মিলারের আউট নিয়ে বিতর্ক, ভারতের হাতে বিশ্বকাপ তুলে দিয়েছে আইসিসি!
এবারের বিশ্বকাপে নানা কারণেই বিতর্কিত ভারত। অনেকে তো বলেই দিয়েছেন এই টুর্নামেন্টটা আয়োজনই করা হয়েছে ভারতকে বিশ্বকাপ জেতাতে। যেই জন্য টুর্নামেন্টের গ্রুপপর্ব, সূচি, ম্যাচ ভেন্যু থেকে শুরু করে সব কিছুই আগে থেকে পরিকল্পনা করে সাজানো হয়েছে। আর এসব কথা সাধারণ কেউ বলেনি, বলেছেন ইংল্যান্ডের সাবেক অধিনায়ক ও ধারাভাষ্যকার, মাইকেল ভন, ডেভিড লয়েড, ইনজামামুল হক, ক্রিস গেইলরা।
আইসিসির কাছ থেকে ভারতের বাড়তি সুবিধা পাওয়ার কথা স্বীকার করছেন ভারতের খ্যাতনামা ধারাভাষ্যকার সঞ্জয় মাঞ্জরেকারও। আইসিসি থেকে কোনো দল যখন বাড়তি সুবিধা পাবেন; তাদের বিশ্বকাপ জয় নিয়ে তো প্রশ্ন থাকবেই। দক্ষিণ আফ্রিকাকে ৭ রানে হারিয়ে ভারতের বিশ্বকাপ জয় নিয়েও তাই প্রশ্ন উঠেছে। তবে এবার ভারতকে বিতর্কিত হতে হচ্ছে ম্যাচের শেষ ওভারে ডেভিড মিলারের নেওয়া সূর্যকুমার যাদবের ক্যাচের জন্য।
শেষ ওভারে ম্যাচ জিততে দক্ষিণ আফ্রিকার তখন প্রয়োজন ১৬ রান। ব্যাটিংয়ে আছেন ‘কিলার’ খ্যাত মিলার। ম্যাচটা তাই দুলছে পেন্ডুলামের মতো। তাছাড়া আগের দুই ওভারে মিলার অপেক্ষা করে আছেন হার্দিকের জন্য। সেই হার্দিককে প্রথম বলে উড়িয়েও মেরেছিলেন মিলার। তবে সেটি সীমানা দড়ি পেরোইনি। লং অফে উড়িয়ে মারা শটটি সীমানা দড়ির খুব কাছ থেকে ধরে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বল ছেড়ে দিয়ে মাঠের বাইরে চলে যান সূর্য। পরে শরীর নিয়ন্ত্রণে এনে ফের মাঠে ঢুকে বলটি ধরেন তিনি। সঙ্গে সঙ্গে আঙুল উঁচিয়ে দেখান আউটের সিগনাল। খালি চোখে এই ক্যাচ নিয়ে বিতর্কের সুযোগ খুব কমই।
তবে বিতর্কের সুযোগটা করে দিয়েছে আইসিসি। কেননা, রিপ্লে পরীক্ষা করে মিলারকে আউটের সিদ্ধান্ত জানানোর আগে যথেষ্ট সময় নেননি আম্পায়ার। আউট দেওয়ার সময় সীমানা দড়ির দিক থেকে দেখানো হয়নি ক্যামেরার অ্যাঙ্গেল। সূর্যের পায়ের এ পাশ থেকে বার বার দেখানো হয়েছে আউটটি। এ পাশ থেকে বার বার দেখানো গেলে সীমানা দড়ির অপর পাশ থেকে একবারও কেন দেখানো হলো না; তা নিয়েই বিতর্ক হচ্ছে এখন।
যা নিয়ে ভক্ত মনে তৈরি হয়েছে সংশয়। তাহলে কি মিলার আসলে আউট ছিলেন না। কোনোভাবে সীমানা দড়ি স্পর্শ করেছিল সূর্যের পা। তাছাড়া রিপ্লেতে সীমানা দড়িটিও কিছুটা সরে গেছে বলে দেখা যাচ্ছিল। কারণ ঘাসের ওপর বাউন্ডারি লাইনে সাদা দাগ স্পষ্ট হয়ে ফুটে উঠছিল রিপ্লেতে। আর সেই দাগের ওপরই পা ছিল সূর্যকুমারের, যা এই আউট নিয়ে বিতর্ক আরও উসকে দিচ্ছে।
কেননা, আইসিসির ১৯.৩.২ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, ‘সীমানা চিহ্নিত করতে ব্যবহৃত কোনো কঠিন বস্তু যদি কোনো কারণে বিঘ্নিত (সরে যায়) হয়, তাহলে যত দ্রুত সম্ভব তা ঠিক করতে হবে। খেলা চলতে থাকলে বল ডেড হওয়ামাত্রই এ কাজ করতে হবে।’
আর এই নীতিমালার স্পষ্ট লঙ্ঘন ঘটেছে ম্যাচটিতে। বাউন্ডারি লাইন সরে আসা হলেও তা পূর্বের জায়গায় ঠিক করা হয়নি। যা নিয়েই আইসিসির দিকে এখন আঙুল তুলছে সমর্থকরা। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে হচ্ছে নানা বিতর্ক। যেখানে অনেকেরই দাবি আইসিসি ইচ্ছে করেই ভারতকে শিরোপা জেতাতে এমনটি করেছে। নয়তো মিলারের ওই শটটিতে ৬ রান পেতো পারত দক্ষিণ আফ্রিকা। আর তা হলে ম্যাচটাও জিততে পারত তারাই, সঙ্গে বিশ্বকাপটাও। যা তাদের কাছ থেকে কেড়ে নেওয়া হয়েছে বলেই দাবী ভারতের সমালোচকদের।