মুম্বাইয়ের গরমের চেয়ে বেশি ‘গরম’ যে দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যাটিং!

মুম্বাইয়ের গরমের চেয়ে বেশি ‘গরম’ যে দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যাটিং!

মানলাম আপনি কুইন্টন ডি কককে শুরুতে আটকে দিলেন। তাতে কি, এডউইন মার্করাম আছেন না।
আচ্ছা মানলাম, মার্করামকেও আউট করলেন শুরুতে। তাতে কি, রিজা হেনড্রিকস আছেন না।
ধরে নিলাম এই তিনজনকেই শুরুতে ফেরানো গেল। তাতে কি, ভ্যান ডার ডুসেন আছেন না।
খুব ভালো বোলিং করে তাকেও শুরুতে ফিরিয়ে দেওয়া গেল। তাকে কি, পরের ব্যাটম্যানদের নামগুলো শুনুন। হেনরিক ক্লাসেন, ডেভিড মিলার, মার্কো ইয়ানসেন। এক ম্যাচে তো একসঙ্গে সাত ব্যাটসম্যানের সবাই কি খারাপ করবেন?

২৪ অক্টোবর দক্ষিণ আফ্রিকাকে তিন’শ রানের আগে থামাতে হলে বাংলাদেশকে সেই প্রার্থনাই করতে হবে।

পুরো বিশ্বকাপে দক্ষিণ আফ্রিকা এমন বিস্ফোরক ব্যাটিং করছে যে তাতে সামনে থাকা সবধরনের বোলিং উড়ে যাচ্ছে। বিশ্বকাপে সবমিলিয়ে ২৩ অক্টোবর পর্যন্ত সেঞ্চুরি হয়েছে ১৭টি। যার মধ্যে দক্ষিণ আফ্রিকা একাই করেছে পাঁচটি সেঞ্চুরি। এর মধ্যে কুইন্টন ডি ককের আবার টানা দুই ম্যাচে দুটি সেঞ্চুরি রয়েছে। পরের দুই ম্যাচে তার ব্যাটে রান আসেনি। আজ সম্ভবত সেই দুঃখ কাটিয়ে উঠার সুযোগ খুঁজছেন দক্ষিণ আফ্রিকার বাঁহাতি এই ওপেনার। পুরো বিশ্বকাপে দক্ষিণ আফ্রিকা যে ব্যাটিংয়ের নমুনা দেখাচ্ছে তাতে ইংল্যান্ডের বাজবল ক্রিকেট এখন তাদের নামের পাশে অনায়াসেই বসিয়ে দেওয়া যায়।

ঠিক যাকে বলে নিষ্ঠুর ব্যাটিং। তারই প্রদর্শন করছে দক্ষিণ আফ্রিকা। বল হচ্ছে পেটানোর বস্তু; এই যুক্তিকে প্রতিষ্ঠিত করছে তারা বিশ্বকাপের লড়াইয়ে। ৪২৮। ৩১১। ৩৯৯। পেছনের তিন ম্যাচে দক্ষিণ আফ্রিকার স্কোরবোর্ডের স্বাস্থ্য এটি। একেবারে ফুলে ফেঁপে একাকার। এর মধ্যে সর্বশেষ ৩৯৯ রানের ইনিংসটা আবার এই ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে। যে মাঠে ২৪ অক্টোবর দক্ষিণ আফ্রিকাকে পাচ্ছে বাংলাদেশ।

কোন বাংলাদেশ?

যে বাংলাদেশ এবারের বিশ্বকাপে সবচেয়ে ম্রিয়মাণ মেজাজের ক্রিকেট খেলছে। ব্যাটিং-বোলিং সবকিছুতেই টিমেতালের ক্রিকেট। যে বিশ্বকাপে তিনশ’র নিচের কোনো সংগ্রহকে মামুলি মানা হচ্ছে, সেখানে এখন পর্যন্ত বাংলাদেশের সর্বোচ্চ রানের যোগাড় মাত্র ২৫৬ রান। ৩৪৫ রান করেও যে উইকেটে ম্যাচ বাঁচানো যাচ্ছে না, সেই সহজ ব্যাটিং উপযোগী উইকেটে বাংলাদেশের ব্যাটিংকে ভীষণ মান্ধাতা আমলের মনে হচ্ছে।

ইনিংস বড় করার সুযোগ যে পায়নি বাংলাদেশ, তাও কিন্তু নয়। তবে সুযোগ পেলে সেটাকে তো কাজে লাগাতে হবে। সেই দক্ষতা দেখাতে আপাতত ব্যর্থ বাংলাদেশ। ওয়াংখেড়েতে সেই সঙ্কট কাটিয়ে উঠবে দল, এমন আশা নিয়েই মঙ্গলবার (২৪ অক্টোবর) এখানে টস করবেন সাকিব আল হাসান। আর সেই সঙ্গে প্রার্থনা করছেন, যেন টসটা ভাগ্যটা তার পক্ষে যায়। মুম্বাইয়ের প্রচণ্ড গরমে, সহজ ব্যাটিং উইকেটে যে কোনো দল আগে ব্যাটিংটা করে রাখতে চাইবে।

চলতি বিশ্বকাপে জয়ী তিন ম্যাচে দক্ষিণ আফ্রিকা যে ‘খুনে’ মেজাজের ব্যাটিং দেখিয়েছে তাতে ওয়াংখেড়ের এই লড়াইয়ে বাংলাদেশের পক্ষে বড় কোনো সম্ভাবনা দেখছেন না ক্রিকেট বোদ্ধারা। টসে জিতে বাংলাদেশ আগে ব্যাটিং করলেই যদি কোনো সম্ভাবনার তৈরি হয়। সাকিব আল হাসান ম্যাচের আগের দিন তো বলেই দিয়েছেন, দোয়া করবেন যেন টসে জিতি!
আসুন প্রার্থনায় বসি।

সম্পর্কিত খবর