পাকিস্তানকে হোয়াইটওয়াশ করে কী বললেন শান্ত?
পাকিস্তানের বিপক্ষে অবিস্মরণীয় সিরিজ জয়ের পর সংবাদ সম্মেলনে এলেন অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত। সেখানে তিনি জানালেন সিরিজ জেতার পরের অনুভূতিটা কেমন, সে বিষয়টা।
স্পোর্টস বাংলার পাঠকদের জন্য সে সংবাদ সম্মেলনের অংশ বিশেষ তুলে ধরা হলো-
এই জয়ের পর কেমন লাগছে? সাকিব যখন চারটা মারলেন, তখন পরিস্থিতিটা কেমন ছিল?
আবেগটা আসলে মুখে বলা মুশকিল। কারণ এ ধরনের সাফল্য… আমার কাছে ব্যক্তিগতভাবে… এটা অন্যতম সেরা মুহূর্ত আমার মনে হয়। মুশফিক ভাই আর সাকিব ভাই যখন ব্যাট করছিলেন, তখন আমরা চাইছিলাম এ দুজনই যেন খেলাটা শেষ করে। এত ম্যাচ ধরে তারা বাংলাদেশের ক্রিকেটে খেলছেন, কত ম্যাচ জিতিয়েছেন, কিন্তু এ ধরনের ম্যাচ জেতা খুবই স্পেশাল। তাই আমরা সবাই চাচ্ছিলাম, তারা যেন শেষ করে আসেন। এবং আমরা সবাই খুব খুশি।
প্রধান উপদেষ্টা কল করেছিলেন। কী কথা হয়েছিল তখন?
ডক্টর ইউনূস স্যার কল করেছিলেন। সবাইকে অভিনন্দন জানিয়েছেন। উনারা অনেক খুশি। দেশে আসলে দেখা করতে চেয়েছেন দলের সঙ্গে।
দেশের মানুষের জন্য আপনাদের পক্ষ থেকে এটা নিশ্চয়ই একটা উপহার!
অবশ্যই এই জয়টা দেশের মানুষের জন্য অনেক আনন্দ বয়ে আনবে। কারণ শেষ কিছু দিন ধরে বন্যা বলেন, আন্দোলন বলেন, অনেক মানুষের অনেক কঠিন সময়ের মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছে। কিন্তু যেভাবে আমরা খেললাম, আশা করি একটু হলেও তাদের মুখে হাসি ফুটবে। আমরা জানি ক্রিকেটের জন্য কতটা পাগল আমাদের দেশের মানুষেরা, ম্যাচ হারলেও যেভাবে আমাদের সমর্থন দেন, তো চেষ্টা ছিল কীভাবে দেশের মানুষকে আমরা কিছু একটা দিতে পারি, তো আলহামদুলিল্লাহ আমার মনে হয় আমরা ভালো কিছু করতে পেরেছি।
আপনাদের অনুপ্রেরণাটা কী ছিল?
খুব বিশেষ কিছু নয়, আমাদের দেশে আমাদের খেলোয়াড়রা যেভাবে সিরিজটাকে সামনে রেখে নিজেদের প্রস্তুত করেছে, সেটা গুরুত্বপূর্ণ ছিল। সে সময় প্রত্যেকটা খেলোয়াড় বিশ্বাস করেছে তাদের আমরা হারাতে পারব। সিরিজের শুরুতে আমি বলেছিলাম আগের যে রেকর্ড আছে, সেটা ভাঙা যেতে পারে। তো আমি জানতাম কীভাবে খেলোয়াড়রা নিজেদের খুব ভালোভাবে প্রস্তুত করেছে, সে কারণে আমি বলেছিলাম কথাটা। এটা আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ছিল। আমরা বেশ খুশি।
আপনাদের পারফর্ম্যান্সগুলো বাকিদের জন্য উদাহরণ হয়ে থাকল। ৪৪৮ ডিক্লেয়ার, এরপর আপনারা ২১৮ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে বসলেন… সেখান থেকে আপনারা লিড নিলেন। এরপর ২৬ রানে ৬ উইকেট হারিয়েও ম্যাচটা জিতলেন… কী এমন হয়ে গেল যে আপনার দল দিনকে দিন আরও ভালো হয়েই চলেছে?
বিশ্বাসটা গুরুত্বপূর্ণ। প্রত্যেকটা খেলোয়াড় বিশ্বাস করে যে আমরা যে কোনো মুহূর্তে ম্যাচে ফিরে আসতে পারি। আপনি জানেন মিরাজ আসে ৮ নম্বরে। যে ব্যাটিং গভীরতা আমাদের আছে, আমরা বিশ্বাস করি যে কেউ সেট হলে বড় রান করতে পারবে। এই বিশ্বাসটা গুরুত্বপূর্ণ যে, যে কোনো পরিস্থিতি থেকে আমরা ফিরে আসতে পারি ম্যাচে।
২৬ রানে ৬ উইকেট হারানোর পর আপনাদের দলে কী কথা হচ্ছিল যে ওখান থেকে আপনারা ম্যাচে ফিরে এলেন?
ও (মিরাজ) ব্যাট করতে যাওয়ার আগে বলছিল, ও আর লিটনই দলের কাজটা করে দেবে। ওরা আগেও এমন কাজ করেছে। এটা সত্যিই প্রশংসার দাবিদার। যে বিশ্বাসটা তারাসহ পুরো ড্রেসিং রুমের আছে, সেটা এবার অনেক বেশি আলাদা, অন্য যে কোনো বারের চেয়ে। আমি মিথ্যে বলব না, তখন আমরা অনেক পিছিয়ে পড়েছিলাম, অনেকটা স্নায়ুচাপে ছিলাম। এরপর দুজন যখন ১০-১৫ ওভার খেলল, তারপর আমরা ভালো অবস্থানে গেলাম। আমার বিশ্বাস তারাই আমাদের ভালো জায়গায় নিয়ে গেছে।