অ্যান্টিগা থ্রিলার জিতে এক দশক পর সেমিতে প্রোটিয়ারা 

অ্যান্টিগা থ্রিলার জিতে এক দশক পর সেমিতে প্রোটিয়ারা 

বৃষ্টিবিঘ্নিত অ্যান্টিগায় লক্ষ্য তাড়ায় ইনিংস মাঝে সহজ জয়ের পথেই ছিল প্রোটিয়ারা। তবে ক্যারিবীয় স্পিনার রস্টন চেজের স্পিনে শেষ দিকে এসে চাপে পড়ে গিয়েছিল এইডেন মার্করামের দল। তবে শেষে এসে মার্কো ইয়ানসেনের ১৪ বলে ২১ রানের ক্যামিওতে ৩ উইকেটে ম্যাচ জিতে নেয় দক্ষিণ আফ্রিকা। আর তাতে দীর্ঘ এক দশক পর টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সেমিতে জায়গা নিশ্চিত করে প্রোটিয়ারা। সবশেষ ২০১৪ বিশ্বকাপে সেমিতে খেলেছিল প্রোটিয়ারা। সেবার, বাংলাদেশের মাটিতে তাদের হারতে হয়েছিল ভারতের বিপক্ষে।

এদিন জবাব দিতে নেমে ইনিংসের মাঝে ৭ ওভারেই ৩ উইকেটে ৭০ রান তুলে ফেলেছিল প্রোটিয়ারা। এতে সহজ জয়ের পথেই এগোচ্ছিল বিশ্বকাপের গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে ‘চোকার্স’ তকমা পাওয়া দলটি। তবে চেজের স্পিনে নাটকীয় কিছুর দিকেই এগোচ্ছিল স্বাগতিক ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ৭৭ রান থেকে ১১০-এ পৌঁছাতেই ইনিংসের সপ্তম উইকেট হারিয়ে বসে দক্ষিণ আফ্রিকা। তবে শেষটায় এসে ম্যাচের হার ধরলেন মার্কো ইয়ানসেন। শেষ ওভারে জয়ের জন্য দরকার ছিল ৫ রান। সেখানে ওভারের প্রথম বলেই ছক্কা হাঁকিয়ে জয়ের উল্লাসে মাতলেন এই বাঁহাতি ব্যাটার। 

স্যার ভিভ রিচার্ডস স্টেডিয়ামে টসে জিতে আগে বোলিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন দক্ষিণ আফ্রিকা অধিনায়ক এইডেন মার্করাম। সেখানে আগে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৮ উইকেটে ১৩৫ রানের লড়াকু পুঁজি পায় ক্যারিবীয়রা। 

প্রোটিয়াদের শক্তিশালী ব্যাটিং লাইন-আপের সামনে এই লক্ষ্য সহজের কাতারে থাকলেও চলতি বিশ্বকাপে ব্যাটিংয়ে খুব একটা ছন্দ দেখাতে পারেনি ক্লাসেন-মার্করামরা। এই ইনিংসটাও শুরু হলো সেভাবেই। দ্বিতীয় ওভারেই দুই ওপেনারের উইকেট হারিয়ে বসল তারা। স্কোরবোর্ডে তখন ২ ওভার শেষে ১৫ রান। তখনই নামে বৃষ্টি। বেশ কিছুক্ষণ বাদে বৃষ্টি থামলে ডিএলএস আইনে নতুন লক্ষ্য পায় দক্ষিণ আফ্রিকা, ১৭ ওভারে ১২৩ রানের।  

শুরুর সেই চাপ সামলে এবার ঝোড়ো গতিতে এগোতে থাকে প্রোটিয়ারা। মাঝে উইকেট হারালেও ৭ ওভারে ৭০ রান তুলে নেয় এইডেন মার্করামের দল। তবে এরপরই আসে বিপত্তি, যা নিয়ে আসেন ক্যারিবীয় স্পিনার চেজ। সাজঘরে ফেরেন পিচে থিতু হওয়া ট্রিস্টান স্টাবসকে। পরে একই রাস্তা দেখিয়ে দেন ডেভিড মিলার ও কেশভ মহারাজকেও। এতে ৭০ থেকে সংগ্রহে ১১০-এ পৌঁছাতেই ইনিংসে ৭ উইকেট হারায় দক্ষিণ আফ্রিকা। তবে টিকে ছিলেন মার্কো ইয়ানসেন। শেষ পর্যন্ত তার ১৪ বলে ২১ রানের ক্যামিওতেও রোমাঞ্চকর জয় পায় তারা। দলীয় সর্বোচ্চ ২৯ রান আসে স্টাবসের ব্যাটে। এদিকে ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে ৩ ওভার বল করে ১২ রান দিয়ে সর্বোচ্চ ৩ উইকেট নেন চেজ। 

এর আগে ব্যাট করতে নেমে স্বাগতিকরা শুরুটাও ছিল ধাক্কা দিয়ে। ইনিংসের তৃতীয় বলেই রানের খাতা খোলার আগেই শাই হোপকে ফেরান ইয়ানসেন। পরে দ্বিতীয় ওভারে নিকোলাস পুরানের উইকেট তুলে নেন প্রোটিয়া অধিনায়ক মার্করাম। এতে দলীয় সংগ্রহ ৫ রানে পৌঁছাতেই নেই ২ উইকেট। পরে কিংয়ের বদলে দলে যোগ দিয়েই একাদশে সুযোগ পাওয়া কাইল মায়ার্সকে নিয়ে তৃতীয় উইকেটে ৮১ রানের দারুণ এক জুটি গড়েন চেজ। 

এদিকে ইনিংসের শেষ দিকে এসে ওয়েস্ট ইন্ডিজের ব্যাটাররা ভুগেছিল স্পিনারদের সামনে। ৩ উইকেটে তখনও দলীয় সংগ্রহ ৮৬ রান। পরে পিচে থাকে দুই সেট ব্যাটারের উইকেট তুলে নেন শামসি। স্পিনে তাকে যোগ্য সঙ্গ দেন মহারাজও। এতে দলীয় ৯৭ রানে পৌঁছাতেই ইনিংসের ষষ্ঠ উইকেট হারায় স্বাগতিকরা। পরে বাকি ব্যাটাররা স্কোরবোর্ডে যোগ করতে পারেননি তেমন কিছু। এতে শেষ পর্যন্ত ৮ উইকেটে তাদের পুঁজি ১৩৫ রান। ক্যারিবীয়দের হয়ে ৪২ বলে দলীয় সর্বোচ্চ ৫১ রান আসে চেজের ব্যাটে। 

প্রোটিয়াদের হয়ে ৪ ওভারে ২৭ রান দিয়ে সর্বোচ্চ ৩ উইকেট নেন শামসি। এতে জেতেন ম্যাচসেরার খেতাবও। 

সংক্ষিপ্ত স্কোরঃ
ওয়েস্ট ইন্ডিজঃ ১৩৫/৮ (২০ ওভার); চেস ৫২, মায়ার্স ৩৫; শামসি ৩-২৭, রাবাদা ১-১১।
দক্ষিণ আফ্রিকাঃ ১২৪/৭ (১৬.১ ওভার); স্টাবস ২৯, ক্লাসেন ২২; চেস ৩-১২, রাসেল ২-১৯।।
ফলাফলঃ বৃষ্টি আইনে দক্ষিণ আফ্রিকা ৩ উইকেটে জয়ী। ম্যাচসেরাঃ শামসি (৪-০-২৭-৩)

সম্পর্কিত খবর