পসরা সাজিয়ে দুইশ পেরোনো সংগ্রহ গড়ে সানরাইজার্স হায়দরাবাদের বিপক্ষে নাটকীয় জয়। পরের ম্যাচে রয়্যাল চ্যালেজার্স বেঙ্গালুরুর ১৮৩ রানের লক্ষ্য ১৭তম ওভারেই তুলে ফেলে কলকাতা। এবার তৃতীয় ম্যাচে এসে আগের দুই ম্যাচের এই কীর্তিগুলো যেন স্রেফ এক সংখ্যা। দিল্লি ক্যাপিটালস বিপক্ষের ম্যাচটিতে নিজেদের আগের সব রেকর্ড ছাপিয়ে গেল কলকাতা। আর ৬ রান তুললে তো আইপিএল ইতিহাসের সর্বোচ্চ রেকর্ডও ভেঙ্গে দিচ্ছিল তারা। তবে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ হয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হলো শ্রেয়াস আইয়ারের দলকে। ২৭২ রানের বিশাল সংগ্রহ দাঁড় করিয়ে জয়টা অনায়াসেই তুলল তারা। ১০৬ রানের বড় জয়ে তিন ম্যাচের তিনটিতেই জিতে আপাতত টেবিল টপার কলকাতা।
আগের ম্যাচেও ব্যাটে-বলে বেশ ছন্দে ছিলেন ক্যারিবীয় তারকা সুনীল নারাইন। যেন ২০১৭/১৮ সালের সেই নারাইন। বেঙ্গালুরুর বিপক্ষে রানে ফেরার সেই ম্যাচে ৪৭ রান করেছিলেন তিনি। এবারও তা আরও উপভোগ্য। ৩৯ বলে খেলেন ৮৫ রানের তাণ্ডব ঝরানো এক ইনিংস। পরে বোলিংয়েও নেন এক উইকেট। এতে টানা দুই ম্যাচেই ম্যাচসেরা নারাইন।
দিল্লির মাঠ বিশাখাপত্তনমে আসরের ১৬তম ও দিনের একমাত্র ম্যাচটিতে আগে টসে জেতে কলকাতা। সেখানে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৭ উইকেটে ২৭২ রানের বিশাল সংগ্রহ দাঁড় করায় শ্রেয়াস আইয়ারের দল।
পাহাড় সমান সেই লক্ষ্যে চূড়া শুরুতেই যেন বেড়ে গেল কয়েক গুণে। ৩৩ রানেই সাজঘরে ফেরেন দিল্লির শুরুর চার ব্যাটার পরে অধিনায়ক ঋষভ পন্ত ও ট্রিস্টান স্টাবসের জোড়া ফিফটিতে মান বাঁচানোর সংগ্রহে পৌঁছায় স্বাগতিকরা। এই দুই ব্যাটার ফেরার পর বাকিরাও ছিলেন যাওয়া আসার মধ্যেই। ১৭ ওভার ২ বলে ১৬৬ রানেই গুটিয়ে যায় দিল্লি। সর্বোচ্চ ৫৫ রান আসে পন্তের ব্যাটে এবং স্টাবস করেন ৫৪ রান।
কলকাতার হয়ে তিনটি করে উইকেট নেন আরোরা ও বরুণ। এদিকে আগের দুই ম্যাচে উইকেটশূন্য থাকলেও তৃতীয় ম্যাচে এসে দুটি উইকেট নিলেন কলকাতার সবচেয়ে দামি বোলার মিচেল স্টার্ক।
এর আগে ব্যাট করতে নেমে শুরু থেকেই তাণ্ডব চালাতে থাকেন দুই ওপেনার ফিল সল্ট ও সুনীল নারাইন। ১৮ রান করে সল্ট ফিরলে ভাঙে ২৭ বলে ৬০ রানের ওপেনিং জুটি। পরে রঘুবংশীকে নিয়ে তাণ্ডব জারি রাখেন নারাইন। ১১ ওভারের দলের সংগ্রহ পৌঁছায় দেড়শ’য়ে। দ্বিতীয় উইকেটে জুটি দাঁড়ায় ৪৮ বলে ১০৪ রানের। সেখানে স্রেফ ৩৯ বলে ৭ চার ও ৭ ছক্কায় ৮৫ রানের বিধ্বংসী এক ইনিংস খেলে সাজঘরে ফেরেন নারাইন। পরের ওভারে রঘুবংশীও ফেরেন ৫৪ রান করে। স্কোরবোর্ডে তখন ৩ উইকেটে ১৭৬ রান।
সেখান থেকে ১৯ বলে রাসেলের ৪১ এবং ৮ বলে রিংকু সিংয়ের ক্যামিওতে ২৭২ রানের টুর্নামেন্টের দ্বিতীয় সেরা সংগ্রহ দাঁড় করায় কলকাতায়।
তিন ম্যাচের তিনটিতে রাজস্থান জিতলেও নেট রান রেটে প্রায় দ্বিগুণ এগিয়ে কলকাতা। আগের দুই আসরে ১৪ ম্যাচের ৬টি জিতেছিল কলকাতা। এতে নিশ্চিত হয়নি শেষ চার। সেই দুর্দশা কাটিয়ে এবার যেন সেই জায়গা দখলে শুরু থেকেই পণ করে রেখেছে আইয়ার-রাসেলরা।
সংক্ষিপ্ত স্কোরকার্ডঃ
কলকাতা নাইট রাইডার্সঃ ২৭২/৭ (২০ ওভার) (নারাইন ৮৫, রঘুবংশী ৫৪, রাসেল ১; নর্কিয়া ৩/৫৯)
দিল্লি ক্যাপিটালসঃ ১৬৬ (১৭.২ ওভার) (পন্ত ৫৫, স্টাবস ৫৪; আরোরা ৩/২৭, বরুণ ৩/৩৩)
ফলঃ ১০৬ রানে জয়ী কলকাতা
ম্যাচসেরাঃ সুনীল নারাইন