ঢাকায় বাবার স্মৃতিকে ফিরিয়ে আনলেন ক্যাম্পবেল জুনিয়র

ঢাকায় বাবার স্মৃতিকে ফিরিয়ে আনলেন ক্যাম্পবেল জুনিয়র

নাম জনাথন ক্যাম্পবেল। সিরিজ শুরুর আগে থেকেই তিনি ছিলেন আলোচনায়। নামটা কি পরিচিত লাগছে? তিনি অপরিচিত থাকলেও তার বাবা অ্যালিস্টার ক্যাম্পবেল জিম্বাবুয়ে এবং বাংলাদেশের ক্রিকেটে অনেক পরিচিত এক নাম।

অ্যালিস্টার ক্যাম্পবেল ছিলেন জিম্বাবুয়ের অধিনায়ক। লম্বা সময় জিম্বাবুয়ের ক্রিকেটের হাল ধরেছিলেন তিনি। তখন ছিল মূলত জিম্বাবুয়ের ক্রিকেটের স্বর্ণালি সময়। বাংলাদেশের বিরুদ্ধে তার ক্রিকেট রেকর্ডও চমৎকার। সেঞ্চুরিও আছে। ছিলেন দলের ওপেনার। সেই অ্যালিস্টার ক্যাম্পবেলকে চলতি সিরিজে আরেকবার মনে করিয়ে দিলেন তার ছেলে জনাথন ক্যাম্পবেল। জুনিয়র ক্যাম্পবেল চলতি সিরিজে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে খেলছেন।

রোববার, ৫ মে চট্টগ্রামে সিরিজের দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে জিম্বাবুয়ের জার্সি গায়ে অভিষেক হলো তার। অভিষেকেই দারুণ ইনিংস খেললেন জনাথন ক্যাম্পবেল। বাবার মতো তিনিও বাঁহাতি। তবে ওপেনার নন। ব্যাট করেন লেট মিডল অর্ডারে। বোলিংয়ে স্পিন দক্ষতাও আছে। চট্টগ্রামে আজ তিনি এই ম্যাচে নামলেন সাত নম্বরে। দল তখন বড় বিপদে। ৪২ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে ধুঁকছে।

শুরুটা হলো জনাথনের সৌভাগ্য দিয়ে। ১ রানেই ক্যাচ উঠলো। কিন্তু উইকেটের পেছনে জাকের আলী অনিক সেটা ধরতে পারলেন না। সহজ ক্যাচটা মাটিতে পড়লো।

সেই সুযোগটা কাজে লাগিয়ে জনাথন ক্যাম্পবেল বাকি সময়টায় যা করলেন তাকে বলে ‘ব্যাটিং ঝড়’। ৩ ছক্কা ও ৪ বাউন্ডারিতে মাত্র ২৪ বলে করলেন ৪৫ রান। যেভাবে খেলছিলেন তাতে অভিষেকে হাফ সেঞ্চুরিটা তার পাওনা ছিল। কিন্তু থেমে যান হাফসেঞ্চুরি থেকে মাত্র ৫ রান দূরে। প্রায় প্রতিটা বলেই স্কোরিং শট খেলেন এই তরুণ। ষষ্ঠ উইকেটে জনাথন ক্যাম্পবেল এবং ব্রায়ান বেনেটের ৭৮ রানের জুটিই এই ম্যাচে জিম্বাবুয়েকে ১৩৮ রানের সঞ্চয় এনে দেয়। ৩ ছক্কা ও ২ বাউন্ডারিতে বেনেটও ২৯ বলে হার না মানা ৪৪ রান করেন।

ইনিংস শেষে ব্রায়ানের সঙ্গে এই জুটি এবং নিজের ব্যাটিং প্রসঙ্গে জনাথন ক্যাম্পবেল বলছিলেন, ‘আমি যখন ব্যাটিংয়ে নামি দল সেসময় সংকটে ছিল। আমাদের কাজ ছিল সঙ্কট কাটিয়ে দলকে ভালো স্কোর এনে দেওয়া। সেই কাজ করার চেষ্টাই করেছি আমরা। ব্রায়ান বেনেটের সঙ্গে ঘরোয়া ক্রিকেটে আগেও জুটিতে ব্যাটিং করার অভিজ্ঞতা ছিল আমার। ব্রায়ানও এই ম্যাচে দারুণ ব্যাটিং করেছে। বাংলাদেশের বোলাররা ভালো বোলিং করেছে। শুরুতে আমাদের রান তোলার তেমন সুযোগ দেয়নি তারা। উইকেট বেশ ব্যাটিং বান্ধব। স্কোরবোর্ডে ১৩৮ রান খুব বড় কোনো স্কোর নয়। ম্যাচে জিততে হলে আমাদের চমকপ্রদ কিছু বোলিং করতে হবে।’

জনাথনের বাবা অ্যালিস্টার ক্যাম্পবেল ক্যারিয়ারের ১৮৮ টি ওয়ানডের মধ্যে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে খেলেছেন মাত্র ৭টি ওয়ানডে। এই সাত ম্যাচে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে একটি সেঞ্চুরি এবং দুটি হাফসেঞ্চুরি আছে তার। ক্যারিয়ারের সাত টেস্টের মধ্যে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে খেলেছেন ২টি টেস্ট। সর্বোচ্চ রান ৭৩। ১৯৯২ সালে আর্ন্তজাতিক ক্রিকেটে তার অভিষেক হয়। ক্রিকেট থেকে অবসরে যান ২০০৩ সালে। সেই সময়টায় টেস্ট ক্রিকেটে বাংলাদেশের সবে যাত্রা শুরু।

ছেলে জনাথন তার টি- টোয়েন্টি ক্যারিয়ার যে দুর্দান্ত ভঙ্গিতে শুরু করেছেন তাতে নিশ্চিত এই ফরমেটে অনেকদিন টিকে থাকতেই এসেছেন তিনি।

সম্পর্কিত খবর