বাংলাদেশের বিপক্ষে জয়, এরপর সেমিফাইনালে চলে আসা… পুরো বিষয়টার ৪৮ ঘণ্টা পেরোনোর আগেই আরও একবার মাঠে নামতে হচ্ছে রশিদ খানের আফগানিস্তানকে। এই ম্যাচে আরও এক ইতিহাস হাতছানি দিয়ে ডাকছে আফগানদের। ফাইনালের ইতিহাস, এই ম্যাচ জিতলেই যে প্রথম বারের মতো ফাইনালে চলে যাবেন রশিদ খানরা!

দলটার ইতিহাসটা বেশ চমকপ্রদ। আজ থেকে বিশ বছর আগে তারা প্রথম অফিসিয়াল ম্যাচটা খেলেছিল এসিসি ট্রফিতে। তার বিশ বছর পরই তারা অবিশ্বাস্যভাবে চলে গেছে টুর্নামেন্টের সেমিফাইনালে। তাও আবার ইতিহাসের সবচেয়ে বড় বিশ্বকাপের মঞ্চে। 

২০ বছরে দলটা যা করেছে, অন্য যে কোনো দল এটা অর্জন করতে ৫০ বছর লাগিয়ে ফেলার কথা। আফগানরা এই কাজটা করেছে নিখাদ প্রতিভার সঙ্গে দক্ষতা আর মানসিকতার মেলবন্ধন ঘটিয়ে। এমনটা হওয়ারই ছিল। বিশ্বজুড়ে টি-টোয়েন্টি লিগে শেষ কয়েক বছরে আফগান খেলোয়াড়দের জয়জয়কার জানান দিচ্ছিল, আফগানরা ঠিক পথেই আছে। এই বিশ্বকাপের সেমিফাইনাল খেলা প্রমাণ দিল এবার। 

তবে তাদের সামনে যে দল, তাদের কথা ভুলে গেলে কি চলবে? মোটেও না। দক্ষিণ আফ্রিকাও তো দাঁড়িয়ে আছে ইতিহাসের দুয়ারে! ১৯৯৮ চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিটা হচ্ছে প্রোটিয়াদের ট্রফিকেসে সবশেষ ট্রফি। এরপর থেকে দলটা আইসিসি ইভেন্টগুলোর সেমিফাইনালে খেলেছে ১০ বার। কিন্তু তার একবারও দলটা জিততে পারেনি। আগামীকাল সকালে ১১তম বারের মতো যখন দলটা নামবে সেমিফাইনালে, তখনও কি অতীত এসে আগলে দাঁড়াবে দক্ষিণ আফ্রিকার পথ?

আফগানিস্তান তাই চাইবে নিশ্চয়ই। নিজেদের ইতিহাস না থাকার একটা সুবিধা হচ্ছে, অতীতের কোনো দুঃস্মৃতিও নেই। সে বিষয়টা জানিয়ে আফগান কোচ জনাথন ট্রট একটা খোঁচাও দিলেন প্রোটিয়াদের। বললেন, ‘আমরা সেমিফাইনালে যাচ্ছি কোনো ইতিহাস ছাড়া, সেমিফাইনাল সম্পর্কিত কোনো দাগ ছাড়া।’

চাপটা দক্ষিণ আফ্রিকার ওপর থাকবে বেশ। তবে সে চাপ জয় করার রসদও বুঝি আছে দলটার। এই পর্যন্ত এবারের বিশ্বকাপে সবচেয়ে বেশি রোমাঞ্চকর ম্যাচ উপহার দিয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকা। শ্রীলঙ্কা, বাংলাদেশ, নেদারল্যান্ডস, নেপাল, যুক্তরাষ্ট্র, ওয়েস্ট ইন্ডিজ আর ইংল্যান্ড… সবার বিপক্ষেই কমবেশি স্নায়ুর পরীক্ষা দিয়ে জিততে হয়েছে তাদের। আর তাতেই এই দলটাকে নিয়ে নিয়ে দেখা যাচ্ছে সম্ভাবনা। অতীতের ‘চোকার্স’ অপবাদ ঘোচানোর সম্ভাবনা। 

শেষ পর্যন্ত ইতিহাসটা কোন দল গড়বে, দক্ষিণ আফ্রিকা নাকি আফগানিস্তান, সে প্রশ্নের উত্তরের জন্য আপনাকে অপেক্ষা করতে হবে আরও কমপক্ষে ১৮ ঘণ্টা।