যে কারণে এমন সিদ্ধান্ত মাহমুদউল্লাহর
বাতাসে গুঞ্জন ছিল আগের দিনই। সেই গুঞ্জনের সত্যতা মিলল এবার। মঙ্গলবার আনুষ্ঠানিকভাবেই বিদায়ের ঘোষণা দিলেন জাতীয় দলের প্রাক্তন অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। ভারতের বিপক্ষে সিরিজ শেষেই টি-টোয়েন্টি থেকে অবসর নেবেন তিনি।
বুধবার ভারতের বিপক্ষে সিরিজের দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে লড়বে বাংলাদেশ। এই ম্যাচের আগে দিল্লির অরুণ জেটলি স্টেডিয়ামে সংবাদ সম্মেলনে মাহমুদউল্লাহ জানান, ৩ ম্যাচের এই সিরিজ শেষেই তিনি আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিকে গুডবাই বলবেন।
রিয়াদ টেস্ট ক্রিকেট থেকে অবসর নেন ২০২১ সালের জুলাইয়ে। কোনো আনুষ্ঠানিক ঘোষণা না দিয়ে হারারে টেস্টের মাঝপথে মাহমুদউল্লাহকে সতীর্থদের গার্ড অব অনার নিয়ে তিনি সরে দাড়ান। এবার বলে-কয়ে দিয়ে টি-টোয়েন্টিকে বিদায় বলছেন রিয়াদ।
মাহমুদউল্লাহ গুঞ্জনের ইতি টেনে আজ মঙ্গলবার গণমাধ্যমের সামনে বলেন, ‘এই সিরিজের শেষ ম্যাচের (১২ অক্টোবর) পরই আমি টি-টোয়েন্টি থেকে অবসর নেব। আসলে এটা আমি এই সফরে আসার আগেই ঠিক করে রেখেছিলাম। আমি আমার পরিবারের সঙ্গে কথা বলেছি। আমার কোচ, অধিনায়ক, নির্বাচক এবং বোর্ড সভাপতিকেও সিদ্ধান্ত জানিয়েছি।’
কেন অবসরের সিদ্ধান্ত সেটাও জানালেন ৩৯ বছর প্রায় ছুঁই ছুঁই এই অভিজ্ঞ ক্রিকেটার। তিনি বলেন, ‘দেখুন, আমি মনে করি, এটাই সঠিক সময় এই সংস্করণ থেকে সরে গিয়ে সামনে ওয়ানডে যা আছে, সেদিকে মনোযোগ দেওয়ার। আমার জন্য এবং পরের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের কথা যদি ভাবি, দলের জন্যও এটাই সঠিক সময়। পরের বিশ্বকাপের জন্য এখনই প্রস্তুতি শুরু করা উচিৎ।’
ভারত সফর আসার আগেই এমনটা ভেবে রেখেছিলেন। তবে রিয়াদের পরিবার শুরুতে এটা মেনে নেয়নি। তাদের বুঝিয়ে কথা বলেছেন বিসিবির সঙ্গে, ‘ভারত সিরিজের আগে অনুশীলন শুরুর সময়ই এসব নিয়ে আলোচনা শুরু করেছিলাম। পরিবার শুরুতে বোঝেনি, তারা ভেবেছিল এটা সঠিক সময় নয়। আমি নানাভাবে পরিবারকে বুঝিয়েছি, এরপর তারা বুঝেছে। তারপর আমি বোর্ড সভাপতি এবং নির্বাচকদের সঙ্গে কথা বলেছি।’
বিদায় বেলায় কোন আক্ষেপ নেই জানালেন রিয়াদ, ‘আলহামদুলিল্লাহ, আমার কোনো আক্ষেপ নাই। আমার এক ফোঁটাও আক্ষেপ নাই, কারণ বাংলাদেশ দলের হয়ে দীর্ঘদিন খেলা খুবই ভালো ব্যাপার আমার জন্য। আমি যতটুকু খেলেছি টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে, সম্ভবত ২০০৭ সালে আমার অভিষেক হয়েছে, আর এখন ২০২৪ সাল, ১৭ বছর। আমি জানি না কতটুকু ভালো করতে পেরেছি বা আমি কতটুকু করেছি দলের জন্য। কিন্তু আমি আমার সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছি দলকে সেবা দিতে।’
২০০৭ সালে বিশ্বকাপের ঠিক আগে কেনিয়ার বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি অভিষেক রিয়াদের। এরপর থেকে বাংলাদেশের হয়ে ১৩৯টি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলেছেন তিনি। যা আবার চতুর্থ সর্বোচ্চ আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলার রেকর্ড। ব্যাট হাতে করেন ২৩৯৫ রান। ৮ ফিফটির সঙ্গে ২৩.৪৮ গড় ও প্রায় ১১৮ স্ট্রাইকরেট। বল হাতে নিয়েছেন ৪০ উইকেট।