আম্পায়ারিং নিয়ে সমালোচনার ঝড়, নিয়ম পরিবর্তনের দাবি
দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ইনিংসের ১৭ তম ওভারে ওটনিয়েল বার্টম্যানের করা দ্বিতীয় বলটি মাহমুদউল্লাহর প্যাডে আঘাত করে বাউন্ডারি লাইন পেরিয়ে যায়। তবে বল বাউন্ডারি লাইন পেরনোর আগেই বোলারের আবেদনে আউটের আঙুল তুলে দেন আম্পায়ার। পরে রিভউ নিয়ে মাহমুদউল্লাহ বেঁচে গেলেও বাতিল হয় বলটি। বাংলাদেশের স্কোরবোর্ডে জমা হয়নি চার রান। শেষ পর্যন্ত দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে বাংলাদেশের হারের ব্যবধানটাও এই ৪ রানের। যা নিয়েই হচ্ছে সমালোচনা। অনেক সাবেক ক্রিকেটারই আম্পায়ারিংয়ের সমালোচনা করেছেন। একইসঙ্গে আইসিসির কাছে দাবি জানিয়েছেন এমন নিয়ম পরিবর্তন করারা।
আম্পায়ারের বিতর্কিত ওই সিদ্ধান্ত নিয়ে ম্যাচ শেষে বাংলাদেশ দলের ক্রিকেটার তাওহিদ হৃদয় বলেন, ‘সত্যি বলতে এটা গুড কল ছিল না। ম্যাচটা টাইট ছিল। আম্পায়ার আউট দিয়ে দিলেন। আমাদের জন্য এটি মেনে নেওয়া কঠিন। ওই ৪ রান হলে ম্যাচের দৃশ্য বদলে যেত। এ নিয়ে আমার আর কিছু বলা ঠিক হবে না।’
বাংলাদেশ-দক্ষিণ আফ্রিকা ম্যাচ নিয়ে ইএসপিএনক্রিকইনফোর আলোচনাতেও গুরুত্ব পেয়েছে আম্পায়ারিং ইস্যু। যা নিয়ে আম্পায়ারকে দুষছেন আলোচনায় আসা ভারতের সাবেক ক্রিকেটার সঞ্জয় মাঞ্জরেকার, বাংলাদেশের তামিম ইকবাল ও দক্ষিণ আফ্রিকার সাবেক ক্রিকেটার মরনে মরকেল। একই সঙ্গে আইসিসিকেও এই নিয়ম তুলে নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন তিনি।
আম্পায়ারিং ইস্যু নিয়ে মাঞ্জরেকার বলেন, ‘এটা নিয়ে সমর্থকেরা অনেক কথা বলছেন। আমরাও এটা নিয়ে আলাপ করতে পারি। আম্পায়ার কি সবকিছু শেষ হয়ে যাওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করতে পারেন না? আম্পায়ার চাইলে বলটা বাউন্ডারি লাইন অতিক্রম করা পর্যন্ত অপেক্ষা করতে পারেন এবং তারপর তাঁর আঙুল তুলতে পারেন বা বলতে পারেন যে আউট হয়নি। এরপর সেটা আপনি রেকর্ড করলেন এবং রিভিউর পর যা হওয়ার তা হবে।’
তামিম বলেন, ‘আমার মনে হয়, আপনার কাছে যখন সময় আছে, আপনি কয়েক সেকেন্ড অপেক্ষা করে দেখতে পারেন, বল কোথায় গেল। সেটা কি বাউন্ডারি হলো, নাকি হলো না! এরপর আপনি আপনার সিদ্ধান্ত জানান। যদি ব্যাটসম্যান আউট না হয়, আর বল যদি তার থাইপ্যাডে বা অন্য কোথাও লেগে বাউন্ডারির বাইরে চলে যায়, তবে সে ক্ষেত্রে রান দেওয়া উচিত। যদি সে আউট না হয় আর কি। এটা আমি কঠিনভাবে বিশ্বাস করি। ধারাভাষ্যকক্ষেও সবাইকে এটা নিয়ে কথা বলতে শুনেছি। এটা এমন কিছু, যেখানে আইসিসি গুরুত্বের সঙ্গে মনোযোগ দিতে পারে। কারণ, এটা এমন কিছু নয় যে তাদের বড় ধরনের পরিবর্তন আনতে হবে।’
সিদ্ধান্ত দক্ষিণ আফ্রিকার পক্ষে গেলেও এমন সিদ্ধান্তের বিপক্ষে দেশটির সাবেক পেসার মরকেল। বলেন, ‘আমি একমত। কোনো সন্দেহ নেই। এটা বদলানো জরুরি। আশা করি, বিশ্বকাপের পর তেমন কিছু হবে।’
আম্পায়ারিং ইস্যুতে স্কাই স্পোর্টসের ধারাভাষ্যে নাসের হুসেইন বলেন, ‘এই আইনটার সংস্কার হওয়া উচিত। বল বাউন্ডারি লাইন পেরিয়ে গেল আর আপনি ৪ রান দিবেন না। এটা কেন?’
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে আম্পায়ারিং নিয়ে পাকিস্তানের ওয়াকার ইউনিস লিখেছেন, ‘আম্পায়ারের এলবিডব্লিউ সিদ্ধান্তে বিতর্কিত ডেড বলের আইনটি বদলানো উচিত। প্রোটিয়াদের বিপক্ষে লো স্কোরিং থ্রিলারে বাংলাদেশের ক্ষতি করে দিয়েছে এটাই।’
ভারতের সাবেক ক্রিকেটার ওয়াসিম জাফর লিখেছেন, ‘মাহমুদউল্লাহকে ভুলভাবে এলবিডব্লিউ আউট দেওয়া হল, অথচ বলটি লেগ বাইতে চার হতে পারত। ডিআরএসে সিদ্ধান্ত পালটে গেল। কিন্তু বল ডেড হওয়ায় বাংলাদেশ ৪ রান পেল না। আর দক্ষিণ আফ্রিকাও শেষ পর্যন্ত ৪ রানে জিতল। বাংলাদেশ ভক্তদের এই অনুভূতি আমি বুঝতে পারছি।’