মার্তিনেজের কৌশলেই ভারতকে কুপোকাত করলেন আসিফ

মার্তিনেজের কৌশলেই ভারতকে কুপোকাত করলেন আসিফ

ভারতকে হারিয়ে সাফ অনূর্ধ্ব–২০ চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে চলে গেছে বাংলাদেশ। এই সাফল্যের কৃতিত্বের একটা বড অংশ যাবে বদলি গোলরক্ষক মোহাম্মদ আসিফের ভাগে। বদলি হিসেবে নামা এই গোলরক্ষকই যে টাইব্রেকারে জেতালেন বাংলাদেশকে!

এরপর আজ এক ভিডিওবার্তায় তিনি জানালেন নিজের এই সাফল্যের রহস্য। জানালেন টাইব্রেকারে এমিলিয়ানো মার্তিনেজের মতো কৌশলেই ভারতকে কুপোকাত করেছেন তিনি। 

ম্যাচে বীর হওয়া তো দূরের কথা, এই ম্যাচে যে তার মাঠে নামতে হবে, সেটাও তো কল্পনায় ছিল না তার। তিনি দলের দ্বিতীয় পছন্দের গোলরক্ষক। প্রথম গোলরক্ষক মেহেদি হাসান শ্রাবণ আগের ম্যাচে একটা বড় ভুল করলেও গতকাল সেমিফাইনালে গোলরক্ষকের জায়গাটা ধরে রেখেছিলেন, নেমেছিলেন মাঠে।

৬৪ মিনিটে সেই শ্রাবণ মাথায় চোট নিয়ে চলে যান মাঠের বাইরে। যার ফলে আসিফকে নামতে হয় মাঠে। তবে তিনি জানালেন, মাঠে নামার আগে থেকেই মানসিক প্রস্তুতিটা নিয়ে রেখেছিলেন তিনি। তার কথা, ‘আমরা ভারতের বিপক্ষে খেলতে নামার আগে মানসিকভাবে পুরোপুরি প্রস্তুত ছিলাম। যারা খেলবে বা যারা বেঞ্চে থাকবে, সবাই। মাঠে নামলেই যেন নিজেদের মেলে ধরতে পারি, প্রস্তুতিটা সে কারণেই। ম্যাচটা যেকোনো মূল্যে জিততে চেয়েছিলাম। তাই মাঠে ও বেঞ্চের সবাই দৃঢ়প্রতিজ্ঞ ছিলাম।’

তিনি মাঠে আসার পরই বাংলাদেশ গোল হজম করে। তবে তিনি মনে মনে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ ছিলেন, টাইব্রেকারে গেলে তিনি সর্বস্ব উজাড় করে দেবেন। তিনি বলেন, ‘আমি যখন মাঠে নামি, বাংলাদেশ এক গোলে এগিয়ে। ভারত সমতা ফেরায় আমি নামার পরই। কিন্তু আমি মানসিকভাবে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ ছিলাম যে খেলাটা যদি টাইব্রেকারে গড়ায়, তাহলে নিজেকে উজাড় করে দেব। আমি আগেও এ ধরনের ম্যাচ খেলেছি, পরিস্থিতিটা আমার কাছে নতুন কিছু ছিল না। স্বাভাবিকভাবেই নিয়েছি সবকিছু।’

টাইব্রেকারে এমিলিয়ানো মার্তিনেজের সাফল্যটা সর্বজনবিদিত। তবে তার এই সাফল্যের পেছনে মানসিক খেলারও একটা বিষয় আছে। বিশ্বকাপ ফাইনালে তিনি অরলিয়েঁ চুয়ামেনি হাতে বল না দিয়ে ফেলেছিলেন দূরে, তার আগে কিংসলে কোমানকে কথায় বিভ্রান্ত করা… তারও আগে ২০২১ কোপা আমেরিকায় কলম্বিয়ার বিপক্ষে পেনাল্টি শ্যুট আউটে ইয়েরি মিনার সঙ্গে তার কথার যুদ্ধ তো রীতিমতো ইতিহাসের পাতাতেই উঠে গেছে!

গতকাল বাংলাদেশ যখন নেমেছিল টাইব্রেকারে, তখন আসিফও হেঁটেছেন মার্তিনেজেরই পথে। কীভাবে? শুনুন তার মুখেই, ‘দ্বিতীয় শটে ভারতের আকাশের শরীরী ভাষায় কিছুটা নার্ভাসনেস টের পাই। আমিও ওকে কথা দিয়ে কাবু করতে চেয়েছি। পরে দেখি সে আমার পায়ে মেরে দিয়েছে। প্রথম শটে বডি ডজ দিতে চেয়েছিলাম। বাঁদিকে ঝাঁপানোর ভান করে ডান দিকে ঝাঁপ দিই। ভারতের হয়ে টাইব্রেকার নিচ্ছিল যে সেও ডান দিকেই মারে।’

এমিলিয়ানো মার্তিনেজকে নিশ্চয়ই আরও একটা জায়গায় অনুসরণ করতে চাইবেন আসিফ। এমিলিয়ানো মার্তিনেজ তার ক্যারিয়ারে জাতীয় দলের হয়ে মাঠে নেমে কোনো শিরোপাই হাতছাড়া করেননি। দলকে জিতিয়ে তবেই মাঠ ছেড়েছেন। এবার আসিফ এই জায়গাতেও তাকে ছোঁবেন, এমন আশা নিশ্চয়ই বাংলাদেশও করবে!

সম্পর্কিত খবর