ভারত-পাকিস্তানের গ্রুপ জমিয়ে দিল যুক্তরাষ্ট্র
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে গ্রুপ ‘এ’র দুই জায়ান্ট ভারত এবং পাকিস্তান হয়ত কিছুটা স্বস্তিতে ছিল। গ্রুপের অন্য তিন প্রতিপক্ষের নাম যে যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা এবং আয়ারল্যান্ড। শক্তিমত্তায় দক্ষিণ এশিয়ার দুই বৈরি প্রতিবেশির তুলনায় অনেকটা পিছিয়ে বাকি তিন দল। কিন্তু টুর্নামেন্টের ঠিক আগে ‘জায়ান্ট কিলার’ হিসেবে আবির্ভূত হওয়া যুক্তরাষ্ট্র এখন গ্রুপের সমীকরণ জমিয়ে দেয়ার ইঙ্গিত দিচ্ছে।
সম্প্রতি কানাডাকে ৪-০ ব্যবধানে টি-টোয়েন্টি সিরিজ হারানোর পর বিশ্বকাপের উদ্বোধনী ম্যাচেও প্রতিবেশীদের হারের স্বাদ দিয়েছে তারা। এর মধ্য সবচেয়ে বড় চমকটা দিয়েছে বাংলাদেশকে ২-১ ব্যবধানে সিরিজ হারিয়ে। বিশ্বকাপের আগে অপেক্ষাকৃত ‘দুর্বল’ প্রতিপক্ষ জিম্বাবুয়ে এবং যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে সিরিজ খেলে নিজেদের আত্মবিশ্বাস বাড়িয়ে নিতে চেয়েছিল বাংলাদেশ। জিম্বাবুয়েকে হেসেখেলে সিরিজ হারানো গেলেও যুক্তরাষ্ট্রে গিয়ে থমকে যেতে হয়েছে।
তিন ম্যাচ সিরিজের প্রথম ম্যাচে বাংলাদেশকে পাঁচ উইকেটে হারিয়ে চমক দেয় যুক্তরাষ্ট্র। একটা দল টেস্টখেলুড়ে, অন্য দলটি একেবারেই আনাড়ি। তবু মাঠের ক্রিকেটে কী দারুণ প্রতাপ! ক্রিকেটীয় সক্ষমতা দিয়ে যেভাবে দলটি বাংলাদেশকে মাত দিয়েছে, তাতে তাদের জয়টিকে মোটেই ‘অঘটন’ বলা যায় না। বরং নিজেদের জাত চিনিয়েই জয় ছিনিয়ে নিয়েছে তারা।
এরপরও প্রথম ম্যাচটিকে যদি আপনার ‘ফ্লুক’ মনে হয়ে থাকে, তাহলে দ্বিতীয় ম্যাচের ফলের দিকে তাকান। টানটান উত্তেজনাময় সে ম্যাচে স্নায়ুচাপ সামলে ৬ রানের জয় পায় তারা।
প্রথমবার টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের মঞ্চে খেলার সুযোগ। সামনে চেনা প্রতিপক্ষ কানাডা হলেও ১৯৫ রানের লক্ষ্য দেখে ভড়কে গেলে তাদের খুব একটা দোষ দেওয়া যেত না। কিন্তু এই যুক্তরাষ্ট্র তো অন্য ধাতুতে গড়া! অ্যারন জোন্সের বিধ্বংসী ব্যাটিংয়ে সে লক্ষ্য ৭ উইকেট হাতে রেখেই টপকে যায় তারা।
চেনা আঙিনায় জয় দিয়ে বিশ্বকাপ শুরু করে যুক্তরাষ্ট্র এখন আত্মবিশ্বাসে টইটম্বুর। তাদের পরের ম্যাচ পাকিস্তানের বিপক্ষে। আপাতদৃষ্টিতে ম্যাচটি সহজ হলেও এখন নিশ্চয়ই পাকিস্তানকেও বাড়তি মনোযোগ দিতে হবে। উড়তে থাকা যুক্তরাষ্ট্রকে থামাতে যথার্থ রণকৌশল প্রয়োগ করতে হবে। যদি যুক্তরাষ্ট্র কোনোভাবে পাকিস্তানকে চমকে দিতে পারে, তাহলে গ্রুপ ‘এ’র হিসাব-নিকাশ পাল্টে যাবে।
তবে টি-টোয়েন্টিতে ধুঁকতে থাকা বাংলাদেশ বা চেনা প্রতিপক্ষ কানাডাকে হারিয়ে আত্মবিশ্বাস কুড়ালেও মোটেও আত্মতুষ্টিতে ভোগার সুযোগ নেই। কারণ গ্রুপে যুক্তরাষ্ট্রের পরের তিন ম্যাচের তিনটিই টেস্ট খেলুড়ে দেশের বিপক্ষে। তার মধ্যে দুটি আবার আসরের অন্যতম হট ফেবারিট।
কানাডাকে হারিয়ে গ্রুপের সমীকরণ জমিয়ে দেয়ার ইঙ্গিত তো দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এবার ভয়ডরহীন ক্রিকেটে সে ধারা অব্যাহত রাখার চ্যালেঞ্জ স্টুয়ার্ট ল’র শিষ্যদের।