৫ ম্যাচে তিন শূন্য নিয়ে বিশ্রামে ম্যাক্সওয়েল
০, ৩, ২৮, ০, ১, ০।
জি¦ এগুলো চলতি আইপিএলে গ্লেন ম্যাক্সওয়েলের স্কোর। সবমিলিয়ে এই ৬ ম্যাচে তার রানের যোগফল মাত্র ৩২। রানগড় ৫.৩৩। এই ছয় ম্যাচের মাত্র একটি ম্যাচে জিতেছিল রয়েল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু। প্রতিপক্ষ ছিল পাঞ্জাব কিংস। জয়ী সেই ম্যাচেও গ্লেন ম্যাক্সওয়েলের অবদান ছিল মাত্র ৩ রান!
ব্যাট হাতে এমন ভয়াবহ পরিস্থিতি আগে কখনো দেখেননি ম্যাক্সি। যার ব্যাটে রানের ফুলকি ঝরতো। ছক্কার ঝড় উঠতো। বোলাররা পালাতে চাইতেন। সেই তার ব্যাটই এমন নিস্প্রভ। টানা এই ব্যর্থতা থেকে বেরিয়ে আসার আপাত অন্য কোনো উপায় না পেয়ে ম্যাক্সওয়েল সরে দাড়ানোকেই সঠিক কাজ বলে মনে করলেন। নিজে যেচে দলকে প্রস্তাব দিলেন, আমার বরং খানিকটা বিশ্রামে যাই। তোমরা মাঠে খেলো।
বুড়ো আঙ্গুলে একটু চোটও ছিল। মনে করা হচ্ছিল ১৫ এপ্রিল সানরাইজার্স হায়দরাবাদের বিরুদ্ধে ম্যাচে দল থেকে বাদ পড়তে চলেছেন তিনি। সেই ম্যাচের একাদশে অবশ্য ছিলেন না ম্যাক্সওয়েল। তবে নিজেই নিজেকে সেই ম্যাচ থেকে সরিয়ে নিয়েছেন তিনি। সেই প্রসঙ্গে ম্যাক্সওয়েল বলছিলেন, ‘সত্যি বলতে কি আমার জন্য এটা খুব সহজ একটা সিদ্ধান্ত ছিল। শেষ যে ম্যাচে আমি খেলেছি সেই ম্যাচের পর আমি অধিনায়ক ফাফ ডু প্লেসি এবং কোচদের কাছে যাই। তাদের বলি, আমার মনে হয় পরের ম্যাচে আমার জায়গায় অন্য কাউকে খেলানোর চেষ্টা করা উচিত। ক্যারিয়ারে এমন বাজে ফর্মে আমি আগেও পড়েছি। এমন পরিস্থিতিতে খেলতেই থাকলে দেখা যায় গর্তের আরো গভীরে পড়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। আর তাই আমার মনে হয়েছে এই মূহূর্তে নিজের মন-মানসিকতা ও শরীরকে খানিকটা বিশ্রাম এবং মুক্তি দেওয়ার প্রয়োজন রয়েছে। এই টুর্নামেন্টে যদি আমার প্রয়োজন থাকে তাহলে এটা আমাকে করতেই হবে। আশা করছি মানসিক দৃঢ়তা ও শারীরিকভাবে আরো শক্তিশালী হয়ে আমি আবার ফিরবো। নিজেকে প্রভাবী হিসেবে প্রমাণ করতে পারবো।’
সাত ম্যাচের মধ্যে ছয়টি হার নিয়ে চলতি আইপিএলে পয়েন্ট টেবিলের তলানিতে এখন রয়েল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুুরু। টানা পাঁচ ম্যাচে হেরেছে তারা। ম্যাক্সওয়েল সর্বশেষ ম্যাচে খেলেননি। তবুও ২৫ রানে সেই ম্যাচ হেরেছে বেঙ্গালুরু। সানরাইজার্স হায়দরাবাদ রান উৎসবে ম্যাচটা ভাসিয়ে দেয়। রেকর্ড ২৮৭ রান তুলে তারা। জবাবে ২৬২ রান তুলেও বড় ব্যবধানে ম্যাচ হারে আরসিবি।
- আরসিবির সমস্যাটা ঠিক কোথায়?
এই প্রশ্নের ব্যাখ্যায় দলের চেয়ে নিজের সমস্যাটা বেশি সামনে আনলেন ম্যাক্সওয়েল। বললেন, পাওয়ার প্লে’র পর আমাদের ব্যাটিংয়ে ঘাটতি দেখা যাচ্ছে। অথচ এই জায়গাটাই ছিল গত কয়েক মৌসুমে আমার শক্তির জায়গা। ব্যাট হাতে এই জায়গায় আমার যেমন অবদান রাখার কথা, সেটা আমি এবার পারিনি। আর তাই দলের সার্বিক ফলও খারাপ হচ্ছে। পয়েন্ট টেবিলের তলায় চলে গেছি আমরা। আমার জায়গায় অন্য কাউকে সুযোগ দেওয়ার সময় এখন।’
আইপিএল শুরু হওয়ার আগে ম্যাক্সওয়েলের টি- টোয়েন্টি ফর্মটা ছিল দারু। গত নভেম্বর চলতি বছরের মার্চ পর্যন্ত ১৭টি ম্যাচে তার রান ছিল ৫৫২। গড় ৪২.৪৬। স্ট্রাইকরেট ১৮৫.৮৫। সেঞ্চুরি ছিল দুটো। কিন্তু আইপিএলের প্রথম ম্যাচে প্রথম বলে শূন্য রানে আউটের পর তার ব্যাটে যেন ঘুণ ধরলো!
ম্যাক্সওয়েল এই সমস্যার জন্য খুব বেশি দুরের চিন্তা কিছু করছেন না। জানালেন, টি- টোয়েন্টিতে কখনো কখনো এমন ঘটনা ঘটে। এই ফর্মের খেলায় অস্থির সময় যায়।’
বিশ্রাম থেকে যখন আবার মাঠে ফিরবেন তখন প্রতিপক্ষের বোলারদের জন্য সময়টা যেন অস্থির যায়, সেই অপেক্ষায় রয়েছেন ম্যাক্সওয়েলের সমর্থকরা। আর ম্যাক্সওয়েলও ভালোই জানেন, সমস্যা থাকবে সমাধানও অবশ্যই আছে।