সিলেটের ৩ স্কুলে নিগারদের ‘নিমন্ত্রণ’
স্কুল দালানটা ইংরেজি অক্ষর ও আকৃতির। তার সামনে প্রাঙ্গনে দাঁড়িয়ে নিগার সুলতানা জ্যোতি, ফাহিমা খাতুন, নিগার সুলতানা জ্যোতিরা। আর স্কুলের তিন তলার সবকটার বারান্দায় দাঁড়িয়ে শিক্ষার্থীরা। উৎসাহ নিয়ে দেখছেন বাংলাদেশ নারী দলের তারকাদের, ‘বাংলাদেশ, বাংলাদেশ’ স্লোগান ভেসে আসছে একটু পরপরই।
খুব বেশি সময় ছিল না। তাই ক্রিকেটারদের পক্ষে অটোগ্রাফ দেওয়ার আবদার রাখার সুযোগ ছিল না তেমন। কিন্তু সব রকম বাধা উপেক্ষা করে এরপরও ক্ষুদে শিক্ষার্থীরা অটোগ্রাফের আবদার করেছেন জ্যোতিদের কাছে। কেউ পেয়েছেন, কেউ আবার হতাশও হয়েছেন।
দৃশ্যগুলো দেখা গেছে আজ সিলেটের তিন স্কুলে। নিগার সুলতানা জ্যোতিরা আজ অনুশীলনের ফাঁকে একটু সময় পেয়েছিলেন, তখন ছুটে গেছেন স্কুল তিনটিতে। প্রথমে গেছেন আম্বরখানা গার্লস স্কুল, এরপর ব্লু বার্ড স্কুল অ্যান্ড কলেজ, শেষে তাদের গন্তব্য হয় আনন্দনিকেতন স্কুল। তিন জায়গাতেই দেখা গেছে একই দৃশ্য।
তিনটি স্কুল অন্তত এ বিষয়টা জানান দিচ্ছে, নারী ক্রিকেট নিয়ে ক্ষুদে শিক্ষার্থীদের মাঝে আগ্রহের কমতি নেই। যার প্রমাণ মিলল বাংলাদেশ অধিনায়ক নিগারের একটা প্রশ্নে। শিক্ষার্থীদের জিজ্ঞেস করলেন, ‘ক্রিকেট খেলতে চান কে কে?’ সে প্রশ্নের জবাবে হাত তুললেন শিক্ষার্থীদের সবাই। অধিনায়ক নিগার এমন আগ্রহ দেখে স্কুল ক্রিকেটটাকে মাঠে দেখতে চাইলেন, উপস্থিত কর্তাদের আহ্বান জানালেন এমন উদ্যোগ নেওয়ার।
সঙ্গে আরও নিমন্ত্রণ গেল শিক্ষার্থীদের কাছে। তাও একটা নয়, দুটো। সিলেট চলতি বছর পরিণত হয়েছে নারী ক্রিকেটের প্রাণকেন্দ্রে। বছরের শেষ ভাগে নারী বিশ্বকাপের আসর বসবে ওখানে। তার আগে ভারতের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজও চলছে ওখানে। দুটো আয়োজনেই শিক্ষার্থীদের সরব উপস্থিতি চাইলেন অধিনায়ক। সবার হাতে সিরিজের সূচি তুলে দিলেন তিন ক্রিকেটার। তিন স্কুলের প্রধানকে তুলে দিলেন সবার অটোগ্রাফসহ জার্সিও।
এ উদ্যোগ মূলত বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের নারী বিভাগের হেড অফ অপারেশন্স হাবিবুল বাশার সুমনের মস্তিষ্কপ্রসূত। নিগারদের সমর্থন যোগানো তো বটেই, উদ্দেশ্য ছিল নারী ক্রিকেটার তুলে আনাও। তিনি বলেন, ‘নারীদের ক্রিকেটকে সবার মধ্যে ছড়িয়ে দিতে চাইছি আমরা। সিলেটে আমাদের খেলা চলছে, মেয়েরা আসুক তা দেখতে। এই যে প্রচারণা করলাম, এখান থেকে যদি কিছু খেলোয়াড়ও উঠে আসে, সেটা আমাদের অনেক বড় পাওয়া।’
তিন স্কুল ভ্রমণ দলকে উদ্বুদ্ধও করবে বলে মনে করেন সুমন। তিনি বলেন, ‘তিন স্কুলেই আমরা দারুণ সমর্থন পেয়েছি। শিক্ষার্থীদের মধ্যে যে উদ্দীপনা তিন ক্রিকেটার দেখতে পেয়েছে, তা আমার মনে হয় তাদের মনে ইতিবাচক একটা ছাপও রেখে যাবে।’
ভারতের বিপক্ষে সিরিজে ১-০ ব্যবধানে পিছিয়ে আছে বাংলাদেশ। দ্বিতীয় ম্যাচ শুরুর আগে সিরিজে ফেরার দারুণ একটা টনিকও পাওয়া হয়ে গেল নারী দলের!