ক্রিকইনফোর একজন রবিন আব্রাহামস ছিলেন
বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় ক্রিকেটভিত্তিক ওয়েবসাইট ইএসপিএন-ক্রিকইনফো। ক্রিকেট প্রেমীদের যথাসময়ে খেলার তথ্য ও সংবাদ জানাতে পর্দার পেছনে অক্লান্ত পরিশ্রম করেন এই সাইটের অপারেটররা। এই ওয়েবসাইটের প্রতিষ্ঠাতা এবং নিয়ন্ত্রকদের মধ্যে অন্যতম একজন রবিন আব্রাহামস। গত পরশু (সোমবার) ৬৮ বছর বয়সে না ফেরার দেশে চলে গিয়েছেন এই ক্রিকেট বিশেষজ্ঞ।
ক্রিকেট বিষয়ক যেকোনো প্রশ্নের উত্তর তিনি বলে দিতে পারতেন মুহুর্তের মধ্যেই। ক্রিকেট খেলাটি সম্পর্কে তার জ্ঞ্যান ও জানার ভান্ডার ছিল বিশাল। ক্রিকেট বিষয়ে তাকে সবজান্তা বললেও ভুল হবে না।
স্মার্টফোন কিংবা এআইয়ের প্রজন্মের আগে থেকেই রবিন বিভিন্ন জটিল ক্রিকেটীয় হিসাব-নিকাশও কোনো মেশিনের সহায়তা ছাড়াই করে ফেলতেন। এখন যেমন প্রযুক্তির সাহায্যে রানরেট কিংবা ডিএলএস মেথডের হিসাব চোখের পলকেই করে ফেলা সম্ভব হয়, আগে এগুলো এতটা সহজ ছিল না। বেশিরভাগ ক্রিকেট বিশ্লেষকও যেখানে এসব হিসেব বের করতে গড়মিল করে ফেলতেন, সেখানে রবিন সঠিক হিসেবটাই সবাইকে প্রথমে জানিয়ে দিতেন।
এখন অটোমেটিক মেশিন বা প্রযুক্তির সাহায্যে খুব সহজে যেসব বড় হিসেব করে ফেলা হয়, অনেক বছর আগে রবিন ম্যানুয়ালি বা নিজের হাতে-কলমেই সেসব হিসেব বের করে ফেলতেন। ১৯৯০ দশকের মাঝামাঝি ক্রিকইনফোতে প্রাথমিকভাবে একটি খণ্ডকালীন ভিত্তিতে রবিন যোগ দিয়েছিলেন। তিনি একজন প্রশিক্ষিত শেফও ছিলেন।
বিশদ বিবরণের প্রতি রবিনের দৃষ্টি ছিল তুখোড়। বিশেষ করে স্কোরকার্ডের বিবরণ, হিসাব-নিকাশ ও বিন্যাসে তার সময়ে আর অন্য কেউ তার মতো তুখোড় ছিলেন না। ক্রিকইনফোর নিউজিল্যান্ড-ভিত্তিক ডিজাইনার টিম ম্যাককনেল বলেছেন, ‘ডিজিটাল যুগে আসা একজন ডিজাইনার হিসাবে রবিন আমাকে সার্ভার এবং প্রযুক্তিগত প্রক্রিয়া সম্পর্কে অনেক কিছু শিখিয়েছে।’
২০০৩ সালে Wisden.com-এর সাথে ক্রিকইনফোর একত্রিত হওয়ার পর রবিনকে নতুন কোম্পানির লাইভ-স্কোরিং অপারেশন, আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের ২৪-ঘন্টার নিরলস কাজ এবং কিছু ওয়েবসাইটের সঙ্গে জড়িত কিছু কাজের জন্য রাখা হয়েছিল।
রবিন প্রতিটি স্কোয়াড ঘোষণা, প্রতিটি খেলোয়াড়ের প্রোফাইল আপডেট, প্রতিটি অদ্ভুত পরিসংখ্যান ম্যানুয়ালি ইনপুট করতেন। নিজের কাজের প্রতি সেরাটাই ঢেলে দিতেন রবিন। তাই তো ক্রিকইনফোর প্রধান সম্পাদক সম্বিত বাল বলেছেন, ‘আমি রবিনের সাথে মাত্র কয়েকবার কথা বলেছি এবং মাত্র একবার তার সাথে দেখা করেছি। কিন্তু সারাক্ষণ আমি তার উপস্থিতি অনুভব করেছি।’