প্রতিশোধ না পুনরাবৃত্তির মঞ্চ গায়ানা
সবশেষ অস্ট্রেলিয়ায় অনুষ্ঠিত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে মুখোমুখি হয়েছিল ইংল্যান্ড-ভারত। অ্যাডিলেডে হওয়া সেই ম্যাচে ভারতকে ১০ উইকেটে বড় ব্যবধানে হারিয়ে ফাইনালে উঠেছিল ইংল্যান্ড। এরপর জিতেছিল বিশ্বকাপ ট্রফিটাও। আরও একটা বিশ্বকাপ, ফাইনালে উঠার মঞ্চ; যেখানে ভারতের বিপক্ষে প্রতিপক্ষ সেই ইংল্যান্ড।
স্বাভাবিকভাবেই ম্যাচটা ভারতের জন্য প্রতিশোধের। অ্যাডিলেডে হারের দুঃখ গায়ানায় ভুলতে চায় রোহিত শর্মার দল। অন্যদিকে ইংল্যান্ডের চাওয়া পুনরাবৃত্তি। ভারতের বিপক্ষে জয় তুলে টানা দ্বিতীয় বিশ্বকাপ শিরোপা জেতা। এমন লক্ষ্যে আজ রাত সাড়ে ৮ টায় মাঠে নামছে দু’দল। গায়ানার মঞ্চটা প্রতিশোধের না পুনরাবৃত্তির সেই উত্তর মিলবে সেখানেই।
এবারের বিশ্বকাপে এখন পর্যন্ত গায়ানা প্রভিন্সে ম্যাচ হয়েছে মোট ৫টি। যেখানে বড় রানের আভাস মিলেছে। যদিও এই মাঠে প্রতিপক্ষ দলগুলো ছিল আইসিসির সহযোগী দেশ। তবে বড় দলগুলোর মধ্যে এই মাঠে মুখোমুখি হয়েছিল আফগানিস্তান-নিউজিল্যান্ড। যেখানে আগে ব্যাট করে ১৫৯ রান করে আফগানরা। যার জবাবে ৭৫ রানে অলআউট হয়ে যায় নিউজিল্যান্ড। এছাড়াও এবারের বিশ্বকাপে উগান্ডার বিপক্ষে এই মাঠে ১৮৩ রান তুলেছিল আফগানিস্তান। তবে এই মাঠের সর্বোচ্চ রানটা ইংল্যান্ডেরই। ২০১০ সালে এই মাঠে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ১৯১ রান তুলেছিল ইংলিশরা। আর এই মাঠে ভারতের সর্বোচ্চ সংগ্রহ ১৬৪। গত বছর ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে এসে এই রান করেছিল দলটি।
কাজেই এই মাঠে ব্যাটারদের সামনে যে কঠিন পরীক্ষায় দিতে হবে বোলারদের সেটা পরিষ্কার। সেই পরীক্ষায় অবশ্য ভারতেরই এগিয়ে থাকার কথা। কেননা, বিশ্বকাপে ইংলিশ বোলারদের চেয়ে উইকেট তোলার বিচারে বেশ এগিয়েই আছে ভারতীয় বোলাররা। এক আরশদীপ সিংয় শিকার করেছেন ৬ ম্যাচে ১৫ উইকেট। ফজলহক ফারুকীর ১৭ উইকেটের পর যা টুর্নামেন্টের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। অরশদীপ এই ম্যাচে অপেক্ষায় আছেন ফারুকীকে ছাড়িয়ে যাওয়ার। ভারতের আরেক তারকা পেসার জাসপ্রিত বুমরাহর উইকেট সংখ্যা ১১টি। এ তালিকায় ইংলিশদের মধ্যে সবচেয়ে এগিয়ে পেসার জোফরা আর্চার। তার উইকেট সংখ্যা ৯টি। তার সমান উইকেট আদিল রাশিদেরও।
তবে এই ম্যাচে গুরুদায়িত্বটা থাকবে দুই দলের দুই ওপেনার ও অধিনায়ক জশ বাটলার ও রোহিত শর্মার। দু’জনেই আছেন দারুণ ছন্দে। দু’জনেরই রান সমান ১৯১। রোহিত যদিও এক ইনিংস কম খেলেছেন বাটলারের থেকে। স্ট্রাইকরেটও একই সমান ১৫৯। তাই এই দু’জনের মধ্যেও চলবে লড়াইটা। আর এই লড়াইয়ে যে এগিয়ে যাবে জয়টা যে তারাই পেতে যাচ্ছে তা বলার অপেক্ষা রাখে না।
অবশ্য এই দু’দলের পরিসংখ্যান জানাচ্ছে কোনো দলকে এককভাবে এগিয়ে রাখার সুযোগ নেই। কেননা, এ দু’দল এখন পর্যন্ত মোট ২৩টি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলেছে যার মধ্যে ভারতের ১২ জয়ের বিপরীতে ১১ জয় আছে ইংল্যান্ডেরও। তাই লড়াইটা যে হতে যাচ্ছে সেয়ানে সেয়ানে তা বলায় যা। তবে সমস্যা হলো ম্যাচের সময় বেশ ভালোই বৃষ্টির সম্ভাবনা আছে।
আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে ৭০ শতাংশ সম্ভাবনা আছে বৃষ্টির। যা অবশ্য দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে ইংল্যান্ডের জন্য। ভারত অবশ্য আছে স্বস্তিতেই। কেননা, কোনো কারণে বৃষ্টিতে ম্যাচটি পরিত্যক্ত হলে রিজার্ভ ডে না থাকায় দু’দলের মধ্যে যেই দল এখন পর্যন্ত টুর্নামেন্টে এগিয়ে রয়েছে তাদেরকে তুলে দেওয়া হবে ফাইনালে। আর এখানটাতেই এগিয়ে ভারত। এখন পর্যন্ত কোনো ম্যাচেই হারেনি তারা। অন্যদিকে ইংল্যান্ড হেরেছে অজিদের বিপক্ষে।