ফিরল ‘অঘটন’, ম্যাচ জিতল যুক্তরাষ্ট্র, সিরিজ হারল বাংলাদেশ
১৪৫ রানের লক্ষ্যটা ছিল সহজের কাতারেই। যা তাড়ায় ইনিংস অর্ধ শেষে ১০ ওভারে ২ উইকেটে ৭৬ রানও তুলে ফেলেছিল বাংলাদেশ। এতে শেষ ১০ ওভারে জয়ের জন্য দরকার ছিল স্রেফ ৬৯ রান। সেই ম্যাচেই কি-না শেষ পর্যন্ত ১৩৮ রানে অল-আউট নাজমুল হোসেন শান্তর দলটি। এতে যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে সিরিজের দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে ৬ রানের হারল সফরকারীরা।
এদিকে টানা দুই ম্যাচ জয়ে এক ম্যাচ হাতে রেখেই ২-০ ব্যবধানে সিরিজ জিতে নিল স্বাগতিকরা। আগের ম্যাচে বাংলাদেশের বিপক্ষে প্রথমবারের মতো ম্যাচ জয়ের পর দ্বিতীয় ম্যাচে প্রথমবারের সিরিজটাও জিতল যুক্তরাষ্ট্র।
হিউস্টনের প্রেইরি ভিউ ক্রিকেট কমপ্লেক্সে টসে জিতে আগে বোলিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন বাংলাদেশ অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত। সেখানে আগে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৬ উইকেটে ১৪৪ রানের লড়াকু সংগ্রহ পায় যুক্তরাষ্ট্র।
আগের ম্যাচে তিনটা চার মেরে শুরুটা ভালো পেয়েছিলেন সৌম্য সরকার। অবশ্য বড় করতে পেরেছিলেন না ইনিংসটি। ফিরেছিলেন ২০ রান করে। তবে এই ম্যাচে ফিরলেন প্রথম বলেই! এতে ব্যাটিং ব্যর্থতা ফিরিয়ে ইনিংসের প্রথম ওভারেই ধাক্কা খায় বাংলাদেশ। সেই চাপ সামলে অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্তকে নিয়ে ছন্দেই এগোতে থাকেন লিটন দাসের বদলে একাদশে ফেরা তানজিদ হাসান তামিম। তবে দলীয় ৩০ রানের মাথায় ফিরলেন তিনিও। ১৫ বলে ১৯ রান করেন এই বাঁহাতি ব্যাটার।
পরে তৃতীয় উইকেটে তাওহিদ হৃদয়কে নিয়ে ৪৮ রানের জুটি গড়েন শান্ত। রানের ফেরার ইনিংসটি স্বাভাবিকভাবেই আরও খানিকটা রাঙিয়ের রাখতে চেয়েছিলেন বাংলাদেশের এই অধিনায়ক। তবে ইনিংসে ১১তম ওভারে হৃদয়ের সঙ্গে ভুল বোঝাবুঝিতে রান আউটে কাটা পড়েন তিনি। সেখান থেকে দলীয় সংগ্রহ ১০৬ রানের পৌঁছাতেই সাজঘরে ফেরেন হৃদয় ও মাহমুদউল্লাহ। সাকিব-জাকের আলী কিছুটা আশা দেখালেও দু’জনেই ফেরেন পরপর দুই বলে। এতে ১৭ ওভার ১ বলে স্কোরবোর্ডে ১২৪ রান জমা না করতেই নেই ৭ উইকেট। এক বল বাদে ফেরেন তানজিম সাকিবও।
সেখান থেকে জয়ের দূরত্ব স্রেফ ২০ রানের হলেও হাতে উইকেট স্রেফ দুটি। এতে সিরিজ বাঁচানোর ম্যাচটিতেও ইঙ্গিত দিচ্ছিল অঘটনের। শেষ পর্যন্ত হলোও সেটিই। ১৯ ওভার ৩ বলে সবকটি উইকেট হারিয়ে ১৩৮ রানে থামে বাংলাদেশের ইনিংসে। ৬ রানে শুধু ম্যাচটিই নয় ২-০ ব্যবধানে সিরিজও হারল সফরকারীরা।
যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষে ৩ ওভার ৩ বলে ২৫ রান দিয়ে সর্বোচ্চ ৩ উইকেট নেন আলী খান এবং জেতেন ম্যাচসেরার খেতাবও।
এর আগে ব্যাট করতে নেমে দুই ওপেনার স্টিভেন টেইলর ও মোনাঙ্ক প্যাটেলের সাবলীল ব্যাটিংয়ে ভালো শুরু পায় স্বাগতিকরা। পাওয়ার প্লের ৬ ওভার শেষে বিনা উইকেটে স্কোরবোর্ডে ৪২ রান যোগ করে তারা। আগের ম্যাচে আত্মবিশ্বাসকে ফিরিয়ে ব্যাট হাতে বেশ ছন্দেই এগোচ্ছিল, তবে তাদের সপ্তম ওভারেই বড়সড় ধাক্কা দেয় সফরকারীরা। সপ্তম ওভারের চতুর্থ ও পঞ্চম বলে জোড়া উইকেট শিকার করেন লেগ স্পিনার রিশাদ হোসেন।
সেই চাপ সামলে তৃতীয় উইকেটে অ্যারন জোন্সকে নিয়ে ৬০ রানের গুরুত্বপূর্ণ গড়েন অধিনায়ক মোনাঙ্ক। সেখানে প্রায় দশ ওভার পর দলকে ব্রেক থ্রু এনে দেন মুস্তাফিজুর রহমান। স্বাগতিকদের স্কোরবোর্ডে তখন ১৬ ওভার ১ বলে ৩ উইকেটে ১০৪ রান। সেখান থেকে শেষ চার ওভারে আরও তিন উইকেট হারায় স্বাগতিকরা। এবং শেষ পর্যন্ত পায় ১৪৪ রানের লড়াকু পুঁজি। বাংলাদেশের পক্ষে দুটি করে উইকেট নেন রিশাদ, মুস্তাফিজ ও শরিফুল।
আগামী ২৫ মে একই মাঠে অনুষ্ঠিত হবে সিরিজের তৃতীয় ও শেষ ম্যাচটি। সিরিজে ইতিমধ্যেই সব পাওয়া যুক্তরাষ্ট্র এবার হোয়াইটওয়াশের আশাটাও করতেই পারেন। এদিকে শান্ত-হৃদয়দের জন্য ম্যাচটি কেবলই মান বাঁচানোর।