থ্রিলার জয়ে পাকিস্তানকে বিদায়ের আরও কাছে ঠেলে দিল ভারত

থ্রিলার জয়ে পাকিস্তানকে বিদায়ের আরও কাছে ঠেলে দিল ভারত

নাহ! ‘রোমাঞ্চকর জয়ে’, ‘থ্রিলার জয়ে’, ‘রুদ্ধশ্বাস জয়ে’ ইত্যাদি ইত্যাদি নোটপ্যাডে টাইপ করে রাখতে হবে দেখছি! এবারের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে যে প্রতিদিনই দেখা মিলছে এমন সব ম্যাচের! এবার ভারত পাকিস্তান ম্যাচটাও এমন কিছুই উপহার দিল।
পাকিস্তানের আগের ম্যাচ অবশ্য এর চেয়ে বেশি রোমাঞ্চকর ছিল। তবে দিন শেষে কপালটা পুড়েছিল বাবর আজমের দলের। আজও ম্যাচটা থ্রিলারে রূপ নিল। দিন শেষে হতভাগ্য দলের নাম ওই পাকিস্তানই। ভারতের কাছে আজ তাদের হারের ব্যবধানটা স্রেফ ৬ রানের।
বাবররা নিজেদের দুষতে পারেন আচ্ছা করে। আগের দিন যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে ম্যাচটা জেতার মতোই ছিল, আজ ভারতের বিপক্ষে ম্যাচটায় তো তার চেয়েও সহজ পরিস্থিতি ছিল দলটার সামনে। ১২০ রান তাড়া করতে নামলে সমীকরণটা সহজ, চাইলে আপনি কোনো বাউন্ডারি না মেরেই ম্যাচটা জিতে জেতে পারবেন। সে কাজটা ভারতের শেষ উইকেটে এক ওভারের জন্য দেখিয়েছিলেন আরশদীপ সিং আর মোহাম্মদ সিরাজ। সে কাজটাই পাকিস্তানকে করতে হতো পুরো ২০ ওভার ধরে।
পাকিস্তান সেটাই পারল না। প্রতি বলে একটা করে রানের ওই সমীকরণটা ১৪ ওভার শেষেও বেশ করে প্রযোজ্য ছিল দলটার ওপর। এরপরই যেন মতিবিভ্রম হলো দলটার। নাহয় বলুন ওপেনার মোহাম্মদ রিজওয়ান কেন ওভাবে ১৫তম ওভারে আড়াআড়ি ব্যাটে খেলতে যাবেন যশপ্রীত বুমরাহকে? তিনি যতক্ষণ ছিলেন, পাকিস্তানের রানের চাকাও ঘুরছিল। তিনি বিদায় নিলেন যেই না, শামুকের গতিকেও হার মানাল পাক ব্যাটারদের গতি। এমন কিছু হলে আর যাই হোক ৩৫ বলে ৪০ রানের সমীকরণ মেলানো যায় না।
উইকেটটা কঠিন ছিল সন্দেহ নেই। বল থেমে আসছিল একটু। কিন্তু একেবারে যে আনপ্লেয়েবল উইকেট না, তার প্রমাণ তো শেষ ওভারেই দিয়েছেন নাসিম শাহ। আরশদীপকে দুটো চার মেরে পাকিস্তানকে রেখেছিলেন আশায়।
পাকিস্তানের সমস্যা ছিল ইন্টেন্টে, তবে তাই বলে ভারতীয় বোলারদের কৃতিত্ব কেড়ে নেওয়া যাবে না আদৌ। ১৫ থেকে ২০, এই ছয় ওভারে যে কী দুর্দান্ত বোলিং করেছেন বুমরাহ, সিরাজ, পান্ডিয়ারা! ১৪ রানে ৩ উইকেট নিয়ে বুমরাহ হয়েছেন ম্যাচসেরা, কিন্তু অন্যদের কৃতিত্বকেও তাতে ছোট করে দেখার উপায় একটুও নেই। সবকিছুর সম্মিলিত ফলাফল, পাকিস্তানের এই ৬ রানের হার।
অথচ ভারত ইনিংসের শুরুটা বলছিল আজ বুঝি দিনটা পাকিস্তানেরই। রোহিত শর্মা আর বিরাট কোহলির দুজনকেই যে ১৯ রানের মাথায় সাজঘরমুখো করে দিয়েছিলেন নাসিম শাহরা! রোহিত দুই অঙ্কের ঘরে গিয়ে আউট হয়েছেন। তার পর ভারতের আর দুজন ব্যাটারই দুই অঙ্ক ছুঁতে পেরেছিলেন। ঋষভ পান্ত আর অক্ষর পাটেল। ঋষভ পান্ত ইনিংস সর্বোচ্চ ৪২ করতেই পারতেন না, যদি না তিনি ওই ইনিংসে ‘জীবন’ পেতেন কমপক্ষে ৫ বার! পাকিস্তানের ফিল্ডিং এতটাই বাজে ছিল আজ! তিনি অল্পেতে ফিরে গেলে ভারতের রান কততে থামত তাও এখন রীতিমতো গবেষণার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। কারণ তার পর থেকে শেষ পর্যন্ত ব্যাটাররা যে দুই অঙ্কেই যেতে পারেননি আর!
এই ম্যাচ থেকে পাকিস্তানের আফসোসের সংখ্যা নেহায়েত কম নয়। তাতে সবচেয়ে বড় জায়গাটা জুড়ে থাকবেন পান্ত। তিনি অল্পেতে ফিরে গেলে রান কিছুটা হলেও কম হতো, আর সেটা হলে যে জয়টা পাকিস্তানের দিকেও যেতে পারত!

সম্পর্কিত খবর