স্পেনের ইতিহাস নাকি ইংল্যান্ডের প্রথম 

স্পেনের ইতিহাস নাকি ইংল্যান্ডের প্রথম 

আলফ রামসির কোচিংয়েই ১৯৬৬ সালে প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপ জেতে ইংল্যান্ড। এরপর থেকে জো মার্কার, ডন রেভি, রন গ্রিনউড, ববি রবসন, গ্রাহাম টেইলর, সভেন-গোরান এরিকসন...এবং সবশেষ গ্যারেথ সাউথগেট, কারো হাত ধরেই আরও কোনো বৈশ্বিক বা মহাদেশীয় কোনো শিরোপা জিততে পারেনি ইংলিশরা। ২০২০ ইউরোর আগে সেটিই ছিল বড় কোনো টুর্নামেন্টে ইংল্যান্ড একমাত্র ফাইনাল খেলা। এরপর ২০২০ ইউরোর ফাইনালে শিরোপা খরা কাটানোর অনেকটাই কাছে পৌঁছেছিল হ্যারি কেইনরা। তবে টাইব্রেকারে ইতালির কাছে হেরে হয়েছিল স্বপ্নভঙ্গ। আসরে ঘুরে ফের সেই স্বপ্নের দুয়ারে আরও একবার সাউথগেটের দল। ৫৮ বছরের শিরোপা খরা এবং ইউরোতে নিজেদের প্রথম শিরোপা জিততে তাই মরিয়া ইংলিশরা। 

এদিকে ইউরোর এবারের আসরের আরেক ফাইনালিস্ট স্পেন টুর্নামেন্টে জিতেছে রেকর্ড তিনটি শিরোপা। যদিও শীর্ষে তারা একা নয়। সমান তিনবার শিরোপা জিতেছে জার্মানিও। এতেই ফাইনালে ইংল্যান্ডকে হারাতে পারলেই এককভাবে চারবার শিরোপা জয়ে ইতিহাস গড়বে দে লা ফুয়েন্তের দলটি। 

আসরের শুরু থেকেই দারুণ ছন্দে আছে স্পেন। গ্রুপ অব ডেথে থেকেও (ইতালি, ক্রোয়েশিয়া ও আলবেনিয়ার গ্রুপে) গ্রুপপর্বে একমাত্র দল হিসেবে জিতেছে সবগুলো ম্যাচ। এছাড়াও কোয়ার্টার ফাইনালে, সেমিতে থামিয়েছে জার্মানি ও ফ্রান্সের মতো ফেবারিটদের। তাইতো আসর মাঝে নতুন ফেবারিটের তকমা লাগিয়ে শিরোপার অন্যতম দাবীদার যেন তারাই। 

তবে স্পেন কোচ ফাইনালে ফেবারিট মানছে না কাউকেই। তার কাছে দুই দলের সম্ভাবনা সমানে-সমান। ম্যাচপূর্ব সংবাদ সম্মেলনে এই প্রসঙ্গে ফুয়েন্তে বলেন, ‘এখানে কোনো ফেবাঁরিট নেই। দুই দল সমানে সমান। ঠিক আগের নক-আউট ম্যাচগুলির মতোই। আগের ম্যাচগুলির মতো খেলতে না পারলে এবং ভুল করলে আমাদের কোনো সুযোগ থাকবে না।’ 

শিরোপা জয়ের লড়াইটা তাই হতে চলেছে দারুণ রোমাঞ্চের। অনেকের কাছে সেই ২০১০-১২ সালের স্পেন দলের প্রত্যাবর্তন এটি। আবার ইংল্যান্ডের টানা দ্বিতীয় প্রচেষ্টায় হয়তো আর বৃথা যাবে না। অবশ্য উত্তর মিলে যাবে আর কয়েক ঘণ্টা বাদেই। 

এদিকে ইংল্যান্ড গ্রুপপর্বে কেবল একটি ম্যাচ জিতেই উঠে যায় শেষ ষোলোতে। পরে স্লোভাকিয়ার সামনেই পড়েছিল কঠিন পরীক্ষায়। শুরুতে গোল হজম করে ম্যাচের ৯০তম মিনিট পর্যন্তও সমতা ফেরাতে পেরেছিল না ইংল্যান্ড। তবে যোগ করা সময়ে বেলিংহাম-কেইনের নৈপুণ্যে সমতা এড়িয়ে জয়টায় নিশ্চিত করে ফেলে তারা। 

কোয়ার্টার ফাইনালে সুইজারল্যান্ডের সামনে বেশ ধুঁকতে হয়েছে ইংল্যান্ডকে। তবে টাইব্রেকারে জিতে উঠে যায় সেমিতে। এবার সেমিতে ডাচদের সামনে যেন নড়বড়ে হয়ে যায় কেইন-বেলিংহামদের আক্রমণ। ১-১ সমতায় ড্রয়ে একসময় তারা চাওয়া যেন ছিল কোনো ম্যাচ যাক অতিরিক্ত সময়ে। সেখানেই ত্রাতা হয়ে জয়ের নায়ক বনে যান অলি ওয়াটকিন্স। একদম শেষ মুহূর্তের সেই গোলে ২-১ ব্যবধান ম্যাচে জিতে ফাইনালে পৌঁছায় কেইন-সাকারা। 

চলতি আসরে স্পেনের পারফর্মের গ্রাফ যখন স্রেফ ওপরেই, সেখানে ইংলিশদের গ্রাফটা উঠা-নামা করেছে একাধিকবার। তবে কি ধুঁকতে ধুঁকতে জিততে থাকা গ্যারেথ সাউথগেটের দলটি ফেরাবে অলি রামসির ৫৮ বছর আগেই সেই সাফল্য! 

 

সম্পর্কিত খবর