সব চোখ লিটনের ব্যাটে
ফরম্যাট বদলে যাচ্ছে, কিন্তু লিটন দাসের ফর্মটা রয়ে যাচ্ছে একই জায়গায়। না, কথাটা কোনো প্রকার প্রশংসা নয়। যা এখনকার বাস্তবতা, তার নিরিখে কথাটা স্রেফ একটা সমালোচনাই। সেঞ্চুরি তো দূর অস্ত, সবশেষ ফিফটিটাও তার ২১ ইনিংস অতীতের গল্প। সেই গেল ওয়ানডে বিশ্বকাপে ভারতের বিপক্ষে।
এমন ফর্ম নিয়েও যখন টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের দলে জায়গা পেয়ে গেলেন লিটন, তখন সমালোচনা ওঠাটাই ছিল স্বাভাবিক, সেটা হয়েছেও। নির্বাচক, কোচ, অধিনায়ককে প্রশ্নবাণেও কম জর্জরিত হতে হয়নি তার বিষয়ে। তবে সবাই একটা বিষয়ে একমত। তার ওপর আস্থা রাখার বিষয়ে।
কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহে তো বলেই ফেলেছেন, বড় কিছুই চান লিটনের কাছে। সেটা দিনদুয়েক আগে এক ভিডিওবার্তায় জানালেন, ‘সে আমাদের অন্যতম সেরা ব্যাটার। এবারের বিশ্বকাপে ওর কাছে বড় কিছু আশা করছি।’ একই সুর ঝরে পড়েছিল অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্তর কণ্ঠেও।
শুধু কি কোচ? একজন মানুষের সবচেয়ে বড় সমর্থনটা পাওয়া যায় তার ঘর থেকে। বলা হয় প্রত্যেক সফল মানুষের পেছনে একজন নারীর হাত থাকে। লিটনের সে সমর্থনটা দেন তার স্ত্রী সঞ্চিতা দাস। লিটন আজ বিষয়টা জানালেন, ‘অনেক কোচই আছে যারা আমাকে মোটিভেট করেন। এই সময়টা মোটিভেট অনেক বড় জিনিস। আমার সবচেয়ে কাছের মানুষ আমার ওয়াইফ যে আমাকে সাহস দেয়। এর থেকে আর বড় কিছু লাগেনা।’
লিটন দাসের সবশেষ ফিফটিটা সেই গেল বছর ওয়ানডে বিশ্বকাপে, ভারতের বিপক্ষে খেলেছিলেন ৬৬ রানের ইনিংস। এরপর শেষ ২১ ইনিংসের ফিরিস্তিটা দেখুন। ওয়ানডেতে ১০ ইনিংসে ১৫৮, টি-টোয়েন্টিতে ৭ ইনিংসে ১২০, টেস্টে ৪ ইনিংসে ৬৭।
৩৪৫ রান করেছেন এই সময়ে, গড় ১৮.১৬। দুঃসময় যে চলছে, তার প্রমাণ মিলেছিল গেল ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে। প্রাইম ব্যাংকের বিপক্ষে আবাহনী লিমিটেডের হয়ে তিনি খেলেছিলেন ১০৬ বলে ৫৬ রানের ইনিংস। এমন আড়ষ্ট ব্যাটিং আর কখনো করতে দেখা গেছে কি না লিটনকে, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠে যাওয়াটা স্বাভাবিকই ছিল।
তবে এমন দুঃসময়েও তার চার পাশের সমর্থনটা খুব ভালোভাবেই পেয়েছেন লিটন দাস। এবার সে সমর্থনের প্রতিদান দেওয়ার পালা। ফর্মে ফেরার পালা।
বাংলাদেশের বিশ্বকাপ মিশন শুরুর আরও ১৭ দিন বাকি। এই সময়ে বাংলাদেশ খেলবে ৫ ম্যাচ। লিটন তাই মূল মঞ্চের আগেও আরও পাঁচটা সুযোগ পাচ্ছেন নিজেকে ফিরে পাওয়ার। সে পাঁচ সুযোগের প্রথমটা তিনি পাচ্ছেন আজ।
লিটন, আপনি শুনছেন তো?