জোন্স-গাউসের কীর্তিতে যুক্তরাষ্ট্রের ঐতিহাসিক জয়
গ্র্যান্ড প্রেইরি স্টেডিয়ামটায় এই এক সপ্তাহ আগেই ইতিহাস গড়েছিল যুক্তরাষ্ট্র। প্রথম বারের মতো সিরিজ হারিয়েছিল কোনো পূর্ণ সদস্যকে। সে মাঠে এক সপ্তাহ পর আরও এক ইতিহাস গড়ে ফেলল যুক্তরাষ্ট্র। একের পর এক রেকর্ড গড়ে কানাডাকে হারিয়ে দিল নিজেদের প্রথম বিশ্বকাপ ম্যাচেই। ১৯৪ রান তাড়া করে জিতল ৭ উইকেট হাতে রেখে, তাও আবার ১৪ বল ব্যবহার না করেই। তাতে আমেরিকানদের বিশ্বকাপ যাত্রার শুরুটা হলো স্বপ্নের মতোই।
অথচ যুক্তরাষ্ট্রের ব্যাটিংয়ের শুরুটা বলছিল বড় রান তাড়া করার চাপে বুঝি নুইয়ে পড়ল তারা। প্রথম ৮ ওভারে তুলতে পারল মোটে ৪৮ রান। তার মধ্যে আবার দুই উইকেট নেই। ৭২ বলে তখন তাদের চাই আরও ১৪৭ রান। ওভারপ্রতি ১২রও বেশি রান প্রয়োজন ছিল তাদের।
পরের গল্পটা আন্দ্রিস গাউস আর অ্যারন জোন্সের কাউন্টার অ্যাটাকের। ৭২ বলে ১৪৭ রানের সমীকরণটা যে ৫৮ বলেই মিলিয়ে ফেলল দলটা, তাতে পুরো কৃতিত্বটা তাদের। তৃতীয় উইকেটে দুজন মিলে ৫৮ বলে যোগ করলেন ১৩১ রান। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে তৃতীয় উইকেট জুটিতে যা দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রানের জুটি রেকর্ড। আরেকটা জায়গায় অনন্য এই জুটিটা। ওভারপ্রতি এই জুটি রান তুলেছে ১৪.২৯ করে। বিশ্বকাপে সেঞ্চুরি জুটিতে এত দ্রুত রান তুলতে পারেনি আর কোনো জুটিই।
গাউস বিদায় নিলেন শেষের খুব কাছে এসে। ৪৬ বলে ৬৫ রানের ইনিংস খেলে। তবে জোন্স ছিলেন, তিনি জোড়া ছক্কায় শেষ করে তবেই ফিরেছেন সাজঘরে। ৪০ বলে ৯৪ রানের অবিশ্বাস্য এক ইনিংস খেলেছেন পথে। ততক্ষণে নিজেদের ইতিহাসে সর্বোচ্চ রান তাড়া করে জেতার রেকর্ড, টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে সহযোগী সদস্যদের সর্বোচ্চ রান তাড়া করে জেতার রেকর্ডটাও নিজেদের করে ফেলেছে যুক্তরাষ্ট্র।
যুক্তরাষ্ট্রের ব্যাটিংয়ের পুরো গল্পটা ছিল ইন্টেন্টের। তার আগে কানাডাও ব্যাট ধরেছিল ওই মন্ত্র জপেই। টস হেরে ব্যাট করতে নেমে নবনীত ঢালিওয়ালের ৪৪ বলে ৬১, এরপর নিকলাস কার্টনের ৩১ বলে ফিফটি আর শেষ দিকে শ্রেয়াস মভার ২০০ স্ট্রাইক রেটে করা ৩২ রানের ইনিংস তাদের পাইয়ে দেয় ১৯৪ রানের পুঁজি। তাতে একটা রেকর্ডও গড়া হয়ে গিয়েছিল তাদের। বিশ্বকাপে সহযোগী সদস্যদের মধ্যে সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড। তবে জোন্স-গাউসের তোপের মুখে সে রেকর্ডটা দুই ঘণ্টাও টিকল না আর। আর অনেক রেকর্ডের মতো এই রেকর্ডটাও বাগিয়ে নিয়ে পকেটে পুরেছে দুটো মূল্যবান পয়েন্ট।