‘এই পরিস্থিতিটা কেবল আমরাই বদলাতে পারি’
বাংলাদেশের বিশ্বকাপটা প্রায় শেষই। শেষ বলতে সেমিফাইনালের আশা উবে গেছে। তবে খেলা বাকি আছে আরও তিনটি। কাল পাকিস্তানের বিপক্ষে যার একটি ম্যাচ। শেষ তিন ম্যাচ থেকে ইতিবাচক কিছু নিয়েই দেশে ফিরতে চায় এখন বাংলাদেশ। তবে তা আগে যে লেজেগোবরে পরিস্থিতিতে পড়েছে বাংলাদেশ, তা থেকে তো উঠে দাঁড়াতে হবে। অধিনায়ক সাকিব আল হাসান জানালেন, এ পরিস্থিতিটা বদলাতে পারে কেবল ক্রিকেটাররাই। আর দলের সবারই মগজে এখন খেলছে স্রেফ সে লক্ষ্য অর্জন করার ভাবনাই। সংবাদ সম্মেলনে সাকিব যা বলেছেন তা স্পোর্টস বাংলার পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হলো–
আপাতত লক্ষ্য সম্পর্কে–
লক্ষ্যটা হচ্ছে কালকের ম্যাচটা জেতা, নিজেদের সেরাটা দিয়ে ২ পয়েন্ট অর্জন করা। আমরা এ নিয়ে কথা বলেছিলাম, এ পরিস্থিতি থেকে কী করে পরিত্রাণ পাওয়া যায়। কিন্তু আমাদের এটা মাঠে করে দেখাতে হবে। মাঠে কিছু করে দেখাতে না পারলে কথা বলাটা খুবই সস্তা হয়ে যায়। আমরা এটা মাঠে করে দেখাতে চাই, কাজটাই যেন আমাদের এই পরিস্থিতি থেকে টেনে তোলে, আর সবাই যেন তা দেখতে পারে।
প্রতিপক্ষ পাকিস্তানের ফর্ম নিয়ে–
আমি এই মুহূর্তে কোনো দলকে কোনোভাবেই বিচার করতে চাই না। কালকে আমাদের খুব গুরুত্বপূর্ণ একটা ম্যাচ আছে, যা আমরা জিততে চাই। একই বিষয় পাকিস্তানের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য, তারাও ভালো করতে চায়। তো যে দল শ্রেয়তর ক্রিকেট খেলবে, তারাই জিতবে। আমরা চাইব আমরা যেন পাকিস্তানের চেয়ে ভালো ক্রিকেট খেলতে পারি, ম্যাচটা জিততে পারি।
দলের পরিস্থিতি বদলানো নিয়ে কি কথা হচ্ছে দলে?
পুরো দলই কথা বলেছে, এখন কী করা দরকার এ নিয়ে। এখনো অনেক কিছু বাকি আছে… চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির জন্য আমাদের জিততে হবে। এই মুহূর্তে এটাকেই আমরা গুরুত্বপূর্ণ লক্ষ্য হিসেবে দেখছি। এ ছাড়া আমাদের কোনো উপায়ই নেই। আমরা এখন এটাই করতে চাইছি। যার যার জায়গা থেকে তাদের নিজেকে মোটিভেট করতে পারে। ফর্মে ফেরার জন্য নিজে নিজেকে সাহায্য করতে হবে। ক্রিকেট যদিও একটা দলীয় খেলা, কিন্তু দিনশেষে ব্যক্তিগতভাবে আপনাকে পারফর্ম করতে হয়, এরপর সমষ্টিগতভাবে দল পারফর্ম করে। তো আমাদের সবারই দায়িত্ব যে আমরা কীভাবে নিজেকে মোটিভেট করব। কীভাবে নিজেকে ফেরাব, সেটা কেবল আমরাই পারি, আর আমাদেরই করতে হবে বিষয়টা।
সামগ্রিকভাবে বিশ্বকাপে এখন বাংলাদেশের লক্ষ্য–
কত ওপরের দিকে শেষ করা যায়, সেটা লক্ষ্য। যেটা প্রত্যাশা ছিল তা আমরা করতে পারিনি। তবে বাকি ম্যাচগুলো যা আছে, সেগুলো জিততে পারলেও তাহলে ওপরের দিকে শেষ করা যাবে স্বস্তি নিয়ে ফিরতে পারব। তখন আমরা রিফ্লেক্ট করতে পারব যে কী কী করলে বেটার হতো। সে জায়গা থেকে তিনটা গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ আছে, কালকে একটা। সেভাবেই আমরা ফোকাস করার চেষ্টা করছি।
নেদারল্যান্ডস ম্যাচের পর দলের প্রতিক্রিয়া–
ওইদিন আসলে সবাই খারাপ ফিল করেছে। তবে খারাপ ফিল করতে থাকলেই তো চলবে না। সামনে এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করতে হবে আমাদের। সবাই এটা করার চেষ্টা করেছি। সবাই মিলে আলাপ করেছি, ব্যক্তিগতভাবে আলাপ করেছি। যেটা করলে আমাদের বেটার কিছু হতে পারে বলে মনে হয়েছে, তাই করেছি।
এমন পরিস্থিতিতে টিম মিটিংয়ে কী কথা হয়?
একেকটা ইন্ডিভিজুয়ালের প্রসেস ভিন্ন ভিন্ন হয়। কেউ হয়তো তার ডিসমিসাল নিয়ে কথাই বলতে চায় না, আবার কেউ প্রসেস নিয়ে আলাপ করতে পছন্দ করে, কেউ হয়ত তার টেকনিক নিয়ে আলাপ করতে পছন্দ করে, কেউ আবার সে সময় তার মেন্টাল অবস্থা কী ছিল, তা নিয়ে আলাপ করতে পছন্দ করে। সেটা থেকে কীভাবে বের হওয়া যায়, সেটা চেষ্টা করে। আর কেউ যখন ভালো বল বা ব্যাট করে, তখন ওরা কী প্রসেসটা মেন্টেইন করলে ভালো করা যায়, ওটা মনে করিয়ে দেয়। একটা প্লেয়ার যখন ভালো করতে থাকে না, তখন সে প্রোসেসটা ভুলে যায়, আমরা যতই রিপিটেডলি কাজগুলো করে থাকি, তার পরও ওটা মানুষ ভুলে দেওয়া। প্র্যাকটিসে, ম্যাচে সব জায়গায় মনে করিয়ে দেওয়া, এই কাজগুলোই হয়ে থাকে মোর অর লেস।
কলকাতায় ম্যাচ খেলার অভিজ্ঞতা নিয়ে–
অন্তত আমাদের একটু ভালো ধারণা আছে। তবে আমরা যে ম্যাচটা খেলেছি, তা তো তারাও দেখেছে, তাতেই অনেক আইডিয়া হয়ে যায়। আসলে পিচ সম্পর্কে আইডিয়া পেতে ম্যাচ যে খেলতেই হবে, বিষয়টা এমন না। ম্যাচ দেখলেও আইডিয়া হয়। প্রতিদিন ভিন্ন ভিন্ন পিচে খেলা হয়, তো অবস্থা ভিন্ন হতেই পারে। ওইদিন এক পিচে খেলেছি, এখন খেলব অন্য পিচে। হয়ত কন্ডিশনটা পুরোপুরি ডিফ্রেন্ট থাকবে। তবে অন্তত একটু ধারণা তো আছে!