বিসিবিতে পাপনের চেয়ারে তাহলে ফারুক

বিসিবিতে পাপনের চেয়ারে তাহলে ফারুক

৫ আগস্টের গণঅভ্যূত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর থেকেই গা ঢাকা দিয়েছেন বিসিবির সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন। তার কোনো খোঁজ নেই। তার সঙ্গে সঙ্গে বিসিবির বেশিরভাগ পরিচালকও নিখোঁজ। তারা কেউ বিসিবিতে আসছেন না। বিসিবিতে বদল ও পূর্ণগঠনের জোর দাবি উঠেছে। বিসিবির পরিচালকরা অপেক্ষায় আছেন কখন অর্ন্তবর্তীকালীন সরকার থেকে তাদের পদত্যাগের নির্দেশ আসে। এরই মধ্যে ১৫ আগস্ট বিসিবির এক পরিচালক জানান, নাজমুল হাসান পাপন বিসিবি সভাপতির পদ ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

অর্ন্তবর্তীকালীন সরকারও চাচ্ছে বিসিবিতে এই পরিবর্তনটা যেন নিয়মের মধ্যে থেকেই হয়। অন্যরকম কিছু হলে আইসিসি হয়তো বিগড়ে যেতে পারে। নাজমুল হাসানের বিসিবি থেকে সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত শোনার পর থেকেই আলোচনা চাওর দিয়ে উঠেছে, কে হতে যাচ্ছেন পরবর্তী বোর্ড সভাপতি? আলোচনায় উঠে এসেছে বেশ কিছু নামও। তবে সেই তালিকায বিসিবি সভাপতির চেয়ারে বসার দৌড়ে বাকি সবার চেয়ে এগিয়ে আছেন ফারুক আহমেদ। সাবেক অধিনায়ক ও প্রধান নির্বাচক ফারুক আহমেদের সঙ্গে ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ এরই মধ্যে কয়েকটি বৈঠক করেছেন বলে স্পোর্টস বাংলার কাছে একাধিক সূত্র এই তথ্য স্বীকার করেছেন।

ফারুক আহমেদের কাছে ক্রীড়া উপদেষ্টা জানতে চেয়েছিলেন, তিনি বিসিবি কাজ করতে চান কিনা? ফারুক সানন্দে হ্যাঁ বলেছেন। তবে বিসিবিতে ফিরলে ফারুক কোন পদে ফিরবেন সেই বিষয়ে কেউ কোনো মন্তব্য করতে রাজি না হলেও এটা নিশ্চিত যে পাপনের চেয়ারটাই তার জন্য ঝাড়পোঁছ করা হচ্ছে।

ফারুক আহমেদ এই প্রসঙ্গে স্পোর্টস বাংলাকে বলেন, ‘ক্রিকেট বোর্ড পুনর্গঠনের পরিকল্পনার অংশ হিসেবে আমাকে একটা প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। আমি তাতে সায় দিয়েছি।’

তবে এখন মূল বাঁধা হলো সরাসরি ফারুক আহমেদকে সভাপতির পদে বসানো নিয়ে। যা বিসিবির গঠনতন্ত্রে কিছুটা গোলযোগই ঘটাবে। কেননা বোর্ড সভাপতি হতে হলে আগে তাকে থাকতে হবে বোর্ডের পরিচালকের পদে। বর্তমানে ফারুক আহমেদ বোর্ডের পরিচালক বা কাউন্সিলর কোনো পদেই নেই। সরকার চাইলে কাউকে বিসিবির সভাপতি বানাতে পারবেন না কারণ, সেখানে আছে আইসিসির কঠিন নিয়ম।

এতে কিছুটা সহজ পথেই হাঁটতে পারে বিসিবি। বোর্ড পরিচালক হতে হলে আগে তাকে থাকতে হবে কাউন্সিলরের পদে। সেক্ষেত্রে প্রয়োজন পড়বে নির্বাচনের। তবে তাকে সরাসরি জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের (এনএসসি) মনোনীত প্রতিনিধি হিসেবে বোর্ডে পরিচালক পদে বসাতে পারে মন্ত্রণালয়। সেক্ষেত্রে দরকার নেই কোনো নির্বাচনের। এতে পরবর্তীতে পরিচালক পদ থেকে তিনি নিযুক্ত হতে পারেন সভাপতি হিসেবে।

তবে ফারুক আহমেদ সভাপতি হলেও সেটি সম্ভাব্য অন্তর্বর্তীকালীন দায়িত্বে বসতে হবে। কেননা আইসিসির বিধিনিষেধ অনুযায়ী তখন বিপাকে পড়তে হতে পারে বিসিবিকে। অন্তর্বর্তীকালীন দায়িত্বে তখন ফারুক আহমেদের অধীনে ডাকতে হবে পূর্ণকালীন বোর্ড সভাপতির জন্য নির্বাচন।

আরেকভাবে এই বিষয়ের সহজ সমাধান হতে পারে। ধরা যাক নাজমুল হাসান পাপন সভাপতি পদ থেকে পদত্যাগ করলেন। তার সঙ্গে বোর্ডের বাকি পরিচালকরাও বর্তমান অবস্থার প্রেক্ষিতে পদত্যাগ পত্র জমা দিলেন। তখন বোর্ডের এই শূন্যতা দূর করার জন্য বিসিবির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আইসিসির কাছে একটা প্রস্তাব পাঠাতে পারে। যে প্রস্তাবে থাকবে পরবর্তী নির্বাচিত বোর্ড গঠনের আগ পর্যন্ত একটা অর্ন্তবর্তী কমিটি বোর্ড পরিচালনায় থাকবে। সেই কমিটির সভাপতি হবেন ফারুক আহমেদ। বোর্ডের সেই অর্ন্তবর্তী কমিটির বাকি সদস্যদের ফারুক আহমেদ তার পছন্দ অনুযায়ী ঠিক করবেন। পরবর্তী নির্বাচন না হওয়া পর্যন্ত এভাবেই চলবে বোর্ড।

 ২০১৬ সালে ফারুক আহমেদ বোর্ডের সঙ্গে দ্বন্দ্বের প্রেক্ষিতে প্রধান নির্বাচকের পদ থেকে পদত্যাগ করেন। ২০২৪ এ তাহলে তিনি ফিরছেন বোর্ড সভাপতি হয়ে!

সম্পর্কিত খবর