ভারত সফর নিয়ে কী বললেন লিটন দাস?
পাকিস্তানের বিপক্ষে সফল এক সিরিজ শেষে বাংলাদেশের সামনে এখন আরও বড় চ্যালেঞ্জ। ভারত সফর আরও অনেক বড় পরীক্ষা নিয়ে অপেক্ষা করছে বাংলাদেশের। তার আগে আজ সংবাদ সম্মেলনে সে সিরিজ নিয়ে কথা বললেন লিটন দাস, সেখানে উঠে এল দলের পারফর্ম্যান্স, নিজের ব্যাটিং সহ আরও অনেক বিষয়।
স্পোর্টস বাংলার পাঠকদের জন্য সংবাদ সম্মেলনটি তুলে ধরা হলো–
পাকিস্তানের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজে প্রায় প্রতিটা দুপুরের সেশনে কামব্যাক করেছে বাংলাদেশ। বিষয়টাকে কীভাবে দেখছেন?
টেস্ট ক্রিকেটে প্রত্যেকটা সেশন যেহেতু জিততে হয়, প্রত্যেকটা সেশনই খুব গুরুত্বপূর্ণ। আমার কাছে মনে হয়েছে প্রত্যেকদিন সকালের সেশনে আমরা শতভাগ ক্রিকেটটা খেলতে পারিনি। বোলিং ব্যাটিং দুই দিক থেকেই। এখানে একটা উন্নতির জায়গা আছে আমাদের।
উইকেটে টিকে থাকার ব্যাটিংয়ের যে টেমপ্লেট, সেটা আপনি মানেন না। এটা কি দলের নির্দেশনা নাকি নিজ থেকেই করা পরিকল্পনা থাকে যে শট খেলে প্রতিপক্ষকে হতোদ্যম করে দেব?
আমি যে খুব আক্রমণাত্মক ক্রিকেট খেলি, বিষয়টা তা নয়। আমার যে বলটা স্কোরিং জোনের বল মনে হয়, তখন সে বলে স্কোর করার চেষ্টা করি। এখন যে কোনো ফরম্যাটে রানটা বেশি প্রাধান্য পায়। আপনি যদি শেষ দুই ম্যাচ চিন্তা করেন, দেখবেন আমরা একটা জায়গায় গিয়ে রান করতে পারছিলাম না। রানে বলে খেলার ফলে একটা ফ্লো চলে আসে। আমার মনে হয় আমি যে ধরনের ব্যাটিং করি টেস্ট ক্রিকেটে, বিশ্বের সবাই এই আক্রমণাত্মক ক্রিকেটটাই খেলে। স্বাভাবিক বিষয় টেস্ট ক্রিকেটে আক্রমণাত্মক ফিল্ডিং থাকে। আউট হওয়ার চান্স যেমন থাকে, স্কোর করার চান্সও আছে। আমি যে ধরনের ব্যাট করি, মিরাজকেই পাব, তারপর টেল এন্ডাররা আসবে। আমার মনে হয় আমি আক্রমণাত্মক না খেললে রান পাব না, দলের স্কোরবোর্ডও থমকে থাকবে। এভাবেই খেলতে চাই আরকি।
প্রথম ম্যাচে ১৮ রানের একটা ওভারে খেলার মোমেন্টাম বদলে গিয়েছিল। এমন কি কোনো মানসিকতা থাকে কি না?
না আমার কাছে অমন মনে হয় না। ওই ম্যাচটা এমন একটা ম্যাচ ছিল যেখানে প্রচণ্ড গরম ছিল। আমি কিপিং করেছি, তো আমি জানি পুরো দিন কিপিং করা বা পেস বোলার যাদের ১৫-১৬ ওভারের স্পেল হয়ে যায়, তাদের জন্য… আমার কাছে মনে হয়েছে এটা একটা সুযোগ। সঙ্গে নতুন বলটা ছিল, রান করাটা একটু সহজ ছিল, সঙ্গে তারা একটু ক্লান্তও ছিল। তো মুশফিক ভাইয়ের সঙ্গে আলাপ করছিলাম যে এটা একটা বড় সুযোগ। তো পজিটিভ ইন্টেন্ট নিয়েই খেলেছি।
মানসিক চাপটা কীভাবে কাটিয়ে উঠেছেন?
ঠিক বলব না ভুল বলব? যদি ঠিকটা বলি, তাহলে বলব এ নিয়ে আমি কোনো চিন্তাই করিনি। আমি স্রেফ ভেবেছি আমাকে নিয়ে, কীভাবে ভালো করা যায়, কীভাবে উন্নতি করা যায় এই বিষয়ে ভেবেছি। ভুল আন্সার হচ্ছে সারা দিন রুমে বসে কান্না করতাম।
খেলোয়াড়দের সব সময় ভালো যায় না। যাদের ভালো সময় যায়, তারা চেষ্টা করে আরও ভালো করার। একটাই উপায় আছে আমাদের ভালো করার, সেটা হচ্ছে অনুশীলন। আমি অনুশীলনে চেষ্টা করেছি, এরপর মাঠে সেটা বাস্তবায়নের চেষ্টা করেছি।
নাসিম শাহকে ছক্কা মেরেছেন, ডমিনেট করতে দেননি। ভারতের বিপক্ষে সিরাজের সঙ্গে আপনার একটা ঘটনা ঘটেছিল, সেটা আপনার মাথায় আছে কি না। অমন পরিস্থিতি আসলে কী করবেন?
ভারতে এখনও যাইনি, সেটা ভবিষ্যৎ। আর যেটা বললেন, সেটা অতীত। দুটার মধ্যে কোনো পার্থক্য নাই। বর্তমান হচ্ছে আমার অনুশীলন। একটু পরে অনুশীলন আছে। দেখি এখানে কিছু করতে পারি কি না।
সাদা বলে ওপেন করেন, লাল বলে খেলেন ছয়ে, এরপর আবার ব্যাটার নেই। এই চাপটা কীভাবে সামাল দেন?
চাপ আসলে সব জায়গাতেই আছে। এখানে চাপ আছে, ওখানে নেই বিষয়টা এমন নয়। আর আমার চেয়ে ভালো ব্যাটার আমার নিচে আছে, মিরাজ আছে।
চাপ না, আমার মনে হয় টেস্ট ক্রিকেট এমন একটা খেলা, যেখানে আপনার হাতে অনেক সময় আছে। আপনি যেখানেই ব্যাট করেন, আপনার সামনে সারা দিন সময় আছে শূন্য থেকে শুরু করে নিজেকে ইমপ্লিমেন্ট করার। চাপ না। আমি যেভাবে অনুশীলন করি, সেভাবেই খেলার চেষ্টা করছি।
পাকিস্তান সিরিজ পেছনে ফেলে ভারতে মনোযোগ দেওয়াটা কতটা জরুরি?
খুবই জরুরি। আমার মনে হয় আপনাদেরও একটু হেল্প করতে হবে। পাকিস্তান সিরিজ নিয়ে খুব বেশি কথা না বলেন, তাহলে…
সামনে যে সিরিজটা আছে, সেটা অনেক বড় চ্যালেঞ্জিং একটা সিরিজ। কারণ আপনারা জানেন ভারত অনেক বড় দল। সঙ্গে আমাদের বলও বদলে যাচ্ছে, যে বলে আমরা খুব কমই খেলি। চ্যালেঞ্জিং হবে। আমাদের খেলোয়াড়রা তার জন্য বেশ পরিশ্রমও করছে।
কোকাবুরা খেলে এসে এসজি বলে খেলাটা কতটা চ্যালেঞ্জের?
কোকাবুরা বলে নতুন বলে খেলাটা কঠিন, পুরোনো বলে খেলা সহজ। আর এসজি বলে নতুন বলে সহজ, পুরোনো বলে কঠিন। তো আমরা মানিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছি বিষয়টা নিয়ে।
উপমহাদেশে টানা দুটো সিরিজ খেলতে যাচ্ছেন। দুটো সিরিজে বাইরের চাপটা সামলানো কতটা চ্যালেঞ্জের হয়?
আমার কাছে মনে হয় এটা মোটিভেটই করে। কারণ, ভালো খেললে আপনার সুনাম হবে, দুটা মানুষ চিনবে, এর চেয়ে বড় পাওয়া তো আর কিছু হতে পারে না। আর ভারত অনেক বড় দল। আমার মনে হয় না চাপের বিষয় আছে। আর টেস্ট ক্রিকেটে আমরা এখন ভালো ক্রিকেট খেলছি, ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে হবে।
টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপে বাংলাদেশের লক্ষ্য কী?
এখন আমরা স্রেফ ভারত নিয়ে ভাবছি।
ভারতের বিপক্ষে ব্যক্তিগত কোনো লক্ষ্য আছে কি?
ভারতের বিপক্ষে আমি চেষ্টা করব নিজের সর্বোচ্চটা দেওয়ার।