‘২৫ বছরে ২৫ কদমও এগোয়নি বাংলাদেশের ক্রিকেট’
এই অভিযোগ বাংলাদেশের সাবেক কোচ স্টুয়ার্ট ল’য়ের। ক’দিন আগেই যার কোচিংয়ে বাংলাদেশকে টি-টোয়েন্টি সিরিজ হারিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। ক্রিকেটে আনকোরা একটা দলকে নিয়ে বাংলাদেশকে সিরিজ হারানোর সাবেক এই কোচের অনুভূতি, ‘গত ২৫ বছরে বাংলাদেশ মোটেই এগোয়নি।’
কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার সঙ্গে আলাপে এমন মন্তব্য করেছেন ২০১১-১২ সালের দিকে বাংলাদেশের হেড কোচের দায়িত্বে থাকা ল। তার এই চাঁছাছোলা মন্তব্য নিয়ে দেশের ক্রিকেটঅঙ্গনের কেউ কেউ সরব হতে পারেন, তবে আসলে কি ভুল বলেছেন ল?
এই প্রশ্নের উত্তর পরিষ্কার হয়ে যায় গত ৮ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে বাংলাদেশের পারফরম্যান্সের দিকে তাকালে। এখন পর্যন্ত এই বৈশ্বিক আসরের নকআউট পর্বে ওঠা হয়নি লাল-সবুজের প্রতিনিধিদের। টুর্নামেন্টের সবকটি আসরে খেলা একটা দলের কাছে যতটা পরিপক্বতা আশা করবেন আপনি, বাংলাদেশ আপনাকে ততটাই হতাশ করবে।
একের পর এক ব্যর্থতার পরও অজুহাতের থালা সাজিয়ে বসেন অধিনায়ক-কোচেরা। একটা বিশ্বকাপে ব্যর্থতার পরপরই পরের আসরকে পাখির চোখ বানানোর ঘোষণা দেন এই দেশের বোর্ড কর্তা। কিন্তু সে লক্ষ্যে কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেয়া হয় কি? উত্তর এক শব্দে দেয়া যায়, না। পদক্ষেপ বলতে বিশ্বকাপের বছর ‘ফেইক কনফিডেন্স’ পেতে দেশের মাটিতে অপেক্ষাকৃত দুর্বল দলের বিপক্ষে খেলা।
এভাবে যে একটা দেশের ক্রিকেট এগোতে পারে না সে কথাই উঠে এসেছে ল’র কথায়, ‘তাদের হয়ত এখন বসে ভাবতে হবে যে আমরা যা করে এসেছি, তা কাজে দেয়নি। আমরা মোটেই এগোইনি। হয়ত আমাদের এখন একটু অন্যভাবে কাজটা করতে হবে।’
১৯৯৬ বিশ্বকাপে রানার্স-আপ হওয়া অস্ট্রেলিয়া দলের সদস্য ল শুধু অভিযোগ করেই থেমে যাননি। বাংলাদেশের ক্রিকেটে অগ্রগতির জন্য কী করতে হবে সেটাও বাতলে দিয়েছেন, ‘বাংলাদেশ যদি তরুণ ক্রিকেটের ঠিকঠাকভাবে পরিচর্যা করতে পারে, মানে ১২ থেকে ১৬ বছর বয়সী ক্রিকেটারদের পুষ্টি এবং ফিটনেসের দিকে মনোযোগ দেয়-তাহলে অসাধারণ এক বাংলাদেশ ক্রিকেটকে দেখতে পাবে বিশ্ব।’
সম্প্রতি অনূর্ধ্ব-১৯ দলের ক্রিকেটারদের নিয়ে গড়া হাইপারফরম্যান্স দলকে নিয়ে এমন একটি ক্যাম্প শুরু করেছে বিসিবি। দীর্ঘমেয়াদী এই ক্যাম্পে খেলোয়াড়দের সবদিক থেকে প্রস্তুত করে তোলাই লক্ষ্য। তবে ল’র পরামর্শ অনুযায়ী, এই ধরনের দীর্ঘমেয়াদী ক্যাম্প আরো আগে থেকেই শুরু করতে হবে। তবেই বাংলাদেশ ক্রিকেটের চেহারা বদলে যাবে।