মেসি-আলভারেজে ভর করে কোপা আমেরিকার ফাইনালে আর্জেন্টিনা
সেমিফাইনালের মঞ্চে লিওনেল মেসি আর হুলিয়ান আলভারেজ আলো কেড়ে নিলেন। এমন দৃশ্য আপনি আগেও দেখেছেন; ২০২২ বিশ্বকাপে হয়েছিল এমন কিছু। সেই দুজন আবারও পাদপ্রদীপের আলো কেড়ে নিলেন সেমিফাইনালে, এবার মঞ্চটা কোপা আমেরিকার। তাদের গোলে ভর করে কানাডাকে আর্জেন্টিনা হারিয়েছে ২-০ গোলে। তাতে আরও এক কোপা আমেরিকার ফাইনালে চলে গেছে আলবিসেলেস্তেরা।
স্কোরলাইন যতটা বলছে, আর্জেন্টিনার জয়টা ততটা সহজ ছিল না। শুরুর দিকে বেশ কিছু আক্রমণ হজম করতে হয়েছে তাদের। যা কানাডা কাজে লাগাতে পারলে গল্পটা অন্যরকমও হতে পারত। তবে পরিস্থিতিটা বদলে যায় আলভারেজ-জাদুতে। ২২ মিনিটে মাঝমাঠ থেকে লং বল তার কাছে পাঠিয়েছিলেন রদ্রিগো দি পল। সে বলটায় প্রথম পা ছুঁইয়ে দুই ডিফেন্ডারকে ছিটকে দেন, পরের ছোঁয়াতে গোলরক্ষককে ফাঁকি দিয়ে তা পাঠান জালে।
নড়বড়ে শুরুর পর আর্জেন্টিনার ধাতস্থ হয়ে ওঠার রাস্তা গড়ে দেয় ওই গোলটাই। প্রথমার্ধে এর আগে পরে আলবিসেলেস্তেরা এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ আরও অনেক পেয়েছে। মেসিই তো তিনটে সুযোগ পেয়েছেন। তিনি আজ ছিলেন স্বরূপে। ডান পাশে আনহেল দি মারিয়া আর বামে আলভারেজের সঙ্গে বোঝাপড়াটা দারুণ ছিল, বেশ কিছু পাসও বেরিয়েছে তা পা থেকে। কিন্তু দারুণ শট নিয়েও গোলের সুযোগগুলোকে কাজে লাগানো হচ্ছিল না তার। দুটো শট আর একটা চিপের প্রতিটিই বেরিয়ে গেছে বাইরে দিয়ে।
তবে মেসি তার কাঙ্ক্ষিত গোলের দেখাটা পেলেন এসে ৫১ মিনিটে। যদিও এই গোলের সিকিভাগ কৃতিত্বও তিনি নিতে চাইবেন কি না, সন্দেহ আছে। বক্সের একটু ভেতর থেকে এনজো ফার্নান্দেজের শটের পথে ছিলেন তিনি, তার পা ছুঁয়ে বলটা গিয়ে জড়িয়েছে জালে। তাতেই গোলটা লেখা হয়ে যায় তার নামে।
সেই দুই গোল আর্জেন্টিনাকে জয় পাইয়ে দেওয়ার জন্য যথেষ্টই ছিল। তবে অতীতের হিসেব ভাবনায় রাখলে কাজটা সহজ যে হবে না, তার আঁচ মিলছিল। সবশেষ বিশ্বকাপে দুবার দুই গোলের লিড খুইয়েছে দলটা, এবারের কোপায় সবশেষ ম্যাচটাও তো শেষ মুহূর্তে গোল খেতে হয়েছিল আর্জেন্টিনাকে। তাই শঙ্কা একটা ছিলই। শেষ দিকে যখন এমিলিয়ানো মার্তিনেজকে সেভ দিতে হলো গোটা দুয়েক শট, তার পর কানাডা স্ট্রাইকার তানি ওলুয়াসেয়ি হেডার মিস করলেন ফাঁকা পোস্টে, তখন তো সে শঙ্কা বাস্তব হওয়ার চোখরাঙানিই দিচ্ছিল! যদিও শেষমেশ এমি মার্তিনেজের বীরত্ব আর কানাডার অনভিজ্ঞতায় তা আর হয়নি।
সেসব নিয়ে ভাবনার সময় আছে। মায়ামির হার্ড রক স্টেডিয়ামে সে ম্যাচটা আগামী রোববার সকালে। তার আগে এখনকার সময়টা কেবলই উদযাপনের। লিওনেল মেসি-আনহেল দি মারিয়ারা আরও একটা ফাইনালে চলে গেছেন। শেষ এক দশকে মেজর ফাইনালে যা আর্জেন্টিনার ষষ্ঠ উপস্থিতি, কোচ লিওনেল স্কালোনির অধীনে যা হতে যাচ্ছে টানা তৃতীয় বারের মতো; আপাতত উদযাপন করার মতো উপলক্ষ তো বটেই। ফাইনালে চোখ রেখে সে আনন্দে আর্জেন্টিনা বুঁদ হয়েই গেছে, ‘আপাতত’!