এক যুগ পর ইউরো শিরোপা স্পেনের

এক যুগ পর ইউরো শিরোপা স্পেনের

দুর্দান্ত এক গোল দিয়ে দলকে সমতায় এনেছিলেন ইংলিশ ডিফেন্ডার কোল পালমার। নিঃসন্দেহে এবারের ইউরো আসরের অন্যতম সেরা হিসেবে বিবেচিত হবে এই গোল। তবে তার এই দারুণ গোলটির যেন আর কোনো মূল্যই রইল না, কারণ দল তো শিরোপার খুব কাছে যেয়েও হেরে গেছে। শেষ পর্যন্ত ইংল্যান্ডকে ২-১ গোলে হারিয়ে ইতিহাস গড়ে ইউরো ২০২৪ এর শিরোপা তুলে নিল স্পেন। টুর্নামেন্টের একমাত্র দল হিসেবে এখন এই টুর্নামেন্টে চারটি শিরোপার মালিক এখন স্প্যানিশরাই।

আলফ রামসির কোচিংয়েই ১৯৬৬ সালে প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপ জিতেছিল ইংল্যান্ড। এরপর থেকে জো মার্কার, ডন রেভি, রন গ্রিনউড, ববি রবসন, গ্রাহাম টেইলর, সভেন-গোরান এরিকসন এবং সবশেষ গ্যারেথ সাউথগেট, কারো হাত ধরেই আর কোনো বৈশ্বিক বা মহাদেশীয় শিরোপা জেতা হলো না ইংলিশদের। ইউরো ২০২৪ আসরের ফাইনালে আজ স্পেনের কাছে ২-১ গোলে হেরে আবারও স্বপ্নভঙ্গ হলো ইংল্যান্ডের।

অপরদিকে ইউরোর এবারের আসরের শিরোপা তুলে ধরার মাধ্যমে স্পেন এই টুর্নামেন্টে জিতল রেকর্ড চারটি শিরোপা। আসরের শুরু থেকেই দারুণ ছন্দে ছিল স্পেন। গ্রুপ অব ডেথে থেকেও (যেখানে তাদের প্রতিপক্ষ ছিল ইতালি, ক্রোয়েশিয়া ও আলবেনিয়া) গ্রুপপর্বে একমাত্র দল হিসেবে তারা জিতেছে সবগুলো ম্যাচ। এছাড়াও কোয়ার্টার ফাইনালে, সেমিতে থামিয়েছে জার্মানি ও ফ্রান্সের মতো ফেভারিটদের। শিরোপার অন্যতম দাবীদার হিসেবেই এবারের আসরে অপরাজিত থেকে চ্যাম্পিয়ন হয়ে দেখাল লুইস দে লা ফুয়েন্তের দল।

বার্লিনের মাঠে আজ ফাইনালের শুরুটা ছিল কিঞ্চিত পানসে। ম্যাচের শুরুটা দেখে কেউ কল্পনাও করেনি যে এই ম্যাচের শেষভাগ এতটা জমজমাট রূপ নিবে। দুই দলের কেউই প্রথমার্ধে বড় কোনো গোলের সুযোগ তৈরি করতে পারেনি, গোলের দেখাও পায়নি। ১২তম মিনিটে প্রথম আক্রমণে যায় স্পেন, তবে ইংলিশ ডিফেন্ডারদের সুবাদে লক্ষ্যে শট করতে ব্যর্থ হন নিকো। ঠিক তার পরের মিনিটের প্রথমবারের মতো ক্রস করে গোলের সুযোগ বানিয়ে দেন ওয়াকার। তবে ডি-বক্সে তার সতীর্থ কেউই বল পায়ে পাননি। গোলশূন্য ড্র থেকেই শেষ হয় প্রথমার্ধ।

বিরতির পর যেন নতুন উদ্যমে মাঠে নামে স্পেন। নামার মিনিট দুয়েকের মধ্যেই ইয়ামালের বাড়ানো বল নৈপুণ্যের সঙ্গে জালে জড়ান উইলিয়ামস। এগিয়ে যায় স্পেন, একইসঙ্গে যেন জেগে উঠে তাদের মনোবল। পরপর কয়েকটি সুযোগ তৈরি করে তারা।

পাল্টা আক্রমণে যায় ইংল্যান্ড, একাধিকবার গোলের উদ্দেশ্যে এগিয়ে অবশেষে তারা সফল হয় ৭৩তম মিনিটে। ক্রস থেকে পাওয়া বল ডিফ্লেক্ট হয়ে ডি-বক্সের বাইরের দিকে চলে যায়। বেশ খানিকটা দূর থেকে দৌড়িয়ে এসে বল না থামিয়েই বা পায়ে মাটি ঘেষিয়ে দুর্দান্ত এক শট নেন ইংলিশ ডিফেন্ডার কোল পালমার। ব্যর্থ হন স্পেনের গোলরক্ষক। ১-১ সমতায় জমে ওঠে ম্যাচ!

দু'দলই এরপর পালাক্রমে আক্রমণ করতে থাকে। তবে ম্যাচের শেষভাগে যেন জ্বলে ওঠে স্পেন। একের পর এক আক্রমণে দিশেহারা করে তোলে ইংলিশ ডিফেন্ডারদের। ৮৬তম মিনিটে কুকুরেয়ার ক্রস থেকে জয়সূচক গোলটি করেন বদলি হিসেবে নামা ওয়ারজাবাল। শেষ কয়েক মিনিটে আর গোল শোধ দিতে না পারায় হারের হতাশা নিয়েই মাঠ ছাড়তে হয় ইংল্যান্ডকে।

ইংল্যান্ডের শিরোপার অপেক্ষা আরও দীর্ঘ হলো। ইংলিশ অধিনায়ক হ্যারি কেইনের ট্রফি উঁচিয়ে ধরার স্বপ্নটাও স্বপ্নই রয়ে গেল। অন্যদিকে দীর্ঘ ১২ বছর পর উয়েফা ইউরোর শিরোপা ঘরে তুলে নিয়েছে স্পেন।

সম্পর্কিত খবর