নারী টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ নিয়ে আইসিসির প্রস্তাব নাকচ বিসিসিআইয়ের
বাংলাদেশের চলমান পরিস্থিতি মাথায় রেখে মেয়েদের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ভারতে আয়োজন করার কথা ভাবছিল বিশ্ব ক্রিকেটের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক সংস্থা , আইসিসি। এ সম্পর্কিত একটা প্রস্তাবও ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড, বিসিসিআইয়ের কাছে রেখেছিল আইসিসি। তবে সেই প্রস্তাবকে ‘স্পষ্টভাবে’ না বলেছে বিসিসিআই।
ভারতীয় গণমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়াকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বিষয়টি নিয়ে কথা বলেন বিসিসিআই সেক্রেটারি জয় শাহ। তিনি বলেন, ‘তারা (আইসিসি) আমাদের জিজ্ঞাসা করেছে আমরা বিশ্বকাপ আয়োজন করব কি-না। আমি স্পষ্টভাবে না বলেছি।’
ভারতে এই মুহূর্তে চলছে বর্ষাকাল। সেটিকে মাথায় রেখেও এই প্রস্তাবে সায় দেয়নি বিসিসিআই। সেই প্রসঙ্গে জয় শাহ বলেন, ‘ভারতে এখন বর্ষাকাল। এছাড়া আমরা আগামী বছর মেয়েদের ওয়ানডে বিশ্বকাপ আয়োজন করব। এতে আমি এমন কোনো সংকেত দিতে চাই না যে আমরা একটানা বিশ্বকাপ আয়োজন করতে চাই।’
এদিকে ভারত প্রস্তাব নাকচ করে দেওয়ায় আইসিসির হাতে সুযোগ এখন শ্রীলঙ্কা বা সংযুক্ত আরব আমিরাতে টুর্নামেন্টটি আয়োজন করা। এবং ক্রিকেট বিষয়ক ওয়েবসাইট ইএসপিএনক্রিকইনফোর মতে, আইসিসি এই বিষয়টি নিশ্চিত করবে ২০ আগস্টের মধ্যেই। কেননা আসরটি শুরুর নির্ধারিত সূচি থেকে সময় আর নেই খুব একটা। আগামী ৩ অক্টোবর থেকে শুরু হবে মেয়েদের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের এবারের আসর।
আইসিসির বিকল্প ভেন্যু খোঁজা শুরু হয়েছে বাংলাদেশের চলমান পরিস্থিতিতে নিরাপত্তা ইস্যুকে ঘিরেই। সবশেষ ক্ষমতাসীন দল পতনের পর বাংলাদেশের এখন চলছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের যুগ। তবে দেশ সম্প্রতি সহিংসতা এবং আন্দোলনের পর অন্তর্বর্তীকালীন সরকার স্বাভাবিকভাবেই পার করছে চ্যালেঞ্জিং সময়। এতেই আসরটি বাংলাদেশ থেকে সরিয়ে নেওয়ার বিষয়টি জোরেশোরেই ভাবছে আইসিসি।
আইসিসির একজন কর্মকর্তা চলতি সপ্তাহের শুরুতে বলেছিলেন, বাংলাদেশের সবশেষ পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে এবং সব বিকল্প খোলা রাখা হয়েছে। আইসিসির এক বিবৃতিতে জানিয়েছিল, আইসিসি বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) তাদের নিরাপত্তা সংস্থা এবং আমাদের নিজস্ব নিরাপত্তা পরামর্শদাতাদের সাথে সমন্বয়ের মাধ্যমে বিষয়গুলো ঘনিষ্ঠভাবে পর্যবেক্ষণ করছে। এবং আমাদের মূল লক্ষ্য অংশগ্রহণকারীদের সব দলে নিরাপত্তা নিশ্চিত।
এদিকে শেষ মুহূর্তেও নিজ দেশের টুর্নামেন্টটি আয়োজনের চেষ্টা করে যাচ্ছে বাংলাদেশ। এমনকি বিষয়টি নিশ্চিত করতে প্রয়োজনে জাতিসংঘের সঙ্গে যোগাযোগ করা হবে বলেও জানান দেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া। তবে চ্যালেঞ্জটা মূলত অন্য জায়গায়। নিরাপত্তা ইস্যুতে ইতিমধ্যেই ভারত, ইংল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়ার সরকার বাংলাদেশে নিজেদের দল পাঠাতে নিরুৎসাহিত করেছে। যেটিই আসরটি আয়োজনে বিসিবির সামনে সবচেয়ে বড় বাঁধা।
চ্যালেঞ্জ আছে অন্য আরেক জায়গাতেও। বিসিবির সাবেক সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন সরকার পতনের পর থেকেই আছেন লোক চক্ষুর আড়ালে। কেননা তার পরিচয়টা ছিল রাজনীতির মাঠের। সবশেষ ক্ষমতাসীন দলের ক্রীড়ামন্ত্রীও ছিলেন তিনি। এদিকে রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ততার সূত্র ধরে গা ঢাকা দিয়ে আছেন বিসিবির বেশ কিছু পরিচালকও। এতে বিসিবির কার্যকরী অবস্থাটাও এখন কিছুটা নড়বড়ে। সব দিক বিবেচনা করেই তাই বিকল্প পথেই এগোচ্ছে আইসিসি।