আমরা ‘দুর্বল’ নই, বাংলাদেশকে হারিয়ে হারমিত
প্রথমবারের মতো ২০ দল নিয়ে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ আয়োজন করতে চলেছে আইসিসি। আসরের আয়োজক করা হয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ও ওয়েস্ট ইন্ডিজকে। আয়োজক হিসেবেই প্রথমবারের মতো টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ খেলার সুযোগ পেয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। দেশটির ক্রিকেট নিয়ে এমন প্রশ্ন থাকলেও তারা যে ততটাও দুর্বল নয়, হেলার পাত্র নয় সেটি বিশ্বমঞ্চে নামার আগেই জানান দিয়েছে দেশটির ক্রিকেটাররা। বিশ্বকাপের আগে ঘরের মাঠে প্রথমবারের মতো দলটি হারিয়ে দিয়েছে বাংলাদেশকে, যারা কিনা নবমবারের মতো টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ খেলার দ্বারপ্রান্তে। এমন অর্জনের পর ম্যাচসেরা হারমিত সিং আরও একবার জানালেন, তারা দুর্বল প্রতিপক্ষ নয়।
প্রেইরি ভিউতে তিন ম্যাচ টি-টোয়েন্টি সিরিজের প্রথম ম্যাচে শুরুতে বাংলাদেশকে ব্যাটিংয়ে পাঠিয়ে ১৫৩-তে আটকে রাখে যুক্তরাষ্ট্র। পরে লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ৩ বল ও ৫ উইকেট হাতে রেখে ম্যাচ জেতে দলটি। দলের হয়ে শেষ দিকে ১৩ বলে অপরাজিত ৩৩ রানের ইনিংস খেলে যুক্তরাষ্ট্রের জয়ের নায়ক হারমিত সিং। দুর্দান্ত জয়ে উচ্ছ্বাসিত তিনি। ম্যাচ শেষে জানিয়েছেন জয়ের রহস্য। সেই সঙ্গে দৃঢ় কণ্ঠে জানিয়ে দিয়েছেন, আমরা ওয়াকওভার নয় অর্থাৎ বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় কাউকে জিততে দেবে না তার দল।
ম্যাচসেরার পুরস্কার হাতে তুলে হারমিত সিং বলেন, ‘এটা আসলে অবিশ্বাস্য অনুভূতি। আপনি সবসময় এইরকম একটি বড় দলের বিপক্ষে ম্যাচ জয়ের সুযোগ পাবেন না। ছেলেরা যেভাবে অনুশীলন করছে, তাতে এই জয়টা সবার ব্যক্তিগত প্রচেষ্টার ফল। বাংলাদেশের বিপক্ষে খেলাটা আমাদের কাছে অনেক অর্থবহ ছিল। দেখানোর ছিল, আমরা কোনো দুর্বল প্রতিপক্ষ নই। আমি মনে করি আমাদের আরও ভালো করার সম্ভাবনা আছে। সামনে আমাদের অনেক ম্যাচ আছে- তাছাড়া এখন আমাদের হাতে ব্যাট।’
নিজেদের শক্তিমত্তা সম্পর্কে হারমিত বলেন, ‘দলের অনেক ক্রিকেটারই দুই থেকে চার ওভার বল করতে পারে, যেমন স্টিভেন টেলর করেছে। নীতীশ কুমার এবং মিলিন্দ কুমারও কয়েক ওভার বল করতে পারেন। আমাদের বেঞ্চ শক্তিও যথেষ্ট ভালো। দলের মধ্যে প্রতিযোগিতা আমাদের সাহায্য করছে। সবাই ভালো করতে চায়, আর সেটাই দলকে সাহায্য করছে।’
টি-টোয়েন্টি র্যাঙ্কিংয়ে বাংলাদেশের অবস্থান ৯ নম্বরে। অন্যদিকে বাংলাদেশের চেয়ে দশ ধাপ পেছনে থাকা যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান তালিকার ১৯ নম্বরে। স্বাভাবিকভাবেই তাই বাংলাদেশকে কঠিন প্রতিপক্ষ হিসেবেই নিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র। যা জানিয়ে হারমিত বলেন, ‘আমি খেলার আগে ছেলেদের বলেছিলাম যে কাগজে কলমে বাংলাদেশ একটি ভাল দল। কিন্তু আমরা যদি লড়াই না করেই হেরে যাই, তাহলে এটি একটি ভাল বার্তা দেবে না। আমরা এখানকার উইকেট জানি, কারণ এটি আমাদের মাঠ। আমরা এই মাঠের সম্পর্কে সবই জানি। আর তাছাড়া এটি টি-টোয়েন্টি ফরম্যাট। আমরা তাদের পাওয়ারপ্লেতে কোণঠাসা করে দিতে পারলেই খেলা আমাদের পক্ষে।’
ইনিংসের ১৭ তম ওভারে মুস্তাফিজুর রহমানের বিপক্ষে ১৭ রান তুলেছে যুক্তরাষ্ট্র। কদিন আগেই আইপিএল মাতিয়ে আসা মুস্তাফিজের বিপক্ষে এমন চড়াও হওয়ার পেছনের কারণটাও খোলাসা করেছেন হারমিত সিং। বলেন, ‘আমি শেষ চার ওভারে ৫০ রান তোলার ব্যাপারে প্রস্তুত ছিলাম। কারণ আমি অতিরিক্ত দায়িত্ব উপভোগ করি। আর এটাই আমার বিশেষত্ব যে, আমি চাপের মধ্যে বল করতে পারি এবং ব্যাট দিয়ে খেলা শেষ করতে পারি। ম্যাচের ওই সময় আমরা ধারণা ছিল, ফিজ বাতাসের বিরুদ্ধে বল করবে কিন্তু যখন আমি তাকে অন্য প্রান্ত থেকে বল করতে দেখলাম, বাতাসের পক্ষে, আমি তখনই ভেবেছিলাম আমাদের ২০ রান নেওয়ার সুযোগ আছে। আমার মনে হয় তারা আমাদের হালকাভাবে নিয়েছে; অথবা হয়তো বাতাসের বিরুদ্ধে বল করার মতো কোনো বোলার ছিল না তাদের।’