হার দিয়ে সুপার এইট মিশনের শুরু
‘সুপার এইটই লক্ষ্য ছিল। এরপর যা আসবে তা বোনাস’– কথাটা বলে কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহে দলের ওপর থেকে চাপের বোঝাটা সরিয়ে দিতে চাইছিলেন। তা আর হলো কই? বাংলাদেশের পারফর্ম্যান্স জানান দিল চাপটা একটুও কমেনি। বিশ্বকাপে অস্ট্রেলিয়ার মুখোমুখি হওয়াটা চাপের অবশ্যই। সে চাপটা এবারও জয় করতে পারেনি বাংলাদেশ। ম্যাচটা হেরেছে ডিএলএস পদ্ধতিতে ২৮ রানে। তাতে সুপার এইটের শুরুটা ভালো হলো না বাংলাদেশের।
অ্যান্টিগার স্যার ভিভিয়ান রিচার্ডস স্টেডিয়ামে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে আজ বাংলাদেশ শুরুটা ভালো করতে পারেনি। প্রথম ওভারেই তানজিদ তামিমের বিদায়ঘণ্টা বাজিয়ে দেন মিচেল স্টার্ক। এরপর লিটন দাসকে সঙ্গে নিয়ে নাজমুল হোসেন শান্ত চেষ্টা করেছিলেন একটা। দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে তুলেছিলেন ৫৮ রান। এরপর ২৫ বলে ১৬ রান করা লিটন বিদায় নিলেন অ্যাডাম জ্যাম্পার বলে বোল্ড হয়ে। চারে আনা হলো রিশাদ হোসেনকে, উদ্দেশ্য ছিল রানের গতি বাড়ানো, কিন্তু তিনিও ব্যর্থই হলেন।
দীর্ঘ রানখরায় থাকা শান্ত আজ ছন্দে ফেরার ইঙ্গিত দিয়েছেন। তবে সেটাও ঝরে গেছে অকালেই। ৩৬ বলে ৪১ রানের ইনিংস খেলে তিনি যখন বিদায় নিচ্ছেন, দলের হাতে তখনও ৭ ওভার বাকি!
বাংলাদেশের ইনিংসটাকে এতক্ষণ টানছিলেন শান্ত, তার বিদায়ের পর দায়িত্বটা এসে পড়ে একা তাওহীদ হৃদয়ের কাঁধে। ওপাশে সাকিব আল হাসান বা মাহমুদউল্লাহ রিয়াদদের কেউই তাকে সঙ্গ দিতে পারেননি। হলে হয়তো বাংলাদেশ আরও ২০টা রানের মতো বেশি পেতেও পারত। সাকিব রিয়াদদের দুজনই এক অঙ্কের রান নিয়ে ফিরেছেন সাজঘরে।
১৮তম ওভারের শেষ দুই বলে রিয়াদ আর শেখ মেহেদীকে ফিরিয়ে হ্যাটট্রিকের সম্ভাবনা জাগান প্যাট কামিন্স। ২০তম ওভারের শুরুতে তাওহীদ হৃদয় তার বলে ফাইন লেগে স্কুপ করতে গিয়ে ক্যাচ দিয়ে ফিরলে চলতি বিশ্বকাপের প্রথম হ্যাটট্রিক তুলে নেন অজিদের ওয়ানডে অধিনায়ক। ফেরার আগে তাওহীদ করেন ২৮ বলে ৪০ রান। ওপাশে তাসকিন আহমেদের ৭ বলে ১৩ রানের ক্যামিও শেষমেশ বাংলাদেশকে নিয়ে যায় ১৪০ রান পর্যন্ত।
এই পুঁজি নিয়ে জিততে হলে শুরুতে উইকেট দরকার ছিল। তানজিম হাসান সাকিব সে সুযোগটা এনেও দিয়েছিলেন বাংলাদেশকে। তবে দ্বিতীয় ওভারের প্রথম বলে ক্যাচটা তুলেও বেঁচে যান ডেভিড ওয়ার্নার। পাওয়ারপ্লে থেকে আর কোনো সাফল্য পায়নি বাংলাদেশ। উল্টো হজম করে বসে ৫৯ রান।
পাওয়ারপ্লে শেষে ৭ম ওভারে নামে বৃষ্টি। সে বৃষ্টির পর প্রথম উইকেটের দেখা পায় বাংলাদেশ। সাফল্যটা এনে দেন রিশাদ হোসেন, বোল্ড করেন ২১ বলে ৩১ রান করা ট্র্যাভিস হেডকে। এরপরের ওভারে মিচেল মার্শকে তিনি ফেলেন এলবিডব্লিউর ফাঁদে।
তবে ওপাশে ডেভিড ওয়ার্নার ছিলেন ঠায় দাঁড়িয়ে। ফিফটিটা তিনি তুলে নেন ৩৩ বলে। এরপরই নামে বৃষ্টি। সেই বৃষ্টি শেষ করে আর খেলা শুরু হয়নি। ঝোড়ো ব্যাটিংয়ে অস্ট্রেলিয়া আগে থেকেই ছিল ২৮ রানে এগিয়ে। সে রানেই শেষমেশ জয়টা তুলে নেয় অজিরা। আর বাংলাদেশের সুপার এইট পর্বটা শুরু হয় হার দিয়ে।