সব ছাপিয়ে ‘দেনা শোধের’ ম্যাচ!

সব ছাপিয়ে ‘দেনা শোধের’ ম্যাচ!

‘দিনে দিনে বহু বাড়িয়াছে দেনা শুধিতে হইবে ঋণ’ – কাজী নজরুল ইসলামের কথাটাই যেন সংবাদ সম্মেলনের এক পর্যায়ে গিয়ে ঘুরিয়ে বললেন কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহে। শেষ তিন বছরে যেমন পারফর্ম করেছে দল, তেমনটা করছে না এখন। প্রত্যাশা মেটাতে হচ্ছে ব্যর্থ। এমন কিছু আর কতদিন? ভারত ম্যাচের আগে সে প্রসঙ্গটাই চলে এল লঙ্কান কোচের কথাতে। 

বাংলাদেশ আর ভারতের লড়াইটা শেষ অনেক বছর ধরেই ঠিক মাঠের লড়াইয়ের পর্যায়ে নেই। সম্প্রচারকারী প্রতিষ্ঠান থেকে শুরু করে ভক্ত-সমর্থক সব জায়গাতে একটা বিষয় চোখে পড়ে বেশ করে, আর সেটা হলো কথার ঝাঁজ। 

তাতে ভারতের সাবেকরাও যোগ দিয়েছেন শেষ কিছু দিনে। বীরেন্দর শেবাগ যা বললেন, তাতে তাচ্ছিল্যের ছাপ পরিষ্কার। বললেন, ‘শ্রীলঙ্কা, আফগানিস্তান আর বাংলাদেশকে তো আমরা এমনিতেই হারাতে পারি!’ সঞ্জয় মাঞ্জরেকারের কথাতেও যেন প্রতিধ্বনিত হলো শেবাগের সুরই, ‘বাংলাদেশ শতভাগ ঢেলে দিলেও তো আমাদের হারাতে পারবে না! তাদের সে যোগ্যতা কোথায়?’

অথচ শেষ কিছু দিনের পরিসংখ্যান বলছে, ভারত নয়, বাংলাদেশই এগিয়ে সেখানে। সবশেষ দ্বিপাক্ষিক সিরিজের তিন আর এশিয়া কাপের এক ম্যাচ মিলিয়ে চার ম্যাচে বাংলাদেশ শেষ হাসি হেসেছে তিন বার। এশিয়া কাপেরটাকে না হয় ‘ডেড রাবার’ বলে উড়িয়ে দিতে পারেন আপনি, কিন্তু ওই দ্বিপাক্ষিক সিরিজ? সেখানে তো রোহিত শর্মা, বিরাট কোহলিদের সবাই খেলেছিলেন!

ম্যাচের আগে দুটো প্রসঙ্গই চলে এল সংবাদ সম্মেলনে। কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহে উত্তর দিলেন বেশ সোজাসাপ্টা। জানালেন, ‘যদি আপনার দেশের হয়ে খেলার বিষয়টা আপনাকে অনুপ্রাণিত করতে না পারে, তাহলে আর কোনো কিছুতেই কাজ হবে না।’ 

এমনিতে অনুপ্রেরণা যোগানোর মতো বিষয়ের অভাব নেই ভারত ম্যাচের আগে। বিশ্বকাপটা চলতি সপ্তাহে এসে বেশ ‘ওপেন’ হয়ে গেছে যেন, যে কেউ হারিয়ে দিতে পারে যে কাউকে। এক দিনের ব্যবধানে আফগানিস্তান আর নেদারল্যান্ডস হারাল ইংল্যান্ড আর দক্ষিণ আফ্রিকাকে। আন্ডারডগদের জন্য তো এমন কিছু বেশ অনুপ্রেরণার। 

তবে সেসবে নজর না দিয়ে হাথুরু চাইছেন তার দল ভালোভাবে ঢেলে দিক তার সামর্থ্যের শতভাগ। বললেন, ‘আমি চাইব আমার দল যেন সামর্থ্যের সবটুকু ঢেলে দেয়। এরপর যা হবে, তা তো আর আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই।’

এখন পর্যন্ত দলের যা পারফর্ম্যান্স, তাতে মোটেও সন্তুষ্ট নন লঙ্কান এই কোচ। তার ভাষায়, এই ‘দেনার দায়’টা এখন ঝুলছে দলের কাঁধে। বললেন, ‘আমরা দল হিসেবে নিজেদের পূর্ণ পারফর্ম্যান্সটা দেখাতে পারিনি এখনো। সেটা এখনো বাকি রয়ে গেছে। আমরা জানি, যখন আমরা দল হিসেবে খেলি, আমাদের সামর্থ্যের সমান পারফর্ম করি, আমরা বড় দলকেও হারাতে পারি। আমরা এটা অতীতে করেছি। ফিঙ্গার্স ক্রসড! আমদের অন্তত এমন একটা দিন দিতেই হবে…’

তবে তাই হোক, সে ‘একটা দিন’ ফিরুক। তা কালই কেন নয়?

সম্পর্কিত খবর