শেষ বলের নাটকীয়তায় ১ রানের জয় হায়দরাবাদের
আইপিএলে দুইশ পেরোনো লক্ষ্য যেন এখন নিত্যদিনের ঘটনা। তারই ধারাবাহিকতায় টেবিল টপার রাজস্থান রয়্যালসের সামনে ২০২ রানের লক্ষ্য দাঁড় করায় সানরাইজার্স হায়দরাবাদ। এদিকে আইপিএলের এবারের আসরে এমন লক্ষ্য তাড়া করে জয় তুলে নেওয়ার ঘটনাও দাঁড়িয়েছে নিয়মিত হয়ে।
তবে ইনিংসের প্রথম ওভারে জোড়া উইকেট হারিয়ে শুরুতেই বড়সড় ধাক্কা খায় রাজস্থান। তবে যশস্বী জয়সওয়াল ও রিয়ান পরাগের নৈপুণ্যে জয়ের পথেই এগোচ্ছিল তারা। ১৫ ওভারে ৩ উইকেট হারিয়ে ১৫৭ রান তুলে ফেলে ‘পিংক সিটি’র দলটি। তবে পরের চার ওভারে ৩ উইকেট নিয়ে ম্যাচ জমিয়ে তোলেন হায়দরাবাদের পেসাররা। শেষ ওভারে জয়ের জন্য রাজস্থানের তখন দরকার ১৩ রান। শেষ বল এসে ২ রান। ভারতীয় পেসার ভুবনেশ্বর কুমারের ফুলার লেংথের বল সোজা রভম্যান পাওয়েলের প্যাডে এবং সেখানে ফিল্ডিং দলের জোরালো আবেদনে আম্পায়ারের সাড়া। এতে শেষ বলে নাটকীয়তায় শেষ পর্যন্ত ১ রানের জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে ‘অরেঞ্জ আর্মি’ খ্যাত দলটি।
এই হারের পরও অবশ্য পয়েন্ট তালিকায় শীর্ষস্থান ধরে রেখেছে রাজস্থান। এ নিয়ে আসরে এখন পর্যন্ত দুটি ম্যাচে হারল তারা। আসরের শুরুর চার ম্যাচে জয়ের পর প্রথম হারের মুখ দেখছিল দলটি। এবারও ঠিক টানা চার ম্যাচ জয়ের পর দেখল দ্বিতীয় হার। এদিকে টানা দুই ম্যাচ হারের পর জয়ে ফিরল হায়দররাবাদ। এতে ১০ ম্যাচে ১২ পয়েন্ট নিয়ে তারা উঠে এসেছে তালিকার চারে।
নিজেদের মাঠে গতকাল দিনের একমাত্র ম্যাচে টসে জিতে আগে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেয় হায়দরাবাদ। সেখানে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৩ উইকেটে ২০১ রান তোলে তারা।
লক্ষ্য তাড়ায় শুরু ওভারেই ভুবনেশ্বরের পেস তোপের মুখে পড়ে রাজস্থান। ইনিংসের দ্বিতীয় বলে ইংলিশ তারকা ব্যাটার জশ বাটলারকে ফেরানোর পর একই ওভারের পঞ্চম বলে রাজস্থান অধিনায়ক সঞ্জু স্যামসনকে বোল্ড করে ফেরেন এই ডানহাতি পেসার। তবে শুরুর এই ধাক্কা অনায়াসেই সামলে নেন দলটির তরুণ দুই ব্যাটার জয়সওয়াল ও পরাগ। দুজনেই নিজেদের ইনিংসের শুরুর দিকে পেয়েছেন সুযোগ। চতুর্থ ওভারের শুরুতেই জয়সওয়ালের ক্যাচ ছেড়ে দেন হায়দরাবাদ অধিনায়ক প্যাট কামিন্স। পরে পরাগের ক্যাচও ধরতে পারেননি অভিষেক শর্মা। সেই সুযোগগুলো কাজে লাগিয়ে তৃতীয় উইকেটে ১৩৪ রানের দারুণ এক জুটি গড়েন দুজন। শুরুতেই লক্ষ্যটা কঠিন হয়ে দাঁড়ালেও এই দুই ব্যাটারের নৈপুণ্যে সহজ জয়ের দিকেই এগোচ্ছিল রাজস্থান।
তবে ১৪ বলের ব্যবধানে ২২ গজে থিতু হওয়া জয়সওয়াল ও পরাগ ফেরার পর জয়টাও যেন হাতছাড়া হয়ে যায় রাজস্থানের থেকে। ৪৯ বলে ৮ চার ও ৪ ছক্কার দলীয় সর্বোচ্চ ৭৭ রান আসে পরাগের ব্যাটে। এদিকে ৪০ বলে ৬৭ রান করেন জয়সওয়াল। তাদের ফেরার পর শেষ চার ওভারে ৪২ রান প্রয়োজন ছিল দলটির। হাতে তখনো ৬ উইকেট। তবে লোয়ার মিডল অর্ডারের ব্যর্থতা এবং হায়দরাবাদ পেসারদের শেষ দিকের দুর্দান্ত বোলিংয়ে শেষ বলে গড়ানো ম্যাচে ১ রানের হার নিয়ে মাঠ ছাড়তে হয় রাজস্থানকে।
হায়দরাবাদের পক্ষে এদিন সর্বোচ্চ ৩ উইকেট নেন ভুবনেশ্বর, দুটি করে নেন কামিন্স ও নটরজন।
এদিকে আগে ব্যাট করতে নেমে হায়দরাবাদের শুরুটাও ছিল ধাক্কা দিয়েই। ৫ ওভার ১ বলে ৩৫ রানেই তারা হারিয়ে বসে ২ উইকেট। এদিন ট্রাভিস হেড শেষ কয়েক ম্যাচে ব্যর্থতা ছাপিয়ে রানে ফিরলেও তা ছিল ধীরগতির। ৪৪ বলে করেন ৫৮ রান। নিতিশ রেড্ডীর ৪২ বলে অপরাজিত ৭৬ রান এবং শেষ দিকে হেন্রিখ ক্লাসেনের ১৯ বলে ৪২ রানের ঝোড়ো ইনিংসে ভর করে দুইশ পেরোনো লক্ষ্যে পোঁছায় হায়দরাবাদ। রাজস্থানের পক্ষে সর্বোচ্চ দুটি উইকেট নেন হায়দরাবাদের দুই হার্ড-হিটার ওপেনারকে ফেরানো আভেশ খান।