লক্ষ্ণৌতে ফিরল কলকাতা, ইংলিশদের উড়িয়েই দিল ভারত
আগের রাতে কলকাতার স্বর্গোদ্যানে যা হলো, পরের দিন লক্ষ্ণৌতে তার ঠিক পুনরাবৃত্তিই হলো যেন। শুধু জয়ী আর বিজিতের নামগুলো বদলে গেল এই যা! কলকাতায় নেদারল্যান্ডস বাংলাদেশকে লক্ষ্য দিয়েছিল ২৩০ রানের। তার জবাব দিতে গিয়ে ব্যাটিং ব্যর্থতার গল্প লিখে সাকিব আল হাসানরা ম্যাচটা হেরেছিলেন ৮৭ রানে। লক্ষ্ণৌতে নেদারল্যান্ডসের জায়গায় বসল ভারতের নাম, আর বিজিত বাংলাদেশের জায়গাটা নিল ইংল্যান্ড। ভারত ইংলিশদের দিল সমান ২৩০ রানের লক্ষ্য। সে রান তাড়া করতে গিয়ে ইংল্যান্ড মুখ থুবড়ে পড়ল। ১২৯ রানে অলআউট হয়ে ম্যাচটা হারল ঠিক ১০০ রানে।
এবারের বিশ্বকাপে প্রথম ম্যাচটা বাদে ভারত তেমন চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েইনি। শুরুর ম্যাচে বিরাট কোহলি আর লোকেশ রাহুল বিপদ থেকে উদ্ধার করেছিলেন দলকে, অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে পরে দাপুটে জয়ই পায় দল। ইংল্যান্ডের বিপক্ষেও আজ একই রকম পরিস্থিতিতে পড়ে যায় ভারত। তবে পার্থক্যটা এই যে, সেদিন উদ্ধার পেয়েছিল দলটা, আজ পায়নি।
পাঁচ ম্যাচে এক জয় নিয়ে পয়েন্ট টেবিলের তলানিতে থাকা ইংল্যান্ড ভারতের ওপর শুরু থেকে কেমন ছড়ি ঘুরিয়েছে, তা পরিস্কার হয়ে যায় একটা তথ্যে। পাঁচ থেকে ১০ এই ছয় ওভারে ভারত রান তুলেছে মোটে ৯টি, ডট বল খেলেছে ৩১টি। ২০০৭ সালের পর থেকে শেষ ১৬ বছরে পাঁচ থেকে দশ ওভারে এত কম রান আর কখনোই নেয়নি ভারত।
পাওয়ারপ্লে থেকে আসে মোটে ৩৫ রান। সঙ্গে শুভমান গিল আর বিরাট কোহলির উইকেট খুইয়ে। পাওয়ারপ্লের একটু পর মার্ক উডের শর্ট বলে উইকেট দিয়ে আসেন শ্রেয়াশ আইয়ারও। ভারতের বিপদটা বাড়ে আরও। উইকেটে মাত্র আসা লোকেশ রাহুল আর ওপেনার রোহিত বাদে যে আর 'ভরসা করার মতো' ব্যাটার নেই মাঠের বাইরে!
ভরসা পাবে কী করে? সূর্যকুমার যাদব টি-টোয়েন্টিতে অতিমানবীয় হলেও ওয়ানডে ক্রিকেটটা এখনো ঠিক বুঝে উঠতে পারেননি যেন, গড় মোটে ২৬। আর রবীন্দ্র জাদেজা তার সবশেষ ওয়ানডে ফিফটিটা পেয়েছিলেন সেই ২০২০ সালে। তাদের ওপর আর যাই হোক, ৩০ ওভারের দায়িত্ব ছেড়ে দিয়ে নিশ্চিন্ত থাকা যায় না। যা করতে হতো, তা রোহিত আর রাহুলকেই।
দুজন মিলে তা কিছুটা করলেনও। চতুর্থ উইকেটে যোগ করলেন ৯১ রান। রোহিত ছুঁলেন ফিফটি। ওল্ড স্কুল ফ্যাশনে শুরুতে থিতু হয়েছেন, হাত খুলছেন ফিফটির পর। তবে তখনই লোকেশ রাহুলের বিদায় দলকে বিপদে ফেলে দেয় আবারও। রোহিত বিদায় নেন সেঞ্চুরির আগে।
সূর্যকুমার কিছুটা লড়লেন, জাদেজা তাও পারলেন না। তার ফল যা হওয়ার, হলোও তাই। ভারতের রানটা আড়াইশোও পেরোলো না। আটকে গেল ২২৯ রানেই।
টানা তিন হারের পর এই লক্ষ্য পেয়ে ইংলিশ শিবিরে জয়ের আশাই জেগে উঠেছিল। কিন্তু ব্যাটিং ব্যর্থতা আবারও দলটির পথ আগলে দাঁড়িয়েছে। দুই ওপেনার দাভিদ মালান আর জনি বেয়ারস্টো দলকে ৩০ রানের জুটি এনে দিয়েছিলেন। এরপর দলটা পথ হারিয়েছে। জো রুট, বেন স্টোকস ফিরেছেন রানের খাতা খোলার আগেই, আর জস বাটলার করেছেন মোটে ১০। ৫২ রানে পাঁচ উইকেট খুইয়ে তাতেই ইংলিশরা চলে যায় খাদের কিনারে।
এরপর ইংলিশরা আর ফিরতে পারেনি। পরের পাঁচ উইকেটে রান বেশি তুলেছে বটে, কিন্তু তা দলকে জেতানো তো দূরে থাক, প্রতিদ্বন্দ্বিতা গড়ার মত অবস্থানেও নিয়ে যেতে পারেনি। ইংলিশরা অলআউট হয় ১২৯ রানে। ভারত ম্যাচটা জেতে ১০০ রানে।