নাটকীয় ফাইনালে জিতে ট্রেবল বসুন্ধরার

  • স্পোর্টস বাংলা রিপোর্ট
  • ০৫:৫৫ পিএম | ২২ মে, ২০২৪

‘কামব্যাক খেলারই অংশ। আর আমরাও এমন কিছু অনেক বার অনেক গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে করেছি। আমাদের মনোযোগ হচ্ছে এসব চ্যালেঞ্জ খুঁজে বের করা, আর কালকের ম্যাচে এমন কিছু না হতে দেওয়া।’ কামব্যাক প্রসঙ্গ উঠতেই ম্যাচের আগে স্পোর্টস বাংলাকে এই কথাটাই বলেছিলেন বসুন্ধরা কিংস কোচ অস্কার ব্রুজন। কে জানত ম্যাচে তার দলই জিতবে, তাও ওই কামব্যাক করেই!

শেষ বাঁশির ৫ মিনিট আগেও বসুন্ধরা ম্যাচের বাইরেই ছিল। ঠিক ওই সময় এক গোল ম্যাচটা নিয়ে যায় অতিরিক্ত সময়ে। সেখানে প্রথমার্ধের শেষে এক আলোচিত গোল বসুন্ধরাকে নিয়ে গেল ইতিহাসের দুয়ারে। মোহামেডানকে ২-১ গোলে হারিয়ে ফেডারেশন কাপও জিতল বসুন্ধরা। ২০১২-১৩ মৌসুমের পর এই প্রথম কোনো দল জিতল ঘরোয়া ট্রেবল, আর বসুন্ধরা এই কীর্তি গড়ে ফেলল ইতিহাসে প্রথমবারের মতো।

অথচ ম্যাচের শুরুর অংশটা বাদ দিলে এই ফাইনাল ছিল মোহামেডানেরই ফাইনাল। ৬৩ মিনিটে ইম্যানুয়েল সানডের গোল মোহামেডানকে স্বপ্ন দেখাচ্ছিল রেকর্ড ১২তম ফেড কাপের। 

ম্যাচে মোহামেডানের দাপটের শুরু প্রথমার্ধের শেষ থেকে, যদিও সেগুলোকে বলার মতো আক্রমণে রূপ দিতে পারছিল না দলটা। পারল দ্বিতীয়ার্ধে। যে কারণে একে একে তিনটা শট বসুন্ধরা গোলরক্ষক মেহেদি হাসান শ্রাবণকে ঠেকাতে হলো দারুণ নৈপুণ্যে।

পরিস্থিতিটা বদলে গেল একটু পর। ম্যাচের বয়স তখন ৬৩ মিনিট। বক্সের বাইরে সুযোগ পেয়েছিলেন ইম্যানুয়েল সানডে। দুটো টাচে বলটা নিয়ে বেরিয়ে যান, চলে আসেন বক্সের একটু সামনে। বক্সের বাইরে থেকেই বাঁ পায়ে শট নিয়ে বসেন সানডে। বলটা শ্রাবণের বাঁ পাশ দিয়ে গিয়ে আছড়ে পড়ে জালে। ডান পাশ থেকে আসা বল, বাঁ পায়ের শট আর বলের জালে আছড়ে পড়া, পুরো দৃশ্যটা আর্জেন্টিনা মেক্সিকো ম্যাচে মেসির ওই গোলের কথা মনে করিয়ে দিচ্ছিল যেন।

সে এক গোল মোহামেডানকে একটু একটু করে নিয়ে যাচ্ছিল শিরোপার দিকে। বিষয়টা নিশ্চিতই হয়ে যেতে পারত আরও একটা গোলে। তার সুযোগও মোহামেডান পেয়েছিল। কিন্তু একের পর এক সুযোগ নষ্ট করে ম্যাচটা আর পকেটে পুরতে পারেনি কোচ আলফাজ আহমেদের দল।

তারই খেসারত দলটা দিল শেষ মুহূর্তে এসে। ম্যাচের বয়স যখন ৮৬ মিনিট, তখন। বক্সের বাইরে থেকে বসুন্ধরা মিডফিল্ডার মিগেল দামাসেনো বল নিয়ে ঢুকে পড়েন মোহামেডান বিপদসীমায়। একাধিক মোহামেডান ডিফেন্ডার এসে তাকে রুখতে চেয়েছেন বটে, কিন্তু শেষমেশ আর তাকে আটকানো হয়নি সাদা-কালোদের। তার ফারপোস্টে করা শট জড়ায় জালে। ম্যাচে ফেরে সমতা, খেলা গড়ায় যোগ করা অতিরিক্ত সময়ে।

সেখানে ময়মনসিংহের রফিক উদ্দিন ভূঁইয়া স্টেডিয়াম দেখে এক নাটক। অতিরিক্ত সময়ের প্রথমার্ধের শেষ মুহূর্তে বসুন্ধরার এক কর্নার থেকে বল হাতে জমাতে ব্যর্থ হন মোহামেডান গোলকিপার মোহাম্মদ সুজন। তার হাত ফসকে বল মাটিতে পড়ার সঙ্গে সঙ্গেই শট নেন জাহিদ হোসেন। ম্যাচের জয়সূচক গোলটি পেয়ে যায় বসুন্ধরা কিংস।

তবে এই গোলের বিল্ডআপে ফাউলের অভিযোগ তোলেন গোলরক্ষক সুজন। তাতে গলা মিলিয়ে তখনই মাঠ ছেড়ে যান মোহামেডানের ফুটবলাররাও। রেফারির সঙ্গে উত্তপ্ত বাক্যবিনিময়ও চলেছে বেশ করে। যে কারণে খেলা বন্ধ ছিল প্রায় মিনিট দশেক।

এরপর দলটা মাঠে ফিরেছে দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই। বেশ কিছু সুযোগ এসেছিল সামনে। তবে দলটা যত অ্যাড্রেনালিন ছিল, সব তো খরচ করে ফেলেছিল ওই কিছু আগের বিবাদেই! ফলে কাঙ্ক্ষিত সমতাসূচক গোলটা আর পায়নি মোহামেডান। শিরোপার উৎসবে মাতে বসুন্ধরা কিংস।

খেলার দুনিয়া | ফলো করুন :