‘সাহসী’ সাকিবের এই রূপ বড় অচেনা

‘সাহসী’ সাকিবের এই রূপ বড় অচেনা

গ্লোবাল টি-টোয়েন্টি কানাডা লিগে মিসিসাগা বাংলা টাইগার্স আর টরন্টো ন্যাশনালসের খেলায় গ্যালারি থেকে বাংলাদেশি এক তরুণ দর্শক সাকিব আল হাসানকে প্রশ্ন করেছিলেন একটা। প্রশ্নের ভিতর মূল বক্তব্যটা এমন– দেশের ক্রান্তিকালে নির্যাতিত/নিহত ছাত্রদের পক্ষে কেন কিছুই বলেননি তিনি।

সাকিব কোনো উত্তর দেওয়া বা নিশ্চুপ থাকা তো দূরে, বিরক্ত হয়ে উল্টো প্রশ্ন করেছেন দর্শককে, ‘দেশের জন্য আপনি কি করছেন?’। সাকিবের সতীর্থ ও মাঠের নিরাপত্তা কর্মীদেরকে শুনিয়ে স্পষ্ট গলায় বলেছিলেন সে দর্শক ‘আমি আমার গলা উঁচু করে প্রতিবাদ করছিলাম, আমি তো আর এমপি না, আমি আমার পরিবারের দেখভাল করি।’ এমন কথাও বলছিলেন তিনি।  

পুরো ব্যাপারটায় সাকিবের ভূমিকা অবশ্যই বিস্ময়কর। তার উচিত ছিলো প্রশ্নটা এড়িয়ে যাওয়া অথবা নমনীয় কোনো জবাব দেওয়া। তা না করে বারংবার পাল্টা প্রশ্ন করা এমনকি সে দর্শককে শায়েস্তা করা যায় কি না সেই ব্যাপারে নিরাপত্তা কর্মীদের কাছে জানতে চাওয়া ছিলো তার ভূমিকা। শেষ কথাটা অবশ্য বেশ কড়া ভাষাতেই বলেছেন সে দর্শক, ‘তাহলে পদত্যাগ করছেন না কেন? নির্লজ্জ!’

সে দর্শক যে আওয়াজ তুলেছিলেন, তার মাঠে যাওয়া কিন্তু সাকিবের কারণেই। যে ক’জন বাংলাদেশিই গেছেন মাঠে সবাই গেছেন সাকিবের খেলা দেখতে অথবা তাকে সমর্থন দিতে। 

বাংলাদেশের কিশোর-তরুণ অথবা ছাত্র সমাজ থেকেই আসে সাকিবের ভক্তগোষ্ঠীর সবচাইতে বড় অংশটা। তাদের ভালোবাসা আর নিবেদিতপ্রাণ সমর্থন না পেলে ‘বাংলাদেশের জান’ হয়ে উঠতে পারতেন সাকিব আল হাসান? অবশ্যই না। 

তার প্রতি ছাত্র ছাত্রীদের আবদার অযৌক্তিক না। আবার, যে দলের তিনি এমপি সেই রাজনৈতিক দলের অবস্থানের বিপক্ষে যাওয়ার সাহসও নেই সাকিবের। অন্যভাবে বললে জাতীয় ক্রিকেট দলের চাইতে সংসদীয় দলের প্রতি তার আনুগত্য অনেক বেশি। এটা অবশ্যই তার নিজস্ব নীতির ব্যাপার। 

তবু, আজীবন মাইক্রোফোনের সামনে ডাউন দ্য উইকেট ব্যাট করা অথবা সাহসী সাকিবের এই রূপ তার ভক্ত-সমর্থকদের কাছে একেবারেই নতুন, অচেনা।

(লেখকের ফেসবুক থেকে সংগৃহীত)

ফরহাদ টিটো।। কানাডা প্রবাসী, সাবেক ক্রীড়া সাংবাদিক

সম্পর্কিত খবর