ইউরো ফাইনালই স্পেনের হয়ে শেষ ম্যাচ নাভাসের 

ইউরো ফাইনালই স্পেনের হয়ে শেষ ম্যাচ নাভাসের 

২০০৮ থেকে ২০১২, এই সময়টা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে স্পেন ফুটবলের জন্য ছিল সোনালি সময়। ২০০৮ ইউরো, ২০১০ বিশ্বকাপ এবং ফের ২০১২ ইউরোর, টানা তিনটি বড় টুর্নামেন্টের শিরোপা জেতার রেকর্ড স্পেন ছাড়া আর নেই কারও। স্প্যানিশদের সেই দলের জাভি-ইনিয়েস্তা-ভিয়া-ক্যাসিয়াস সবাই ফুটবলটা ছেড়েছেন অনেক আগেই। অনেকেই তো এখন শুরু করে দিয়েছেন কোচিং ক্যারিয়ার। তবে স্প্যানিশদের সেই দলের একজন এখনও রয়ে গেছেন জাতীয় দলে। খেলছেন এবারের ইউরোতেও। জাতীয় দলের সেরা সময়ের রোমাঞ্চ উপলব্ধি করে আসা সেই জেসুস নাভাস এবার দিলেন অবসরের ঘোষণা। ইউরোর এবারের আসরের ফাইনাল ম্যাচ দিয়েই আন্তর্জাতিক ফুটবলকে বিদায় বলবেন এই ৩৮ বছর বয়সী তারকা ডিফেন্ডার। 

নাভাসের ক্যারিয়ারের গ্রাফটা মোটেও এক লাইনে ছিল না। শুরু দিকে তিনি খেলতেন উইঙ্গার হিসেবে। তবে সময়ের বিবর্তনে হয়ে উঠেন রাইট-ব্যাকের ফুটবলার। 

২০০৯ সাল থেকে ২০১৩ পর্যন্ত জাতীয় দলের হয়ে নিয়মিত ছিলেন তিনি। ছিলেন ২০১৩ কনফেডারেশন কাপে রানার্স-আপ হওয়া স্পেন দলেও। তবে জায়গা মেলেনি ২০১৪ ব্রাজিল বিশ্বকাপে। এমনকি জায়গা মেলেনি পরের পাঁচ বছরেও। পরের ২০১৯ সালে ফেরেন জাতীয় দলে। দ্বিতীয় দফায় আবারও তিন বছর দল বাইরে। এতে অনেকে ভুলেই বসেছিলেন নাভাসের নাম। হয়তোবা অনেকে ধরে নিয়েছিলেন আন্তর্জাতিক অঙ্গনে আর দেখা মিলবে না তার। 

তবে অনেকটা চমক দিয়ে গত বছর তাকে দলে ফেরান স্পেন কোচ দে লা ফুয়েন্তে। উদ্দেশ্য ছিল মূলত ২০২৪ ইউরো। সেখানে অনেকটাই সফলের পথে স্প্যানিশরা। তাই তো এমন ক্ষণেই নিজের বিদায় নির্ধারণ করে ফেললেন নাভাস। 

ফাইনালের ম্যাচপূর্ব সংবাদ সম্মেলনে অধিনায়ক আলভারো মোরাতার বদলে আসেন নাভাস। অনেকটা অনুমান করেই নেওয়া যাচ্ছিল কীসের ঘোষণা আসতে যাচ্ছে। হ্যাঁ, অনুমানটাই সঠিক। নিজের বিদায়ের সময়টাই জানিয়ে দিলেন নাভাস। 

কার্ড জটিলতায় সেমিতে খেলেননি দানি কারবাহাল, তবে ফিরতে চলেছেন ফাইনালে। এতেও ফাইনালে নাভাসকে রাইট ব্যাকে দেখতে পাওয়ার সম্ভাবনা বেশ কম। তবে কোচ হয়তো ভেবে রেখেছেন ভিন্ন কিছু! সেসব জল্পনা-কল্পনা উড়িয়ে নাভাস অবশ্য তৈরি নিজের শেষ মুহূর্তের জন্য। সংবাদ সম্মেলনে নিজের অবসরের ঘোষণা দিয়ে তিনি বলেন, ‘৩৮ বছর বয়সেও সবকিছু নিয়ে দারুণ রোমাঞ্চিত আমি। জাতীয় দলকে সহায়তা করা, দেশের হয়ে খেলা…তবে সিদ্ধান্তটা নিয়ে ফেলেছি (জাতীয় দল থেকে অবসরের)।’

২০০৯ সালের অভিষেকের পর ১৬ বছরে জাতীয় দলের হয়ে এখন পর্যন্ত ৫৬টি ম্যাচ খেলেছেন নাভাস। ফাইনালে সুযোগ পেলেও সেই সংখ্যাটা হয়তো দাঁড়াবে ৫৭-তে। ম্যাচের সংখ্যা ক্যারিয়ারের সময় বিবেচনা কিছুটা কমই। কেননা প্রায় ৯ বছরই যে ছিলেন দলের বাইরে। তবে এই বয়সে এসে জাতীয় দলের ফেরাটা এত সহজ ছিল না। তরুণ নির্ভর দলে একমাত্র ‘বুড়ো’ ফুটবলার। কঠিন পরিশ্রমেই এই সুযোগ পেয়েছেন নাভাস। জানালেন তিনি নিজেই। ‘এত এত বছর পর আবার এই পর্যায়ে আসতে পেরেছি মানে, নিশ্চয়ই অনেক কিছুই ঠিকঠাক করেছি আমি। এখন যদি শেষটা ভালো করতে পারি। গোটা দলের জন্যই এটা (ইউরো চ্যাম্পিয়নশিপ জয়) দারুণ হবে।’ 

সম্পর্কিত খবর