লাওতারোর গোলে রেকর্ড গড়ে আবারও কোপার চ্যাম্পিয়ন আর্জেন্টিনা

লাওতারোর গোলে রেকর্ড গড়ে আবারও কোপার চ্যাম্পিয়ন আর্জেন্টিনা

ম্যাচটা তখন অপেক্ষায় পেনাল্টি শ্যুটআউটের। পরিস্থিতিটা এমনি বলছিল। তবে লাওতারো মার্তিনেজের মনে ছিল অন্য কিছুর পরিকল্পনা। গোল করলেন ১১২ মিনিটে। তার ওই গোলে আর্জেন্টিনাকে আর পেনাল্টি শ্যুটআউট পর্যন্ত যেতেই হলো না। ওতে ভর করে ১-০ গোলে কলম্বিয়াকে হারিয়ে আবারও কোপা আমেরিকার চ্যাম্পিয়ন বনে গেল আর্জেন্টিনা। গড়ে ফেলল রেকর্ডও। কোপা আমেরিকায় এখন সবচেয়ে বেশি শিরোপা তাদের। প্রথম লাতিন আমেরিকান দল হিসেবে গড়ে ফেলল কোপা-বিশ্বকাপ-কোপা জেতার রেকর্ডও। 

ওই মুহূর্তটার আগ পর্যন্ত ম্যাচের হাইলাইটস ছিল ৬৬ মিনিটে উঠে গিয়ে লিওনেল মেসির কান্না। ৩৬ মিনিটে শুট করতে গিয়েছিলেন প্রতিপক্ষ বক্সে। তখন জনাথন মোহিকার বুটের স্পাইক লেগেছিল তার ডান পায়ে। এরপর মাঠে ফিরেও এসেছিলেন। কিন্তু দ্বিতীয়ার্ধে ওই মোহিকাকেই যখন আবার তাড়া করতে গেলেন, এবার আর হলো না। ক্যারিয়ারে প্রথম বারের মতো মাঠ ছাড়লেন কোনো ফাইনালের শেষ বাঁশির আগে। 

আগেভাগে রণে ভঙ্গ দেওয়ার পাত্র তিনি নন। সেই তিনি যখন মাঠ ছেড়ে গেলেন ফাইনালের মঞ্চে শেষ বাঁশির আগে, সেটা তারও অহমে লাগে। তারই বহিঃপ্রকাশ ঘটল যেন সঙ্গে সঙ্গে। ডাগআউটে গিয়ে বসলেন লিয়ান্দ্রো পারেদেস আর আলেহান্দ্রো গারনাচোর মাঝখানে। নিজেকে ধরে রাখতে পারলেন না আর। আষাঢ়ের শেষ দিনে দুচোখ ভেঙে বৃষ্টি নামল তার। 

সে বৃষ্টি থামল গিয়ে ১১২ মিনিটে। জিওভানি লো চেলসোর সঙ্গে লাওতারো মার্তিনেজকে অতিরিক্ত সময়ে মাঠে এনেছিলেন কোচ লিওনেল স্কালোনি। সেই দুজনের যুগলবন্দিতেই মিলল কাঙ্ক্ষিত সে গোলের দেখা। মাঝমাঠ থেকে তিনি বলটা বাড়ালেন লাওতারোকে। ডান প্রান্ত দিয়ে আক্রমণে ঢুকে করে বসলেন সে কাজটা, যা একজন প্রথাগত নাম্বার নাইন করেন। শক্তিশালী ডান পায়ে বলটা ছিল তার, কামান দাগালেন ফারপোস্টে। এর আগে আজ বহুবার আর্জেন্টিনার পথের কাটা হয়ে দাঁড়ানো কামিলো ভার্গাস পরাস্ত হলেন পুরোপুরি, বল গিয়ে আছড়ে পড়ল জালে।

লাওতারো গ্রুপ পর্বেই চার গোল করে বসেছিলেন। তবে নকআউটে জায়গা হারিয়েছিলেন। ফাইনালে এসে আবারও আলোটা কেড়ে নিলেন। সঙ্গে সঙ্গে দিয়ে দিলেন নিজের সামর্থ্যের প্রমাণও, আরও একবার। 

তার দিনে আরও দুই মার্তিনেজও আর্জেন্টিনাকে বহুবার তরিয়ে দিয়েছেন। বিশেষ করে শুরুর ৫০ মিনিটের আগ পর্যন্ত। ম্যাচের শুরু থেকে ওই পর্যন্ত কলম্বিয়া ত্রাস ছড়াচ্ছিল আর্জেন্টিনা রক্ষণে। তা সব বুক চিতিয়ে ফিরিয়ে দিচ্ছিলেন তারা। তা সবকিছু বৃথা যেত, যদি ম্যাচটা না জিতত আর্জেন্টিনা। লাওতারো তা হতে দেননি। তার গোলটা এল মোক্ষম সময়ে। তাতে মেসির চোখের কান্না মুছে গেল অবলীলায়, মেসি হাসলেন, আর্জেন্টিনা হাসল; আলবিসেলেস্তেরা হয়ে গেল কোপা চ্যাম্পিয়ন, আবারও।

সম্পর্কিত খবর