বিসিবির গঠনতন্ত্র বদলাবে ফারুকের বোর্ড

বিসিবির গঠনতন্ত্র বদলাবে ফারুকের বোর্ড

বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডে (বিসিবি) পেছনের দুটো নির্বাচনে প্রায় সব পদে একই মুখ। নির্বাচিতও হতেন তারাই। তাদের বিরুদ্ধে কেউ দাঁড়ালে পাস করার কোনো উপায় নেই। এমনই একতরফাভাবে পুরো গঠনতন্ত্রকে নিজেদের পক্ষে সাজিয়ে রাখা হয়েছিল যে গোষ্ঠী বা সিন্ডিকেটের বাইরে অন্য কারো পক্ষে নির্বাচনে জেতার উপায় ছিল না। আর তাই এই সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে নির্বাচনে নেমে খালেদ মাসুদ পাইলট পেয়েছিলেন তিন ভোট। নাজমুল আবেদীন ফাহিম পান দুই ভোট! ছক সাজিয়ে কাউন্সিলর বানানো এবং সেই অনুযায়ী নির্বাচন করে বিসিবির চেয়ারে বসতেন ক্রিকেট সংগঠকের চেহারা নিয়ে আসা কিছু ব্যবসায়ী। যারা মূলত বিসিবিকে ব্যবহার করে কোটি কোটি টাকা কামিয়েছেন। নামে-বেনামে বিসিবিকে নিজস্ব ব্যবসার ক্ষেত্র হিসেবে ব্যবহার করেছেন।

বিসিবির নতুন সভাপতি ফারুক আহমেদ দায়িত্ব নেয়ার দিনই ঘোষণা দিয়েছেন, এসব সিন্ডিকেট এবং সব অনিয়ম দুর করা হবে। নিজের স্বার্থে যারা বিসিবির গঠনতন্ত্র সাজিয়েছেন তাদেরকে জবাবদিহি করতে হবে। এই গঠনতন্ত্র অবশ্যই বদলাতে হবে। সংস্কার করতেই হবে। কেউ যেন গঠনতন্ত্রকে নিজেদের ক্ষমতা কুক্ষিগত করতে না পারে সেই ব্যবস্থা নেবেন বলে জানিয়েছেন বিসিবি সভাপতি।

এই প্রসঙ্গে ফারুক আহমেদ বলেন, ‘ক্রিকেট জাতি হিসেবে আমাদের যেখানে থাকার কথা ছিল, আমরা কিন্তু সেখানে নেই। অথচ আমাদের অনেক সম্ভাবনা রয়েছে। সেই সম্ভাবনাকে আমরা পুরোটা সময় জুড়ে কাজে লাগাতে পারিনি। হ্যাঁ, মানছি সাফল্য কিছুটা এসেছে। তবে আরো ভালো সাফল্য আমরা পেতে পারতাম। অনেক সময় অনেক কাজ করতে গেলে কিছু বাজে সিস্টেমের কারণে সেটা করা সম্ভব হয় না। বিসিবিতেও সেই বাজে সিস্টেম ছিল। আমি গর্ব করে বলতে পারি সেই বাজে সিস্টেমের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেই আমি প্রধান নির্বাচকের পদ থেকে পদত্যাগও করেছিলাম। এখন আমি বিসিবি সভাপতির দায়িত্ব পেয়েছি। আমি সেইসব বাজে সিস্টেমকে আর দাঁড়াতে দেব না। পরিবর্তন আসবেই। যে গঠনতন্ত্রের আলোকে  আমাদের এখানে পরিচালক নির্বাচিত হয় সেই গঠনতন্ত্রে বদল আনতে হবে। এই গঠনতন্ত্রে আমাদের হাত দিতে হবে। এমনভাবে এই গঠনতন্ত্র তৈরি করতে হবে যাতে সত্যিকার অর্থেই দেশের ক্রিকেটের জন্য যারা কাজ করতে চায়-তারা যেন বোর্ডে আসতে পারে। যারা ক্রিকেটের মুল স্টেক হোল্ডার তাদের ঠিক মতো কাজে লাগানোটাই হবে আমাদের প্রথম অগ্রাধিকার।’

দেশের ক্রিকেটকে স্বীয় স্বার্থে ব্যবহার করে অনেকে মান্যিগন্যি হয়েছেন। টুর্নামেন্টের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে গান এবং বিদেশি গায়ক-নায়িকার জন্য কোটি কোটি টাকা খরচ করা হয়েছে কিন্তু ঢাকার বাইরে ক্রিকেটকে এগিয়ে নিতে খরচ করতে, এমনকি সামান্য ক্রিকেট বলের যোগান দিতে বোর্ড কর্মকর্তাদের মধ্যে দারুণ অনীহা দেখা গেছে। এসব বদলের অঙ্গীকার করে ফারুক বলেন, ‘ক্রিকেটকে আর কেউ যেন ব্যক্তিগত এজেন্ডা হিসেবে ব্যবহার করতে না পারে আমি তেমনই একটা সিস্টেম দাঁড় করাতে চাই।’

সম্পর্কিত খবর