শ্রীলঙ্কা ম্যাচের আগে যা বললেন শান্ত
বিশ্বকাপ শুরু হয়েছে প্রায় এক সপ্তাহ হয়ে গেছে। তবে বাংলাদেশের ম্যাচ হয়নি এখন পর্যন্ত একটাও। দীর্ঘ অপেক্ষা শেষ হচ্ছে। বাংলাদেশ আগামীকাল সকালে মুখোমুখি হবে শ্রীলঙ্কার।
তার আগে বাংলাদেশ অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত এসেছিলেন সংবাদ সম্মেলনে। দলের নিকট অতীত, বর্তমান ও নিকট ভবিষ্যৎ নিয়ে কথাও বললেন বেশ। সেখানে যা বলেছেন তিনি, স্পোর্টস বাংলার পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হলো–
প্রথম ম্যাচ হেরে শ্রীলঙ্কা বেশ চাপে আছে। আপনারা কি এর সুবিধাটা নিতে চাইবেন?
তাদের মনে কী চলছে, কীসের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে, তা নিয়ে আমরা ভাবছি না। আমরা আমাদের কথাই ভাবছি। আমাদের নিজেদের শক্তিমত্তার ওপরই আমরা খেলতে চাই।
হ্যাঁ, তারা প্রথম ম্যাচটা ভালো খেলেনি। তবে সেটা নিয়ে আমরা ভাবছি না।
শ্রীলঙ্কা প্রথম ম্যাচে হেরেছে, তার আগেও বেশ ভালো পারফর্ম্যান্স ছিল না। শেষ কিছু দিনে সময়টা ভালো যায়নি আমাদের। যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে ওই সিরিজ হার, সে হিসেবে এই ম্যাচটাকে অনেক বিশ্লেষক, নীতি-নির্ধারকই ফিফটি-ফিফটি চান্স ধরছেন। আপনি কতটা আত্মবিশ্বাসী এই ম্যাচটা জেতার জন্য?
ম্যাচটা দুই দলের জন্যই কঠিন হতে যাচ্ছে। কিন্তু ওই দিনে যে দল ভালো খেলবে, তারাই জিতবে। দুই দলের জন্যই ম্যাচটা গুরুত্বপূর্ণ।
কিন্তু যা বললাম, বেশি চিন্তা না করে যে পরিকল্পনাটা করেছি, সেটার বাস্তবায়ন করতে পারাটা, অনেক সামনের দিকে না তাকিয়ে বর্তমানে থাকাটা গুরুত্বপূর্ণ। সবাই ভালোভাবে প্রস্তুতি নিয়েছে, আশা করছি সবাই পরিকল্পনাটা বাস্তবায়ন করবে।
আপনাদের দিকে পুরো জাতি তাকিয়ে আছে কালকের ম্যাচটার জন্য। অনেক ডিমোরালাইজিং কথাবার্তা হয়ে গেছে। আপনারা কি মনে করেন নিজেদের পারফর্ম্যান্স দিয়ে এটা প্রমাণ করতে পারবেন যে উই ডোন্ট কেয়ার? একটা দারুণ শুরু কাল দেখা যাবে কি না?
দর্শকদের প্রত্যাশা সবসময়ই থাকে। সবাই চায় আমরা ভালো ক্রিকেট খেলি। সেটা থাকবে আশা করি। আমরাও চাই যত ভালো ক্রিকেট খেলে তাদের ভালো একটা ম্যাচ উপহার দিতে পারি। তবে গুরুত্বপূর্ণ হলো কীভাবে আমরা ওই ম্যাচে আমাদের পরিকল্পনাটা বাস্তবায়ন করতে পারছি, আর আমাদের শক্তিমত্তার ওপর ভিত্তি করে ম্যাচটা খেলছি কি না। আমাদের শক্তির ওপর নির্ভর করে যদি আমরা খেলতে পারি, তাহলে আমরা খুব ভালো একটা ম্যাচ উপহার দিতে পারব।
শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ম্যাচটা দিয়ে বাংলাদেশের বিশ্বকাপে গতিপথটা নির্ধারিত হবে এটা ধারণা করতে পারি। তবে টপ অর্ডারের ব্যাটারদের পারফর্ম্যান্স নিয়ে আত্মবিশ্বাসের ঘাটতি মনে হয় শেষ কিছু দিনে ছিল। আপনার ব্যাটিং দেখছিলাম, টপ অর্ডারের বাকিদেরও দেখেছি। আপনি অধিনায়ক হিসেবে কতটা আমাদের আশ্বস্ত করতে পারেন যে সামনের ম্যাচের আগে ব্যাটাররা কতটা ইমপ্রুভ করেছে, কতটা আত্মবিশ্বাসের জায়গা তৈরি হয়েছে?
খুবই সত্য যে শেষ কিছু দিনে টপ অর্ডাররা ভালো করেনি। তবে কালকের দিনটা পুরোপুরি নতুন একটা দিন। আপনি যেটা বললেন অনুশীলনে যার যেখানে খামতি আছে, সবাই শতভাগ দিচ্ছে। উন্নতি বললে, আগের জায়গা থেকে ভালো অবস্থানে আছে, প্র্যাকটিস দেখে বা নেট সেশন দেখে তাতে মনে হয়েছে সবাই আগের চেয়ে ভালো অবস্থানে আছে। আগের কথা চিন্তা না করে… কালকের কথা কেউ জানি না, কাল কে ভালো করবে বা খারাপ করবে; কাল নতুন দিনে যে সেট হবে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে সে কীভাবে খেলাটা শেষ করছে। আমি আশা করছি আমাদের ব্যাটাররা যেভাবে প্রস্তুতি নিয়েছে, সেটা এক্সিকিউট করতে পারলে ভালো ম্যাচ হবে।
দীর্ঘ বিল্ড আপ, জিম্বাবুয়ে সিরিজ থেকে শুরু। সেখান থেকে ফাইনালি ম্যাচে নামা, কতটা প্রস্তুত আপনারা? প্রস্তুতিতে সুযোগ সুবিধার ঘাটতি ছিল, সেটার একপাশে রেখে আপনারা কতটা প্রস্তুত হয়েছেন? যা আপনাদের হাতে ছিল, সবটুকু কাজে লাগাতে পেরেছেন কি না?
আমরা সবাই ভালোভাবে প্রস্তুত। যতটুকু সুযোগ সুবিধা ছিল, আমরা সবটুকু নেওয়ার চেষ্টা করেছি। ভালো খারাপ থাকবেই, এর ভেতর থেকে ভালো জিনিসটা যতটুকু নেওয়া যায় আমরা চেষ্টা করেছি।
টপ অর্ডারের প্র্যাকটিসের কথা বললেন, ডিফ্রেন্ট কিছু ট্রাই করেছেন নাকি নরমাল যা করেন, সেটাই করেছেন?
এটা ইন্ডিভিজুয়াল যেভাবে প্ল্যান করেছে। আমার দেখে যা মনে হয়েছে, বেশি বাড়তি কিছু চেষ্টা করেনি। যার যে শক্তি সেটা মাঠে প্রয়োগ করার চেষ্টাই করেছে।
ইউএসএতে নতুন সারফেস উইকেট সবারই একটু স্ট্রাগল হচ্ছে। লো স্কোরিং ম্যাচ হচ্ছে। ডালাসের উইকেট দেখে কী মনে হয়েছে? আর এই যে লো স্কোরিং ম্যাচ হচ্ছে তা আপনাদের কতোটুকু আশা দিচ্ছে?
এই উইকেটে এক ম্যাচে ১৯৪ হয়েছে, আবার আজকে ১৫০ হয়েছে। তো কালকে খেলা শুরু করলেই বুঝব কত রানের উইকেট। ওভারল আমার কাছে নতুন বলে ব্যাট করাটা চ্যালেঞ্জিং মনে হয়েছে। কিন্তু অজুহাতের সুযোগ নেই। এ অসুবিধা কাটিয়ে কীভাবে দলকে ভালো শুরু এনে দিতে পারি, সেটাই ব্যাটারদের দায়িত্ব। বোলাররা সুযোগটা কাজে লাগিয়ে কীভাবে উইকেট তুলে নিতে পারছে সেটা গুরুত্বপূর্ণ। খেলা শুরুর পর খুব তাড়াতাড়ি মানিয়ে নিতে হবে আমাদের। উইকেট নিয়ে খুব বেশি চিন্তার দরকার আছে বলে মনে করি না। নিজেদের স্কিলের ওপর বিশ্বাসটা রেখে এক্সিকিউট করাটা ইম্পরট্যান্ট।
যুক্তরাষ্ট্রের কাছে হেরে স্কিলের চেয়ে বেশি মানসিকতার দোষ দেখেছিলেন। ওখানে কতোটুকু উন্নতি হয়েছে?
দল মেন্টালি খুব ভালো অবস্থানে আছে। বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচ, সবাই একটু হলেও নার্ভাস থাকবে। ওটা কীভাবে হ্যান্ডেল করছি, সেটা গুরুত্বপূর্ণ। বেশ কিছু খেলোয়াড়ের আগে বিশ্বকাপ খেলার অভিজ্ঞতা আছে, আশা করব তারা সেটা কাজে লাগাবে।
নতুন দিন কালকে। অতীতের ব্যর্থতা অতীতেই থাকবে। নতুন দিনকে সামনে রেখে আপনাদের মোরাল কতটা হাই?
অতীতে ভালো সময় যায়নি, কাল পুরোপুরি একটা নতুন দিন। আমরা জানি না কে ভালো খেলবে, কে দলকে জেতাবে। তবে আমরা সবাই দলকে জেতানোর জন্যে প্রস্তুত, ১৫ জনের সবার ভেতর ওই অ্যাবিলিটিটা আছে। ব্যাটার যদি সেট হয়, সে যেন খেলাটা শেষ করে আসে, বোলার যদি ভালো বল করা শুরু করে সে যেন ওই চারটা ওভার ভালোভাবে বল করে। আমি আশাবাদী যে আমরা ভালোভাবে দিনটা কাজে লাগাতে পারব।