‘জলে’ গেল স্কটল্যান্ডের চেষ্টা
ম্যাচটা কী হতে পারত তা দেখে নেই চলুন। ৫ ওভারে ৬৬ রান লক্ষ্য পড়তে পারত ইংল্যান্ডের। যদিও টি-টোয়েন্টিতে ‘ছোট দল’ বলে কিছু নেই; তবু স্কটল্যান্ডকে আন্ডারডগ ধরলে, পরিসর ছোট আসা ম্যাচে তাদেরই সুযোগটা বেড়ে যেত কয়েক লাফে। শেষমেশ তা বাস্তবে রূপ নিতে পারত, কিংবা নাও পারত।
তবে শেষমেশ তার কিছুই হয়নি। স্কটল্যান্ড নির্ধারিত ১০ ওভার শেষে ৯০ রান যেই না তুলল, বৃষ্টি নামল ঝমঝমিয়ে। আর তা শেষই হলো না। ফল যা হওয়ার তাই হলো, ম্যাচ পরিত্যক্ত!
অথচ বৃষ্টির লুকোচুরির আগে স্কটল্যান্ডের ওপেনার জর্জ মুন্সেই আর মাইকেল জোন্সের ব্যাটিং ছিল বেশ ভালো। বৃষ্টির আগে বললে হবে না, ম্যাচ শুরুর আগেই এক দফা বৃষ্টি জানান দিয়ে গিয়েছিল, দিনটা আজ আমাদের।
তবে ফাঁকে ফাঁকে যে সময়টা মিলেছে, তাতেই রোমাঞ্চের আভাস মিলছিল। মার্ক উডের বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ তুলে দিয়েছিলেন মুন্সেই, কিন্তু নো বল হওয়ার পর বেঁচে ফিরেছিলেন তিনি। সে ওভার পর্যন্ত সব ঠিকঠাকই ছিল। ৫ ওভারে স্কটিশদের রান ছিল মোটে ৩৪। পরের ওভারে ক্রিস জর্ডানকে টানা তিন বলে সীমানাছাড়া করে জোন্স তুলে নিলেন ১৪ রান, সব মিলিয়ে ১৫ এল ওই ওভার থেকে। সপ্তম ওভারের দুই বলে দুটো রান নিলেন মুন্সেই আর জোন্স। এরপরই ঝাড়া দুই ঘণ্টার বৃষ্টি পথ আগলে দাঁড়াল দুই দলের।
ওপরে যে হিসেবটা পড়লেন, ওটা তখনকার। ডাকওয়ার্থ লুইস স্টার্ন মেথড তো আর জানে না স্কটিশদের ডেথ ওভারে ব্যাটিং কেমন, ওদের গভীরতাই বা কদ্দুর; শুধু জানে ওদের হাতে দশ উইকেট ছিল, যা বড় রানের প্রথম শর্ত, যার ফলে পাহাড়সম রানই দিয়ে দেওয়ার কথা। ওই বিরতির সময় তা দিলও। হিসেব বলছিল, তখনই ইংলিশদের ব্যাট করতে নামিয়ে দিলে ৫ ওভারে লাগবে ৬৬ রান।
একটা তথ্য বিদঘুটে লাগতে পারে, কিন্তু আসলেই সত্য। সেটা কী? টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে এখন পর্যন্ত ৪ ম্যাচে ইউরোপীয় কোনো প্রতিপক্ষের বিপক্ষে খেলেছে ইংল্যান্ড, হেরেছে তিনটিতে, অন্য ম্যাচটা গিয়েছিল বৃষ্টিতে ভেসে। স্কটিশরাও কিন্তু ওই ইউরোপিয়ানই! এমন পরিস্থিতি কি রোমাঞ্চ না জাগিয়ে পারে বলুন? তবে তখনই বেরসিকের মতো বৃষ্টিটা থেমে গেল। আর একটু পর থামলে হয়তো আম্পায়াররা ইংল্যান্ডকে ব্যাট করতে নামিয়ে দেওয়ার কথা ভাবতে পারতেন। কিন্তু কাট অফ টাইম দুপুর ২টা ৫২ মিনিট থেকে আরও ৫০ মিনিট আগে খেলা শুরু হলে তা আর করা যায় না।
মুন্সেই আর জোন্সকে ফিরতে হলো মাঠে। এরপর দুজন মিলে পরের ২২ বলে উইকেট খোয়ালেন না, তবে দলের স্কোরবোর্ডে তুলে বসলেন ৩৯ রান। দলটা করেছিল ৯০, কিন্তু ডিএলএস বাম্প রানটাকে নিয়ে তুলেছিল ১০৮ এ।
এরপরই ঝমঝমিয়ে নামল বৃষ্টি। এতটাই যে, তা ম্যাচের সম্ভাব্য রোমাঞ্চেও ‘জল’ ঢেলে দিতে যথেষ্ট হলো। ম্যাচটা হলে কী হতো, এখন সেসবেরই হিসেব কষতে হচ্ছে তাই।