বাংলাদেশের আশা টিকিয়ে রেখে সেমিতে ভারত  

বাংলাদেশের আশা টিকিয়ে রেখে সেমিতে ভারত  

আহমেদাবাদ ফিরল না সেন্ট লুসিয়ায়। এবার আর অজিদের বিপক্ষে হারল না ভারত। ২০২৩ সালেড় ১৯ নভেম্বরে ঘরের মাটিতে ওয়ানডে বিশ্বকাপের ফাইনালে অজিদের কাছে হারে দুঃস্মৃতি এখনো যেন ভুলতে পারেনি রোহিত-কোহলিরা। সেই হারের অনেকটা ‘প্রতিশোধ’ই নিল ভারত। যদিও এটি সাদা বলের আরেক ফরম্যাটের বিশ্বকাপ এবং ম্যাচটি সুপার এইটের, তবে ভারতের কাছে যেন অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে যেকোনো উপলক্ষ্যের লড়াই যেন চিরপ্রতিদ্বন্বীতার। সুপার এইটে নিজেদের শেষ ম্যাচে অজিদের বিপক্ষে ২৪ রানে জিতল ভারত। আর এতেই গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়েই সেমিতে পৌঁছাল রোহিত শর্মার দল। 

সুপার এইটে নিজেদের তিন ম্যাচের তিনটিতেই জিতল ভারত। এদিকে বাংলাদেশের বিপক্ষে জয় দিয়ে শুরু করলেও পরের দুই ম্যাচেই জিতল অজিরা। এতেই তাদের সেমির সমীকরণ দাঁড়িয়েছে কঠিন হিসেবের মারপ্যাঁচে। মূলত সেটি ঝুলে আছে বাংলাদেশ সময় আজ সকালে বাংলাদেশ-আফগানিস্তানের ম্যাচের হাতে। 

আফগানরা ম্যাচটি জিতলেই কোনো বাঁধার সম্মুখিন ছাড়াই চলে যাবে সেমিতে। এদিকে বাংলাদেশকে সেমিতে পৌঁছাতে হলে আগে ব্যাট করে ১৬০ রান তুলে আফগানদের হারাতে হবে ৬২ রানের ব্যবধানে। এছাড়া লক্ষ্য তাড়ায় টার্গেট বিবেচনায় ১১.৫ ওভার থেকে ১৩.৪ ওভারের ম্যাচ জিতলেও সেমিতে উঠে যাবে নাজমুল হোসেন শান্তর দল। আর এসবের কোনোটিই না হলেও কপাল খুলে যাবে মিচেল মার্শের দলের। 

সেন্ট লুসিয়া টসে জিতে আগে বোলিংয়ের সিদ্ধান্ত নেয় অজিরা। সেখানে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৫ উইকেট হারিয়ে ২০৫ রান তোলে ভারত। 

বিশাল সেই লক্ষ্য তাড়ায় শুরুতেই ধাক্কা খায় অজিরা। ইনিংসের প্রথম ওভারের শেষ বলে ডেভিড ওয়ার্নারকে সাজঘরে ফেরান আর্শদীপ সিং। তবে আরেক ওপেনার ট্রাভিস হেডকে নিয়ে সেই চাপ অনায়াসেই সামলে নেন অধিনায়ক মার্শ। গড়েন ৮১ রানের জুটি। তবে মার্শ ৩৭ রানে ফিরলেও ব্যাটিং তাণ্ডব জারি রাখেন হেড। ২০২৩ বিশ্বকাপের সেই ফাইনালে হেডের নৈপুণ্যেই শিরোপার স্বপ্নভঙ্গ হয়েছিল ভারতের। আরও একবার রোহিতদের বিপক্ষে নায়ক বনেই যাচ্ছিলেন এই বাঁহাতি ব্যাটার। তবে দলীয় ১৫০ রানের মাথায় বুমরাহের বলে সাজঘরে ফেরেন হেড। এর আগে করেন দলীয় সর্বোচ্চ ৪৩ বলে ৭৬ রান। এদিকে হেডের উইকেটের আগেই ম্যাক্সওয়েল ও স্টয়নিসকে একই পথ দেখিয়েছিলেন কুলদীপ ও অক্ষর। 

হেড ফেরার পর শেষ ২১ বলে স্কোরবোর্ডে আর ৩১ রান যোগ করে অজিরা। এতে ৭ উইকেটে তাদের সংগ্রহ থামে ১৮১ রানে। সেখানে সর্বোচ্চ ৩ উইকেট নেন আর্শদীপ।

এর আগে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই ধাক্কা খায় ভারত। শুরুর থেকেই রান খরা কাটিয়ে আগের ম্যাচে বাংলাদেশের বিপক্ষে রানে ফিরেছিলেন বিরাট কোহলই। তবে এদিন আরও একবার হতাশ করল তার ব্যাট। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারেই রানের খাতা না খুলে পাড়ি জমালেন সাজঘরে। 

তবে শুরু থেকেই ব্যাট হাতে তাণ্ডব চালাতে থাকেন রোহিত। ১৯ বলেই তুলে ফেলেন ফিফটি। যা এই আসরের দ্রুততম। এদিকে আরেক প্রান্তে কিছুটা বুঝেশুনে খেলতে থাকা রিশাভ পান্তকে অষ্টম ওভারের শেষ বলে দলীয় ৯৩ রানের মাথায় ফেরান স্টয়নিস। তবে থামানো যাচ্ছিল না রোহিতকে। আশা জাগাচ্ছিলেন আসরের প্রথম সেঞ্চুরির। তবে ইনিংসের তৃতীয় ওভারে ৪ ছক্কা মারা স্টার্কের বলেই শেষমেশ বোল্ড হয়ে ফিরলেন রোহিত। তার ৯২ রানের এই ইনিংস বিশ্বকাপে কোনো ভারতীয় ব্যাটারের করা দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। এর আগে ২০১০ বিশ্বকাপে এই সেন্ট লুসিয়াতেই ১০১ রান করেছিলেন সুরেশ রায়না। রোহিত ফেরার পর রানের গতি কিছুটা কমলেও সময় নিয়ে তা সামলে নেন মিডল অর্ডারের ব্যাটাররা। এতেই সূর্যকুমারের ৩১, দুবের ২৮ এবং শেষে এসে ১৭ বলে হার্দিকের ২৭ রানের ক্যামিওতে ৫ উইকেটে ২০৫ রানের বড় সংগ্রহ পায় ভারত। সেখানে অজিদের হয়ে দুটি করে উইকেট নেন স্টার্ক ও স্টয়নিস। 

এদিকে সেমিতে ঠিক হয়ে গেছে ভারতের প্রতিপক্ষও। আগামী ২৭ জুন বাংলাদেশ সময় রাত ৮টা ৩০ মিনিটে গায়ানার প্রভিডেন্স স্টেডিয়ামে ফাইনালে ওঠার লড়াইয়ে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ডের বিপক্ষে নামবে রোহিত শর্মার দল।   

সম্পর্কিত খবর