অভিজ্ঞতা হচ্ছে কিন্তু শেখাটাই যে হলো না!
সমস্যা কোথায়?
উত্তর মিলল-সর্বত্রই। তবে ব্যাটিংয়ে সঙ্কট এবং ভঙ্গুরতা একটু বেশি। টি- টোয়েন্টি ক্রিকেটে বাংলাদেশ সম্পর্কে এই তথ্যটাই এখন সবচেয়ে বেশি আলোচিত।
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ থেকেই শুরু হয়েছে বাংলাদেশের ব্যাটিং ব্যর্থতার সর্বশেষ সময়। বিশ্বকাপ শুরুর আগে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে তিন ম্যাচের সিরিজের প্রথম দুটিতে হেরে সিরিজ খোয়ায় বাংলাদেশ। সেই ব্যর্থতা যে আকস্মিক কোনো কিছু ছিল না, সেটা পরিস্কার হলো বিশ্বকাপ জুড়ে বাংলাদেশের নুয়ে পড়া সাফল্যে। আফগানিস্তানের কাছে বাংলাদেশ সেই বিশ্বকাপে হারে।
ভারতের বিরুদ্ধে তিন ম্যাচের টি- টোয়েন্টি সিরিজে বাংলাদেশ যে মানের ক্রিকেট খেলল, তাতে একটা বিষয় আরেকবার স্পষ্ঠ হলো-এই ফরমেটের ক্রিকেটে এখনো বাংলাদেশ প্রাইমারি ক্লাসের ছাত্র। প্রতিপক্ষ সব মাধ্যমিকের! ব্যাটিং নিয়েই শুরুতে বলি। টি- টোয়েন্টিতে বাংলাদেশের শুরুর ছয় ব্যাটসম্যানের ব্যাটিং গড় ২১.৬। চলতি বছরের দলের টি- টোয়েন্টির ব্যাটিং হিসেব এটি।
বুঝন তাহলে, এই যদি হয় টপ ছয় ব্যাটারের পারফরমেন্স। তাহলে সেই দলের ব্যাটিং নিয়ে বলার মতো আর কিছু কি আছে?
ব্যাটিংয়ের সাত নম্বর পজিশন নিয়ে বাংলাদেশ ছাড়া দুনিয়ার আর কোনো দেশে এতো বেশি আলোচনা হয় কিনা-জানা নেই! প্রায় প্রতি সিরিজে সাত নম্বরে কে ব্যাট করবেন? তার কেমন ব্যাট করা উচিত? তার হাতের পেশিতে ছক্কা হাঁকানোর শক্তি আছে কিনা? কম বলে বেশি রান করতে পারেন কিনা? এমনসব প্রশ্ন ঘিরে থাকে।
আসলে বাংলাদেশের ক্ষেত্রে সাত নম্বর ব্যাটসম্যান খোঁজা হয় মুলত ম্যাচ জেতানোর জন্য না, ব্যাটিংয়ে ‘ঠেক’ দেওয়ার জন্য! এটা জানা যে দলের শুরুর ছয় ব্যাটার ব্যর্থ হবেন। এবং ইনিংস টেনে নিয়ে যাওয়ার বিপুল দায়িত্ব নিয়ে সাত নম্বর ব্যাটার নামবেন। লেজের সারির ব্যাটারদের নিয়ে তিনি ইনিংসের বোঝা টানবেন। শেষ পর্যন্ত বলের সমান রান করে অপরাজিত থাকবেন! টেস্ট এবং ওয়ানডে ক্রিকেটে বাংলাদেশের শুরুর দিনগুলোতে বাংলাদেশের ব্যাটিংয়ের ক্ষেত্রে এমন চিত্র প্রায়শ দেখা যেত। আর এই বোঝা টানার দায়িত্ব তখন পালন করতেন খালেদ মাসুদ পাইলট। দেখা যেত দল ১৩৫ রানে গুটিয়ে গেছে। পাইলট দিন শেষে সেই স্কোরে অপরাজিত ৩৯ বা ৪২। স্কোরবোর্ড জানাচ্ছে ম্যাচে বাংলাদেশের বড় হার।
পুরানো সেই দিন যেন ফিরে এলে ভারতের বিরুদ্ধে টি- টোয়েন্টি সিরিজের প্রথম ম্যাচে। এই ম্যাচে পুরানো দিনের পাইলটের সেই ভুমিকায় দেখা গেল মেহেদি হাসান মিরাজকে। দলের ১২৭ রানের মধ্যে মিরাজের রান ৩২ বলে অপরাজিত ৩৫।
টি- টোয়েন্টিতে সাত নম্বরে ব্যাট করতে নামা ব্যাটার এত বল খেলার পরও এই মামুলি স্ট্রাইকরেটই জানাচ্ছে এখনো এই ফরমেটের ব্যাটিং বা কৌশলের সঙ্গে অভ্যস্ত হতে পারেনি বাংলাদেশ।
কবে হবে?
সিরিজের আরো দুটি ম্যাচ আছে না!
একটু জানিয়ে দেই বাংলাদেশের এটি ১৭৭ নম্বর আর্ন্তজাতিক টি- টোয়েন্টি। আর এই সিরিজে পুরো বাংলাদেশ দলের সম্মিলিতভাবে আর্ন্তজাতিক টি- টোয়েন্টি খেলার অভিজ্ঞতার যোগফল হলো ৬৫৬ ম্যাচ!
কি বুঝলেন?
অভিজ্ঞতা হচ্ছে কিন্তু শেখাটাই হচ্ছে না!