বিশাল হার আর দুর্ভাবনা নিয়ে প্রস্তুতি শেষ বাংলাদেশের

বিশাল হার আর দুর্ভাবনা নিয়ে প্রস্তুতি শেষ বাংলাদেশের

প্রস্তুতি ম্যাচে বাংলাদেশের লক্ষ্য ছিল আত্মবিশ্বাসটা বাড়িয়ে নেওয়ার। ভারতের বিপক্ষে ৬২ রানের বিশাল হার। হার্দিক পান্ডিয়াদের ১৮২ রানের জবাবে বাংলাদেশ তুলতে পারেনি ১৫০ রানও। যার ফলে ৬২ রানের বিশাল ব্যবধানে হেরেই প্রস্তুতি পর্বটা শেষ করলেন নাজমুল হোসেন শান্তরা।

প্রস্তুতি ম্যাচ থেকে একগাদা দুর্ভাবনা নিয়ে মূল বিশ্বকাপে যাচ্ছে বাংলাদেশ। বোলিংটা আগে আনা যাক। শুরুটা ভালো হলো, শরিফুল ইসলাম শেষ কিছু দিন ধরেই বাংলাদেশকে ভালো শুরু এনে দিচ্ছিলেন, আজও দিলেন সাঞ্জু স্যামসনকে ফিরিয়ে।

এরপর থেকে শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশ পরীক্ষানিরীক্ষা করেছে একগাদা। যেমন নিজেদের শক্তির জায়গা পেসারদের ব্যবহার না করা, মুস্তাফিজুর রহমান আজ ম্যাচটাই খেলতে নামেননি। ম্যাচ আপ তত্ত্ব সীমানার বাইরে রেখে ডানহাতির বিরুদ্ধে ডানহাতি স্পিনার, বাঁহাতিদের বিপক্ষে সাকিব-তানভিরদের ব্যবহারসহ অনেক কিছু। সেসব কমবেশ কাজেও দিচ্ছিল।

পুরো ম্যাচে বাংলাদেশ তিনটে ক্যাচ ফেলেছে। যার খেসারতটা দিয়েছে শেষ পর্যন্ত। ক্যাচিংয়ের সমস্যাটা দুর্ভাবনার তালিকায় প্রথম যোগ হলো। 

সাকিব আল হাসান তার দ্বিতীয় ওভার থেকেই ছিলেন খরুচে, শেষ পর্যন্ত ৪ ওভারে তিনি দিয়েছেন ৪৭ রান। দলের অন্যতম অভিজ্ঞ বোলারের এমন দশা নিশ্চয়ই কোনো অধিনায়কই দেখতে চাইবেন না!

বোলিংয়ের শেষ ওভারে শেষ দুর্ভাবনাটা এল। হার্দিক পান্ডিয়ার শট আটকাতে গিয়ে শরিফুল ব্যথা পেলেন হাতে। শেষ বলটা করতে পারলেন না। চোটটা বড় কিছু হয়ে গেলে বাংলাদেশের বিশ্বকাপে ভালো করার ক্ষীণ স্বপ্নটাও খাবে বড় এক ধাক্কা। 

এতক্ষণ যেসব দুর্ভাবনার কথা পড়লেন, তা কোনো ভাবেই দলের ব্যাটিং নিয়ে দুর্ভাবনাকে ছাপিয়ে যেতে পারবে না। ম্যাচটায় বাংলাদেশ নেমেছিল টপ অর্ডারের ফর্মহীনতাকে মাথায় করে। আজও সেটা সিন্দাবাদের ভূতের মতো দলকে তাড়া করে ফিরল। শুরুতে সৌম্য সরকার আরশদীপ সিংয়ের শিকার হলেন, এরপর লিটন দাসও। একটু পর নাজমুল হোসেন শান্তও যখন মোহাম্মদ সিরাজের শিকার বনে সাজঘরমুখো, তখন দলের রান মোটে ১০।

দলের লক্ষ্য ছিল ১৮৩। সেটা তাড়া করার ন্যূনতম ইন্টেন্টটাও আর দেখায়নি বাংলাদেশ। এক পর্যায়ে তিন অঙ্কে পৌঁছানো নিয়েও ছিল শঙ্কা। সেটা ৫৯ বলে ৭০ রানের জুটিতে সেটা দূর করেছেন সাকিব আল হাসান আর মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। বোলিংয়ের মতো ব্যাটিংয়েও আজ বেশ নিষ্প্রভ ছিলেন সাকিব। ৩৫ বল খেলে করেছেন ২৮ রান মোটে। 

সব মিলিয়ে দুর্ভাবনার তালিকাটা লম্বা। তাই বলে এই ম্যাচে ভালো কিছু একেবারেই হয়নি, তা কিন্তু নয়। বোলিংয়ে আট বোলারের ব্যবহার করেছে বাংলাদেশ। তার মধ্যে আলাদা করে বলতে হবে শেখ মেহেদী হাসান আর মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের নাম। শেখ মেহেদি বুদ্ধিদীপ্ত বোলিংয়ে ২২ রান দিয়েছেন ৪ ওভারে, তুলে নিয়েছেন এক উইকেট। খণ্ডকালীন স্পিনার থেকে কালেভদ্রের বোলার তকমা গায়ে সাঁটিয়ে নেওয়া রিয়াদও আজ তুলে নিয়েছেন একটা উইকেট। এরপর ব্যাটিংয়ে নেমে খেলেছেন ২৮ বলে ৪০ রানের ইনিংস। তাকে শেষমেশ আউট করতে পারেনি ভারতের কোনো বোলার। মাহমুদউল্লাহ উঠে গেছেন অন্যদের সুযোগ করে দিতে। আজকের ম্যাচের ইতিবাচক সব দিক এসবই। তবে তার আগে দুর্ভাবনার উদ্রেক করা নেতিবাচক সব বিষয়ের ফিরিস্তি সেসব ইতিবাচকতার সুখানুভূতি গায়ে মাখতে দিচ্ছে না আদৌ। 

বিশ্বকাপ শুরু সকাল থেকেই। তবে বাংলাদেশের বিশ্বকাপ শুরু হবে পরের শনিবার। তার আগেই নিশ্চয়ই এসব দুর্ভাবনার ফয়সালা করতে চাইবেন অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত।

সম্পর্কিত খবর