প্রথম দুই ম্যাচ হারের কারণ জানালেন তামিম

প্রথম দুই ম্যাচ হারের কারণ জানালেন তামিম

সিরিজটা বাংলাদেশ খুইয়ে বসেছিল প্রথম দুই ম্যাচ শেষেই। বাংলাদেশ শেষ ম্যাচে অবশ্য যুক্তরাষ্ট্রকে ১০ উইকেটে উড়িয়ে হোয়াইটওয়াশ এড়িয়েছে। দারুণ এক ফিফটিতে তাতে বড় অবদানই রেখেছেন তানজিদ হাসান তামিম। 

ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে এসে তামিম কথা বললেন এই ম্যাচ নিয়ে। তবে তার চেয়ে প্রথম দুই ম্যাচ, পুরো সিরিজ আর আসছে বিশ্বকাপ নিয়েই তাকে কথা বলতে হলো বেশি। তার সংবাদ সম্মেলনের চুম্বকাংশ পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হলো–

প্রথম দুই ম্যাচে হারের পর শেষ ম্যাচে এমন দাপুটে জয়! প্রথম দুই ম্যাচে কী হয়েছিল? টানা খেলে যাওয়ার ক্লান্তি? ভ্রমণক্লান্তি? নাকি এখানে মানিয়ে নিতে না পারার কারণে এমন হয়েছে?
না এমন কিছু না। আপনি যেটা বললেন ভ্রমণক্লান্তি বা টানা খেলা, এমন না। এখানে আমরা ভালোভাবেই মানিয়ে নিয়েছি, অনুশীলনের সুবিধাও ভালো পেয়েছি, ভালোভাবে কাজেও লাগিয়েছি, ভালোভাবে প্রস্তুতিও নিয়েছি।

আসলে প্রথম দুই ম্যাচে পরিকল্পনাগুলো বাস্তবায়ন করতে পারিনি। আজকের ম্যাচে যা হয়েছে, আমাদের পরিকল্পনা যা ছিল, প্রস্তুতি যেমন ছিল, প্রত্যেক জায়গায় সে পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে পেরেছি। আগের দুই ম্যাচে এমনটা না হওয়ার কারণে ম্যাচ হেরেছি। 

আগের দুই ম্যাচেও কিন্তু ম্যাচ হাতে ছিল। আপনার কী মনে হয়, আমরা মোমেন্টামটা ঘোরাতে পারছি না যে গ্রিপে থাকা ম্যাচ ছুটে গেল?
আগের দুই ম্যাচে আমরা পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে পারিনি। প্রথম ম্যাচে ৪ ওভারে ৫৪ রান লাগত, আমরা বোলাররা ফেইল করেছি, যে বল করা দরকার ছিল, তা করতে পারিনি। দ্বিতীয় ম্যাচে কম বলে কম রান দরকার ছিল, আমরা একইভাবে উইকেট হারিয়েছি। কাউকে আমি দোষ দিব না, সব মিলিয়ে আমাদের দলের যে পরিকল্পনা ছিল, আমরা কেউই সেটা বাস্তবায়ন করতে পারিনি। 

এই তিন ম্যাচ থেকে প্রাপ্তি কী?
আসলে আমার দিক থেকে বললে আমরা পুরোপুরি প্রস্তুতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছি, সামনে একটা বড় টুর্নামেন্ট, বিশ্বকাপ। আমার মনে হয় হারা জেতা সবকিছুকেই প্রস্তুতির ভেতরে রাখা ভালো। ইতিবাচক-নেতিবাচক দুটো বিষয়ই হয়েছে আমাদের। যা আমাদের পরবর্তী পর্যায়ে কাজে লাগবে। 

প্রথম দুই ম্যাচ হারের পর আপনাদের মধ্যে আলোচনাটা কী হচ্ছিল?
সবারই মন খারাপ ছিল। যদি হারি, সবারই খারাপ লাগে। প্রথম দুই ম্যাচ হারের পরে সবাই মিলে আলোচনা করেছি, আমরা কেন পরিকল্পনাটা বাস্তবায়ন করতে পারছি না। এমন পরিস্থিতিতে কীভাবে মাথা ঠাণ্ডা রাখা যায়, তার চেষ্টা করেছি। আজকেই চেষ্টা করেছে সবাই। এসব পরিস্থিতিতে কীভাবে ঠাণ্ডা থেকে পরিকল্পনাটা বাস্তবায়ন করতে পারি, আল্লাহর রহমতে সবাই সেটা করতে পেরেছে। 

বিশ্বকাপে বেটার উইকেট থাকবে, আপনার মনে হয় কি না সেরা প্রস্তুতিটা নিয়ে দল বিশ্বকাপে যাচ্ছে? এর চেয়ে বেটার ক্রিকেট খেলতে পারবে?
সবারই চেষ্টা থাকে দিনকেদিন উন্নতি করার। এখান থেকে আমরা যেটা শিখেছি… আমরা জানি না ডালাসে উইকেটটা কেমন হবে, সেখানকার কন্ডিশন কেমন আছে। আমাদের দুটো অনুশীলন সেশন আছে, আমরা চেষ্টা করব সেখানে নিজেদের মানিয়ে নেওয়ার।

ওপেনিং জুটি স্টেবল ছিল না অনেক দিন ধরে, আপনি এসে তিনটি ফিফটি করলেন… আপনার কী মনে হচ্ছে? পরিকল্পনাটা বাস্তবায়ন করতে পারছেন?
আমার সবসময় চেষ্টা থাকে দলের জন্য ভালো শুরু এনে দেওয়া। দলের জন্য সেরা অবদানটাই রাখা। প্রত্যেক ম্যাচে এটাই চেষ্টা করি। 

বিশ্বকাপকে সামনে রেখে কীভাবে নিজের মানসিকতাটাকে গড়েছেন?
আমি কোনো সময়ই অনেক লম্বা সময় ধরে চিন্তা করি না। সবসময় বর্তমানে থাকার চেষ্টা করি। ম্যাচ বাই ম্যাচ এগোনোর চেষ্টা করি। আমার মনোযোগ সামনের ম্যাচেই থাকবে। 

ওয়ানডে বিশ্বকাপের আগে, অনেকটা আচমকাই ওয়ানডে বিশ্বকাপে চলে গেলেন। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ঠিক আগে দলে এলেন, তিনটা ফিফটি করে বিশ্বকাপে যাচ্ছেন। সে বিশ্বকাপটা কেমন চাপের ছিল, এবারেরটা কেমন? আগেরবার কেমন উপভোগ করেছেন, এবার দল ভালো করছে না, আপনার ব্যক্তিগত পরিস্থিতিটা কী?
আগের বিশ্বকাপে উপভোগ করার মতো কিছু হয়নি। ওখানে ভালো খারাপ দুটোই ছিল। আমি আরও ভালো কিছু করতে পারতাম। দেশকে আরও ভালো কিছু দিতে পারতাম, সেটা করতে পারিনি। আমি একটা বিষয় বিশ্বাস করি, যে জিনিসটা আমি আরও পরে গিয়ে শিখতে পারতাম, সেটা ২০২৩ বিশ্বকাপে খেলে অনেক আগেই শিখতে পেরেছি। আমি মনে করি ভবিষ্যতে বিষয়টা অনেক কাজে লাগবে। 

যুক্তরাষ্ট্র তাদের সেরা ৪ খেলোয়াড়কে বিশ্রাম দিয়েছিল, ২ জন আবার আগের দুই ম্যাচের সেরা খেলোয়াড়। এটা মাথায় রাখলে এই ম্যাচে ১০ উইকেটে জেতাটা কেমন গুরুত্বপূর্ণ ছিল আপনাদের কাছে?
প্রত্যেকটা জয়ই প্রত্যেকের জন্য বেশ গুরুত্বপূর্ণ। শেষ ম্যাচে আমরা তা করেছি। যুক্তরাষ্ট্র বাহবা পাওয়ার যোগ্য। তারা বেশ ভালো ক্রিকেট খেলেছে, সিরিজ জিতেছে। আমরা শেষ ম্যাচটা ভালোভাবে জিতেছি, এটাই গুরুত্বপূর্ণ।  

মুস্তাফিজের বোলিং নিয়ে কী বলবেন?
সে বিশ্বমানের বোলার। সে আইপিএলে খেলেছে, অন্যান্য ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগে খেলেছে। সে আমাদের দলের অন্যতম অভিজ্ঞ খেলোয়াড়। আমি তার জন্য বেশ খুশি। সে ম্যাচসেরা ও সিরিজসেরার পুরস্কার পেয়েছে। সে একজন উঁচু মানের বোলার। 
সে বেশ ভালো বল করেছে। সে কন্ডিশন, উইকেটটাকে বেশ ভালোভাবে পড়তে পেরেছে। আমরা সবাই জানি আমাদের দেশের কাটার-মাস্টার সে। এ ধরনের উইকেটে সে কাটার দিয়ে থাকে। আজকেও সে কাজটা ভালোভাবে করেছে। 

সিরিজ শুরুর আগে যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্কে যে ধারণাটা ছিল, সিরিজ শেষে কি তা বদলে গেছে?
আমরা তাদের খেলোয়াড়দের ভিডিও দেখেছি। কারণ এর আগে তাদের বিপক্ষে আমরা খেলিনি। তো এখানে সিরিজটা বেশ ভালো ছিল। এখানে ওরা বেশ ভালো খেলেছে। চেনা কন্ডিশনে তারা তাদের শক্তির ওপর নির্ভর করে খেলেছে। তারা অনেক ভালো করেছে।

সম্পর্কিত খবর