‘ইপিএল-টনিকে’ ডাচদের ইংল্যান্ড-বধের হুঙ্কার
‘তোমারে বধিবে যে, গোকুলে বাড়িছে সে’ – রাজা কংসকে কথাগুলো বলেছিলেন তৎকালীন জ্যোতিষেরা, তারই রাজ্যে তার ভবিতব্য হন্তারক শ্রীকৃষ্ণের বেড়ে ওঠা নিয়ে ছিল এই ভবিষ্যদ্বাণী। অবস্থাদৃষ্টে এবারের ইউরোকেও মনে হচ্ছে মহাভারতের ওই যুদ্ধক্ষেত্রই।
কীভাবে? চলুন দেখে নেই। সেমিফাইনালে মুখোমুখি হবে ইংল্যান্ড আর নেদারল্যান্ডস। ডাচদের স্কোয়াডের ৭ জন গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড় খেলছেন ইংল্যান্ডেরই গোকুলে! এবার ভবিষ্যদ্বাণীটা আর জ্যোতিষীদের কাছ থেকে আসেনি। হুঙ্কারটা ছাড়লেন খোদ ডাচ খেলোয়াড়রাই।
সোমবার ডাচ ডিফেন্ডার মিকি ভ্যান ডি ভেন বলেছেন, ডাচ-ইংল্যান্ডের সেমিফাইনালে শক্তিশালী প্রভাব হিসেবে থাকবে প্রিমিয়ার লিগ। এর কারণ হিসেবে তিনি জানালেন, ইংলিশ স্কোয়াডের বেশিরভাগই খেলোয়াড়ই প্রিমিয়ার লিগে খেলে থাকেন। এদিকে ডাচ দলের ৭ জন প্রিমিয়ার লিগের নিয়মিত খেলোয়াড়। ডাচ ডিফেন্ডার মনে করিয়ে দিলেন দুই দলের খেলোয়াড়দের সক্ষমতার কথাও।
টটেনহ্যাম হটস্পারের ডাচ ডিফেন্ডার বলেন, ‘আমি আশা করছি ইংল্যান্ডের থেকে বেশি সময় বল আমাদের দখলে থাকবে। তবে আমরা একটি ভালো ম্যাচ দর্শকদের উপহার দিতে চাই। আমরা জানি যে ইংলিশ মিডিয়া আমাদের সমালোচনা করার জন্য বসে আছে। তবে আমি তাদের মনে করিয়ে দিতে চাই ইংল্যান্ড এখন সেমিতে... তাদের এখন ইংলিশদের নিয়ে ভাবা উচিত।’
নেদারল্যান্ড দলের খেলোয়াড় কোডি গ্যাকপো খেলেন প্রিমিয়ার লিগের শীর্ষ সারির দল লিভারপুলের হয়ে। তার কণ্ঠেও ঝরে পড়ল একই সুর। তিনি জানালেন, বুধবার তিনি একটি কঠিন লড়াইয়ের আশা করছেন দুইদলের মধ্যে। ডাচ এই খেলোয়ার শেষ দুই মৌসুমে প্রিমিয়ার লিগে খেলে আসছেন। সেখানে তাকে অ্যাটাকিং ভূমিকায় খেলতে বাধ্য করা হয়ে ছিল। কিন্তু এবারের ইউরোতে কোডি তার সেরাটা দেখিয়েছেন লেফট উইংয়ে। এবারের আসরে তার তিনটি গোল তাকে বানিয়েছে টুর্নামেন্টের যৌথ ভাবে সর্বোচ্চ গোলদাতা।
গ্যাকপো বলেন, ‘আমি লিভারপুলে এক ভাবে খেলেছি। তবে গত দেড় বছরে কোচ আমাকে ভিন্ন কোথাও খেলাতে চেয়েছেন। আমি সবখানেই আমার সেরাটা দিতে চাই। আমি মনে করি আমার খেলোয়াড়ী জীবনে অনেক পরিবর্তন হয়েছে। বড় বড় ক্লাবে আমার খেলার অভিজ্ঞতা আছে। আমি অসাধারণ দর্শক দেখেছি। বেশ কিছু ভালো খেলোয়াড়রা সাথে আমি একই দলে খেলেছি।’
গ্যাকপোর অভিমত, লিভারপুলে যোগ দিয়ে জীবনটাই বদলে গেছে তার। তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি আমার জীবনে অনেক কিছু বদলে গেছে, দেশ বদলে লিভারপুলে চলে আসার পর। অনেক বড় একটা ক্লাব, এখানকার সমর্থকরা অনেক ভালো, আমার চারপাশে দারুণ সব খেলোয়াড় আছেন। আমি ম্যানেজার ক্লপের কাছ থেকে অনেক কিছু শিখেছি। এটা আমাকে মানুষ আর খেলোয়াড় হিসেবে আরও ভালো হয়ে উঠতে সাহায্য করেছে। আমি যে কাজটা করেছি, তাতে আমি বেশ খুশি।’
তার ফলটা আপনি দেখতেই পাচ্ছেন। গেল বিশ্বকাপে নিজের আগমনী বার্তা জানিয়েছিলেন গ্যাকপো, এবারের ইউরোয় পাদপ্রদীপের আলোতেই চলে এলেন। তার সূত্র ধরে এবার নিশ্চয়ই ইংল্যান্ডকেও বধ করতে চাইবেন।